তামিমদের খুলনাকে বিদায় করে সাকিবের বরিশালের আরেকটি জয়
ফরচুন বরিশালের প্লে-অফ নিশ্চিত হয়েছে আগেই, এখন শীর্ষ দুইয়ে থেকে লিগ শেষ করার লড়াই তাদের। খুলনা টাইগার্সের জন্য এ ম্যাচটি ছিল প্লে-অফের দৌড়ে টিকে থাকার। ছুটির দিনে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের প্রায় ভরা গ্যালারির সামনে সাকিব আল হাসানদের বরিশালের সঙ্গে পেরে উঠল না তামিম ইকবালদের খুলনা।
১৯৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে ইয়াসির আলীর ৩৮ বলে ৬০ রানের ইনিংসের পরও খুলনা থেমেছে ১৫৭ রানেই। ৩৭ রানের হারে এ মৌসুমে প্রথম দল হিসেবে প্লে-অফের লড়াই থেকে ছিটকে পড়ল খুলনা। ১০ ম্যাচ থেকে মাত্র ৪ পয়েন্ট পেয়েছে তারা। খুলনার ম্যাচ বাকি আছে আর দুটি। অন্যদিকে ১০ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট হলো বরিশালের। সিলেট-পর্বের শেষ ম্যাচে হারার পর আবার জয়ে ফিরল সাকিবের দল।
রান তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারে মোহাম্মদ ওয়াসিমকে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে মিস করে বোল্ড হন তামিম ইকবাল। অ্যান্ড্রু বলবার্নি ও শাই হোপের জুটিতে সে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিল খুলনা। কিন্তু ৭ রানের মধ্যে বলবার্নি, মাহমুদুল হাসান ও হোপকে হারিয়ে আবার চাপে পড়ে তারা। সাকিবের বলে স্টাম্পিংয়ের সুযোগ মিস করে হোপকে জীবন দিয়েছিলেন এনামুল হক, তবে খুলনা অধিনায়ক সে সুযোগ ঠিক কাজে লাগাতে পারেননি।
খুলনার ব্যাটিং লাইনআপ এমনিতেও তেমন লম্বা নয়, ছয়ে আসা নাহিদুল ইসলামকে নিয়ে এরপর চেষ্টা করেন ইয়াসির। ১৭তম ওভারে ওয়াসিমকে পুল করে ছক্কা মেরে ফিফটিও পূর্ণ করেন ৩৪ বলে, তবে ততক্ষণে প্রয়োজনীয় রান রেট খুলনার নাগালের বাইরে চলে গেছে অনেকটাই। ১৮তম ওভারে করিম জানাতকে ফুল লেংথ থেকে তুলে মারতে গিয়ে ইয়াসির লং অফে ধরা পড়েন। খুলনাও বেশি দূর এগোতে পারেনি আর। করিম শেষ পর্যন্ত নেন ৪টি উইকেট নেন, এর ২টিই শেষ ওভারে।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বরিশালের হয়ে শুরুটা ঝোড়োই করেন এনামুল হক ও ফজলে রাব্বী। প্রথম ৩ ওভারে ৩টি চার ও ২ ছক্কায় দুজন যোগ করেন ৩০ রান। চতুর্থ ওভারে পল ফন ম্যাকেরিনকে তুলে মারতে গিয়ে শফিকুল ইসলামের দারুণ ক্যাচে পরিণত হয়ে ফেরেন এনামুল। রাব্বি অবশ্য থাকেন আরও কিছুক্ষণ। হাসান মুরাদের আঁটসাঁট বোলিংয়ের পর রাব্বির উইকেট পায় খুলনা। আগে দুই ম্যাচ খেললেও ব্যাটিংয়ের সুযোগ না পাওয়া রাব্বি এবার ওপেনিংয়ে এসে করেন ২৯ বলে ৩৯ রান।
প্রথম ১০ ওভারে ৮৪ রান তোলা বরিশাল পায় ভালো ভিত, দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সাকিব আল হাসানও চড়াও হন নামার পর থেকেই। নাহিদুল ইসলামকে ছক্কা মেরে শুরু করেছিলেন, ১৮তম ওভারে থামার আগে ১টি চার ও ৪ ছক্কায় খেলেন ২১ বলে ৩৬ রানের ইনিংস।
এ ইনিংস খেলার পথে বিপিএলের এক মৌসুমে তৃতীয়বারের মতো ৩০০ রান ছুঁয়ে ফেলেন সাকিব। ইব্রাহিম জাদরানের সঙ্গে ১৮ বলে ২৪ রানের পর ইফতিখার আহমেদের সঙ্গে সাকিবের জুটিতে ওঠে ৩৬ বলে ৫২ রান। মার্ক ডেয়ালের করা ১৬তম ওভারেই দুজন মিলে তোলেন ২২ রান।
বরিশালের ব্যাটিং ইনিংসের পরের গল্পটা ইফতিখারের। মৌসুমের চতুর্থ ফিফটি-পেরোনো ইনিংস খেলেছেন এ পাকিস্তানি, এবার সেটি পূর্ণ করেন ৩০ বলে। ৩টি করে চার ও ছক্কায় ৩১ বলে তাঁর রান অপরাজিত ৫১, করিম জানাতের সঙ্গে তাঁর জুটিতে মাত্র ১৪ বলে ওঠে ৪০ রান। বরিশাল শেষ ৫ ওভারে যোগ করে ৭৯ রান! ২১ বলে ৩০ রান আর ২৫ রানে ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার অবশ্য জিতেছেন সাকিব।