‘এসব নিউজই তো বেশি চলে’—সাকিব-তামিমকে নিয়ে ইংল্যান্ডের রব কি
খেলাটা ছেড়েছেন অনেক আগেই। ২০১৫ সালে সর্বশেষ খেলেছেন পেশাদার ক্রিকেট। এরপর রব কি পরিচিতি পেয়েছেন ধারাভাষ্যকার হিসেবে। ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত ধারাভাষ্যকার হিসেবে ভালোই করছিলেন। ইংল্যান্ডের স্কাই স্পোর্টস চ্যানেলে নাসের হুসেইন, মাইকেল আথারটনের সঙ্গে কি’র জুটি ছিল বেশ জনপ্রিয়। পাশাপাশি পত্রিকায়ও লিখতেন।
আজ দুপুরে সেই কি’র সঙ্গে দেখা মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠের সামনে। গায়ে ইংল্যান্ড দলের অনুশীলন জার্সি। ২০২২ সালের আগস্টে ধারাভাষ্য ছেড়ে ইংল্যান্ড দলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে যোগ দিয়েছেন। সেই দায়িত্বের অংশ হিসেবেই এবার ইংল্যান্ড দলের সঙ্গে বাংলাদেশে আসা ২১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা এই সাবেক ক্রিকেটারের।
মিরপুর স্টেডিয়ামের পথঘাট তাঁর ভালোই চেনা। ইংল্যান্ড দলের সর্বশেষ বাংলাদেশ সফরে ধারাভাষ্যকার হিসেবে এসেছিলেন। একাডেমি মাঠ, মিডিয়া সেন্টার, ড্রেসিংরুম—কোন দিকে কী আছে, সবই আগে একবার দেখেছেন।
কথায় কথায় সেটি একবার মনে করিয়ে দিলেন তিনি নিজেই। ফিরে গেলেন নিজেদের অতীত পেশার অভ্যাসে। ধারাভাষ্যকার ও সাংবাদিক হিসেবে খোঁজখবর রাখার একটা ব্যাপার তো থাকেই। সে জন্যই হয়তো স্থানীয় সাংবাদিকদের পেয়ে প্রতিপক্ষ দল বাংলাদেশের হাঁড়ির খবর বের করতে চাইলেন, ‘বাংলাদেশের কী খবর?’
উত্তরে সাকিব-তামিমের কথা না বলার বিষয়টি জানার পর একটু বললেন, ‘এসব নিউজই তো বেশি চলে। আলোচনার পর আলোচনা…সেটি আর থামেই না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তো আছেই। এখন নিশ্চয়ই কাভার ড্রাইভ ভুলে এই আলোচনাই হচ্ছে।’ তিনি অবশ্য এই আলোচনাটা বেশি দূর এগোতে দিলেন না।
ফিরিয়ে আনলেন আগামীকাল শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে, ‘কাল উইকেট কেমন হবে?’ এই প্রশ্নের উত্তরটা কি’র প্রত্যাশিতই ছিল। মিরপুরে স্পিনারদের উল্লাসনৃত্যই তো প্রত্যাশিত। সেটা কি’র ভালোই জানা। এই চ্যালেঞ্জে পরীক্ষা দিতেই যে ইংল্যান্ড দলের বাংলাদেশে আসা, সেটি তো দলটির অধিনায়ক জস বাটলারও সেদিন সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন।
আজ কি-ও সেটাই বললেন, ‘এটাই হওয়া উচিত। না হলে এখানে কী লাভ? ইংল্যান্ডে খেলাই তো ভালো, যেখানে সিম আর সুইং হবে।’ এরপর উইকেট নিয়ে নিজের মতামতটা যোগ করলেন, ‘স্পিন তো হবেই শুনেছি। মন্থরও হওয়ার কথা। নিচুও হতে পারে।’ কথাটা শেষ হতে না হতেই হাত দিয়ে দেখিয়ে দিলেন বলের প্রত্যাশিত গতিপথ। সেটা যে ব্যাটসম্যানের হাঁটুর নিচে, তা বুঝতে কষ্ট হলো না।
নিজের নতুন দায়িত্ব নিয়ে কথা বললেন, ‘চ্যালেঞ্জ নেই। উল্টো আনন্দের বলতে হয়। আমি সময়টা উপভোগই করছি।’ ইংল্যান্ডের সাদা বলের ক্রিকেটটা পাল্টে গেছে কি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই। দায়িত্ব নেওয়ার আগে নিজের বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘সাদা বলের ক্রিকেটে তেমন কিছু করার নেই। দলটা দারুণ করছে। এখন সেটা ধরে রাখাই কাজ।’
জস বাটলারের দল সেটি করেছেও। কি দায়িত্ব নেওয়ার পর ইংল্যান্ড জিতেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তবে ইংলিশ ক্রিকেটে সমস্যার নাম ছিল টেস্ট ক্রিকেট। সেটি বদলে যায় কি’র সময়ে। জো রুটকে সরিয়ে বেন স্টোকসকে টেস্ট অধিনায়ক করেন। কোচ হিসেবে নিয়োগ দেন ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে। আর সেই দুজন মিলে টেস্ট ক্রিকেটের ঐতিহাসিক ধারণাটাই পাল্টে দিয়েছেন!
সাদা বলের ক্রিকেটে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের শেষ কথা যদি হয় ইংল্যান্ড, টেস্ট ক্রিকেটেও এখন তা-ই। এই বদলের মাস্টারমাইন্ড যিনি, তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি হাসলেন। বললেন, ‘দারুণ উপভোগ্য, তা–ই না?’ কি’র এই প্রশ্নের উত্তরটা ক্রিকেটভক্তদের সবারই জানা।