সিপিএলে প্রথম লাল কার্ড দেখলেন নারাইন, পোলার্ড বললেন ‘হাস্যকর’
ধারাভাষ্যে ইয়ান বিশপই বর্ণনা করলেন ঘটনার ‘মাহাত্ম্য’টা। আম্পায়ার জাহিদ বাসারাথের পকেট থেকে বের হলো লাল কার্ড। সেটি দেখে মাঠ থেকে বেরিয়ে যেতে হলো সুনীল নারাইনকে। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) স্লো ওভাররেটের শাস্তির কারণে প্রথম লাল কার্ড দেখা খেলোয়াড় হলেন নারাইন। অবশ্য এ ঘটনা মোটেও ভালোভাবে নিতে পারেননি নারাইনের দল ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড। এটিকে ম্যাচ শেষে তিনি বলেছেন ‘হাস্যকর’।
আজ ভোরে সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস প্যাট্রিয়টসের বিপক্ষ ম্যাচে লাল কার্ড দেখেন নারাইন। সিপিএলে এ মৌসুম থেকে চালু হওয়া নিয়ম অনুযায়ী, স্লো ওভাররেটের কারণে মাঠেই শাস্তি দেওয়া হবে প্রচলিত নিয়মের বাইরেও। এ নিয়ম অনুযায়ী, ইনিংসের ১৮তম ওভার শুরুর সময় কোনো দল পিছিয়ে থাকলে বাড়তি একজন খেলোয়াড়কে ৩০ গজের বৃত্তের ভেতরে ঢুকতে হবে, অর্থাৎ কমপক্ষে ৫ জনকে ভেতরে থাকতেই হবে।
১৯তম ওভার শেষেও যদি ওভাররেটে কোনো দল পিছিয়ে থাকে, তাহলে বাড়তি দুজন—মানে মোট ৬ জনকে আনতে হবে ৩০ গজের বৃত্তের ভেতর। আর শেষ ওভারে গিয়েও যদি কোনো দল পিছিয়েই থাকে, তাহলে অধিনায়কের নির্বাচিত একজন খেলোয়াড়কে মাঠ থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। বৃত্তের ভেতর ৬ জনকে থাকতে হবে, মানে বৃত্তের বাইরে পাওয়ার প্লের মতো মাত্র দুজন ফিল্ডার থাকতে পারবেন। ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স আজ এ শাস্তিই পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে ততক্ষণে ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেওয়া নারাইনকে নির্বাচন করেন অধিনায়ক পোলার্ড, এ কারণে বেরিয়ে যেতে হয় তাঁকে।
সেটির চড়া মাশুলও সে সময় গুনতে হয়েছে তাদের। ডোয়াইন ব্রাভোর করা শেষ ওভারে সেন্ট নেভিস তোলে ১৮ রান। অবশ্য তাদের দেওয়া ১৭৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ত্রিনবাগো ১৭ বল বাকি থাকতেই পেরিয়ে যায়। নিকোলাস পুরানের ৩২ বলে ৬১ রানের সঙ্গে পোলার্ডের ১৬ বলে ৩৭ ও আন্দ্রে রাসেলের ৮ বলে ২৩ রানের ঝোড়ো ইনিংসে বড় লক্ষ্যকে পাত্তাই দেয়নি নাইট রাইডার্স।
তবে ম্যাচ শেষে ঠিকই স্লো ওভাররেটের এমন শাস্তির নিয়মের সমালোচনা করেছেন পোলার্ড, ‘সত্যি বলতে কি, সবাই যে কঠোর পরিশ্রম করে, তা এতে মিলিয়ে যায়। আমরা দাবার ঘুঁটির মতো, আমাদের যা বলা হবে, তা–ই করব। আমরা যতটা দ্রুত পারি খেলব। তবে আপনাকে যদি এমন টুর্নামেন্টে ৩০ থেকে ৪৫ সেকেন্ডের জন্য শাস্তি দেওয়া হয়, তাহলে সেটি হাস্যকর হয়ে যায়।’
এমন শাস্তির নিয়ম চালু করার পেছনের কারণে হিসেবে সিপিএলের টুর্নামেন্ট পরিচালক মাইকেল হল বলেছিলেন, ‘আমরা হতাশ, আমাদের টি-টোয়েন্টি খেলাগুলোও প্রতিবছর দীর্ঘতর হয়ে যাচ্ছে। এই ধারা বন্ধ করতে আমরা যা করার, তা করতে চাই। খেলাটা চলমান রাখার দায়িত্ব ক্রিকেট–সংশ্লিষ্ট সবার। আমরা টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ফ্র্যাঞ্চাইজি ও ম্যাচ অফিশিয়াল সবাইকে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত করেছি। আশা করছি, খেলায় শাস্তির ব্যবহার করতে হবে না।’
সেটি অবশ্য করতে হলো ঠিকই। এমনিতে টি-টোয়েন্টি ইনিংসে ৮৫ মিনিটের মধ্যে শেষ করার নিয়ম। সে অনুযায়ী, ১৭তম ওভার শেষ করতে হয় ৭২ মিনিট ১৫ সেকেন্ড, ১৮তম ওভার ৭৬ মিনিট ৩০ সেকেন্ড ও ১৯তম ওভার ৮০ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের মধ্যে।
সিপিএলের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘ওভাররেট টেলিভিশন আম্পায়ার পর্যবেক্ষণ করবেন এবং প্রতি ওভার শেষে অনফিল্ড আম্পায়ারের মাধ্যমে অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলবেন। খেলোয়াড়দের চোট, ডিআরএস এবং প্রয়োজনে ব্যাটসম্যানদের কিছুটা সময় দরকার হলে তখন নিয়মটা একটু শিথিল হবে।’
অবশ্য স্লো ওভাররেটের জন্য ফিল্ডিং দলের পাশাপাশি সিপিএলে ব্যাটিং দলেরও শাস্তি রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ করা হলে আম্পায়াররা এক দফা সতর্ক করবেন। এরপর প্রতি ঘটনায় ৫ রান পেনাল্টির নিয়ম রাখা হয়েছে।