২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ভয়ডরহীন ইংল্যান্ড কি এবার একটু হিসাবী

ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকসছবি: রয়টার্স

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘টেলিগ্রাফ’ সোজাসাপটাই লিখেছে, ‘দিস ইজ বেন স্টোকস মোস্ট আন–বাজবল ডিসিশন।’

যদি ভেবে থাকেন ইংল্যান্ডের ক্রিকেটে বর্ণবাদ ও বৈষম্যের অভিযোগ নিয়ে আইসিইসি যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, বেন স্টোকস তার পরিপ্রেক্ষিতে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাহলে ভুল হবে। প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু তো মাঠের বাইরের ব্যাপার, কিন্তু মাঠে তো ক্রিকেটই খেলতে হবে। আর ইংল্যান্ডের জন্য সেটাই লর্ডসে শুরু হচ্ছে আজ থেকে। অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টে আজ অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হচ্ছে স্টোকসের ইংল্যান্ড।

আরও পড়ুন

প্রথম টেস্টের ফল সবারই জানা। ২ উইকেটে জিতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। এজবাস্টনে অনুষ্ঠিত সেই টেস্টে প্রথম দিনেই ইনিংস ঘোষণা করে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন স্টোকস। পরে হারের কারণে সেই সমালোচনার ধারও বেড়েছিল। কিন্তু স্টোকস ও ইংল্যান্ডের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের তাতে থোড়াই কেয়ার। আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, ভয়ডরহীন ‘বাজবল’ ক্রিকেট থেকে তাঁরা  সরে আসবেন না। অর্থাৎ লর্ডসেও ‘বাজবল’ খেলবে ইংল্যান্ড। তাহলে ‘আন–বাজবল’ এর প্রসঙ্গ উঠছে কেন?

মঈন আলীর জায়গায় পেসার জশ টাংকে দলে নিয়েছে ইংল্যান্ড
ছবি: রয়টার্স

আগে বাজবল এর ব্যাপারটি স্মরণ করিয়ে দেওয়া যাক। ভয়ডরহীন ও আক্রমণাত্মক ক্রিকেট, যা টেস্টের ফল বের করতে সহায়ক। এজবাস্টন টেস্টের উইকেট পুরোপুরি পেসবান্ধব ছিল না, ইংল্যান্ড দলে স্পিনার মঈন আলীও ছিলেন। কিন্তু এজবাস্টনে হারের পর লর্ডসে দ্বিতীয় টেস্টে বিশেষজ্ঞ স্পিনার না রেখে পুরোপুরি পেস নির্ভর বোলিং আক্রমণ সাজিয়েছে ইংল্যান্ড। টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, এজবাস্টনের তুলনায় লর্ডসের উইকেটের ঘাস আরও তাজা ও সবুজাভ। এজবাস্টনের উইকেট দেখে জেমস অ্যান্ডারসন যেমন হাহুতাশ করেছিলেন, লর্ডসের ২২ গজ দেখে তাঁর হয়তো জিভে জল চলে আসতে পারে।

সে যা–ই হোক, ইংল্যান্ডের এই কৌশল দেখে একটা কথা কিন্তু উঠছে—যে ইংল্যান্ড বাজবল বাজবল করে অস্থির, সেই দলটাই কি না এক টেস্টে হেরেই নিজেদের চিরায়ত ‘হোম অ্যাডভান্টেজ’ কৌশলে ফিরে গেল! এটা কি হারের ভয় থেকে?

আরও পড়ুন

সিরিজের নাম যেহেতু অ্যাশেজ, আর তা হারলে মুন্ডুপাত শুরু হবে—সেসব জানা ইংলিশ টিম ম্যানেজমেন্টের। আর তাই বেন স্টোকসের অধিনায়কত্বে ১৫ টেস্টের মধ্যে এই প্রথম কৌশল পাল্টে পুরোপুরি পেস অ্যাটাকনির্ভর বোলিং আক্রমণ নিয়ে মাঠে নামবে ইংল্যান্ড। ২০১৩ ও ২০১৫ অ্যাশেজে এভাবে ঘরের মাঠের সুবিধা ব্যবহার করেই অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে ইংল্যান্ড।

এখন যেহেতু ১–০ ব্যবধানে সিরিজে পিছিয়ে, তাই সময়টা এখন সাহস দেখিয়ে ভবিষ্যৎ গড়ার নয়, বরং ফল বের করে সিরিজে ফিরতে হবে—পরিস্থিতিটা ইংল্যান্ড ভালোভাবে বুঝতে পেরেছে বলেই হয়তো বাজবল থেকে পুরোপুরি সরে না এসে কিছুটা হিসেবি স্টোকসরা। আর তাতেই কথাটা উঠেছে স্টোকস কিংবা ইংলিশ টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তটা বাজবলসুলভ হয়নি। তাতে স্টোকসের বয়েই গেছে। সংবাদকর্মীদের বলেছেন, ‘২–০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়তে চাই না।’

এজবাস্টন টেস্টে রান পাননি স্টিভেন স্মিথ। লর্ডসে রান পাবেন তো?
ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার মাথাব্যথা স্টিভেন স্মিথ ও মারনাস লাবুশেনকে নিয়ে। এজবাস্টনে অস্ট্রেলিয়ার দুই ইনিংস মিলিয়ে মোট ৩৫ রান করতে পেরেছেন টেস্ট ব্যাটসম্যানদের র‌্যাঙ্কিংয়ে তৃতীয় লাবুশেন ও ষষ্ঠ স্মিথ। লর্ডসে স্মিথের সর্বশেষ ম্যাচের স্মৃতিও তেমন সুখকর নয়। ২০১৯ অ্যাশেজে লর্ডসে জফরা আর্চারের বাউন্সারে ভূপাতিত হয়েছিলেন স্মিথ। তাঁর ‘কনকাশন বদলি’ হিসেবে নেমে ৫৯ রান করেছিলেন লাবুশেন। তবে এই দুই ব্যাটসম্যানের ওপর আস্থা আছে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের। কাল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘অতীত ইতিহাস বলে স্মিথ ও লাবুশেন খুব কম সময়ই এমন ব্যাটিং করেছে। আমি তাদের কাছে বড় একটি সপ্তাহ প্রত্যাশা করছি।’

আরও পড়ুন

ইংল্যান্ডের মতো অস্ট্রেলিয়া আগেভাগেই একাদশ ঘোষণা করেনি। তবে কামিন্স জানিয়েছেন, বাঁহাতি পেসার মিচেল স্টার্ককে দলে রাখা হয়েছে। আজ উইকেট দেখে দল নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

তবে লর্ডসের উইকেট যেমনই হোক, অফ স্পিনার নাথান লায়নকে নিয়েই নামবে অস্ট্রেলিয়া। লর্ডস টেস্ট দিয়ে প্রথম বিশেষজ্ঞ বোলার হিসেবে টানা ১০০ টেস্ট খেলার কীর্তির সামনে দাঁড়িয়ে লায়ন। আরও একটি মাইলফলক তাঁকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে—আর ৫ উইকেট পেলেই টেস্টে ৫০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলবেন লায়ন।