অধিনায়কত্ব ফিরে পাওয়া বাবরের সামনে যেসব রেকর্ডের হাতছানি

বাবর আজম আবারও পাকিস্তানের অধিনায়কত্ব ফিরে পেয়েছেনএএফপি

মহসিন নাকভি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান হওয়ার পর দেশটির ক্রিকেটকে নতুন করে সাজাতে শুরু করেছেন। এরই মধ্যে দলে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছেন নাকভি। খুব সম্ভবত সবচেয়ে বড় চমকটা তিনি দিয়েছেন নেতৃত্বে বদল এনে।

মাত্র সাড়ে ৪ মাসের ব্যবধানে পাকিস্তানের অধিনায়কত্ব ফিরে পেয়েছেন বাবর আজম। সাদা বলের ক্রিকেটে পাকিস্তানকে তিনি আবারও নেতৃত্ব দেবেন। সব ঠিক থাকলে আগামীকাল ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শুরু টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবেন বাবর। অধিনায়ক বাবর এই সিরিজেই গড়তে পারেন দুটি রেকর্ড, দুর্দান্ত ব্যাটিং করলে হতে পারে তিনটি রেকর্ডও। এর একটিতে তিনি ছাড়িয়ে যাবেন বিরাট কোহলিকে।

রেকর্ড তিনটি হলো—আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি জয়, অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি রান এবং ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান।

আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি জয়

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এই মুহূর্তে অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জিতেছেন উগান্ডার ব্রায়ান মাসাবা। তাঁর নেতৃত্বে ৫৬ ম্যাচের ৪৪টিতেই জিতেছে পূর্ব আফ্রিকার দেশটি।

১৯৯৮ সালে আইসিসির সহযোগী সদস্য হওয়া উগান্ডা টি-টোয়েন্টি মর্যাদা পেয়েছে ২০১৮ সালে। তখন থেকে এ পর্যন্ত দলটি খেলেছে ৯১ ম্যাচ, এর মধ্যে ৫৬টিতে অধিনায়কত্ব করেছেন মাসাবা। ৩২ বছর বয়সী এই বোলারের নেতৃত্বেই প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে উগান্ডা। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে হারিয়ে দিয়েছে জিম্বাবুয়েকে, যা ছিল কোনো টেস্ট খেলুড়ে বা আইসিসি পূর্ণ সদস্যভুক্ত দলের বিপক্ষে তাদের প্রথম জয়।

আরও পড়ুন

অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জেতায় উগান্ডার মাসাবার পর যৌথভাবে দুইয়ে আছেন আফগানিস্তানের আগসর আফগান, পাকিস্তানের বাবর আজম ও ইংল্যান্ডের এউইন মরগান। প্রত্যেকেই অধিনায়কের ভূমিকায় ৪২টি করে ম্যাচ জিতেছেন। আফগান ও মরগান অনেক আগেই অবসরে গেছেন। তাই শিগগিরই মাসাবার রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনা আছে শুধু বাবরের।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি সিরিজটা ৫ ম্যাচের। এর ৩টিতে জিতলেই বাবর হয়ে যাবেন সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জেতা টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক, সঙ্গে পাকিস্তানও সিরিজ জিতে যাবে।

জিমে ঘাম ঝরাচ্ছেন বাবর আজম
এক্স

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেই বাবর হয়ে যেতে পারেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি রান করা ব্যাটসম্যান। ২২৩৬ রান নিয়ে এ তালিকায় এখন শীর্ষে আছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। ২১৯৫ রান নিয়ে বাবর আছেন দুইয়ে। তিনে থাকা কেইন উইলিয়ামসনের রান ২১২৫।

আরও পড়ুন

কিন্তু গুজরাট টাইটানসের হয়ে আইপিএল নিয়ে ব্যস্ত থাকায় উইলিয়ামসনকে পাকিস্তান সফরের দলে রাখেনি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট (এনজেডসি)। তাই বাবরের আপাতত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। মাইকেল ব্রেসওয়েলের নেতৃত্বে পাকিস্তানে যাওয়া কিউইদের দ্বিতীয় সারির দলের বিপক্ষে ৫ ম্যাচে ৪২ রান করতে পারলেই চূড়ায় পৌঁছে যাবেন বাবর।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি রান

এমনকি এই সিরিজেই বাবর ছাড়িয়ে যেতে পারেন কোহলিকে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৪০৩৭ রান নিয়ে কোহলি আছেন শীর্ষে। ৩৯৭৪ রান নিয়ে দুইয়ে আছেন ভারতের অধিনায়ক ও কোহলির সতীর্থ রোহিত শর্মা। তিনে থাকা বাবরের রান ৩৬৯৮।

আরও পড়ুন

রোহিতকে ছাড়িয়ে যেতে বাবরের দরকার ২৭৭ আর কোহলিকে টপকে চূড়ায় উঠতে দরকার ৩৪০। কাজটা বেশ কঠিন মনে হলেও নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় সারির বোলিং লাইন আপের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ৫ ম্যাচের সিরিজে ৩৪০ রান করা বাবরের জন্য অসম্ভব কিছু নয়। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে বাবরের ব্যাটিং গড় ৪১.৫৫। কোহলিকে টপকাতে হলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৮.০০ গড়ে রান করতে হবে তাঁকে।

বিশ্বকাপের আগেই কোহলিকে টপকে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক হতে পারেন বাবর
এএফপি

এই সিরিজে না হলেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেই কোহলিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার জোর সম্ভাবনা আছে বাবরের। আইপিএলে ডুবে থাকা ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে কোনো ম্যাচ নেই। বিপরীতে বিশ্বকাপের আগে পাকিস্তান খেলবে ১২টি ম্যাচ (নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫টি, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩টি, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪টি)।

১২ ম্যাচে ২৮.৩৩ গড়ে রান করলেই ৩৪০ রান হয়ে যাবে বাবরের। সেটা হলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শীর্ষ রান সংগ্রাহক হয়ে বিশ্বকাপ খেলতে যেতে পারবেন পাকিস্তান অধিনায়ক।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রান