অনূর্ধ্ব–১৯ নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
অস্ট্রেলিয়াকেও বাংলাদেশের গ্রুপে পড়ার ভয় দেখাতে চায় মেয়েরা
সাহস নিয়েই কথাটা বলেছেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৯ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সুমাইয়া আক্তার; কিন্তু সেই সাহসের ভিতে এতটুকু অবাস্তবতা নেই। অনূর্ধ্ব–১৯ নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে আগামীকাল দেশ ছাড়বে বাংলাদেশের মেয়েরা। আজ ফটোসেশনে সুমাইয়ার কথা শুনে বুকের ছাতি ফুলে উঠতে পারে। অস্ট্রেলিয়া হোক আর যে দলই হোক, সুমাইয়ারা নিজেদের খেলাটা খেললে নাকি অন্য দলগুলো বাংলাদেশের গ্রুপে পড়ায় ভয় পাবে।
অস্ট্রেলিয়ার কথা আসছে কারণ, ১৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া অনূর্ধ্ব–১৯ নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের গ্রুপেই পড়েছে তারা। মোট চারটি গ্রুপের মধ্যে ‘ডি’ গ্রুপে বাংলাদেশের বাকি তিন প্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়া, নেপাল ও স্কটল্যান্ড। স্বাভাবিকভাবে এই গ্রুপে অস্ট্রেলিয়াকেই শক্তিতে এগিয়ে রাখবেন সবাই। তবে মেয়েদের এই অনূর্ধ্ব–১৯ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নিকট অতীত বলছে ভিন্ন কথা।
অস্ট্রেলিয়া হোক বা যে–ই হোক, আমরা আমাদের খেলাটা খেললে...ওরাও অন্তত ভয় পাবে যে আমরা বাংলাদেশ দলের গ্রুপে পড়ছি।বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৯ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সুমাইয়া আক্তার
অনূর্ধ্ব–১৯ নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এর আগে যেহেতু একবারই অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাই ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত সে আসরটাই নিকট অতীত। সেবার ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশ দলের তিন প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা ও যুক্তরাষ্ট্র। দিলারা, স্বর্ণা ও সুমাইয়াদের সেই অনূর্ধ্ব–১৯ দল নিজেদের তিন ম্যাচই জিতে হয়েছিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। বেনোনিতে অস্ট্রেলিয়াকে ৭ উইকেটে হারানোর পর ১০ উইকেটে হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কাকে। যুক্তরাষ্ট্রের মেয়েদের বিপক্ষে নিজেদের শেষ ম্যাচটা ৫ উইকেটে জিতে অস্ট্রেলিয়াকে দুইয়ে ঠেলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সুপার সিক্সে উঠেছিল দিশা বিশ্বাসের দল।
সুপার সিক্সে গ্রুপ ওয়ানে ছয় দলের মধ্যে তৃতীয় হয়ে রান রেটে বাদ পড়েছিল বাংলাদেশ। প্রথম ও দ্বিতীয় হিসেবে সেমিফাইনালে উঠেছিল যথাক্রমে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। যদিও ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার সমান ৬ পয়েন্টই ছিল বাংলাদেশের। জয়ও চার ম্যাচে তিনটি করে—এর মধ্যে সুপার সিক্সে শুধু আরব আমিরাতের বিপক্ষে জিতেছিল বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হেরেছিল। গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জেতায় ২ পয়েন্ট করে মোট ৪ পয়েন্ট নিয়ে সুপার সিক্সে উঠেছিলেন দিশা–সুমাইয়ারা। পচেফস্ট্রুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনাল ৮ উইকেটে জিতেছিল ভারত।
গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের তিন ম্যাচ:
অর্থাৎ গতবারের সেই আসরের সাফল্যই এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মেয়েদের জন্য আশা ও সাহসের আলোকবর্তিকা হয়ে ধরা দিয়েছে। এবার অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া সুমাইয়া শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ফটোসেশন অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়া হোক বা যে–ই হোক, আমরা আমাদের খেলাটা খেললে...ওরাও অন্তত ভয় পাবে যে আমরা বাংলাদেশ দলের গ্রুপে পড়ছি।’
মালয়েশিয়ায় গত মাসে অনূর্ধ্ব–১৯ এশিয়া কাপে খেলার অভিজ্ঞতাও কাজে লাগাতে চান সুমাইয়া। ‘বি’ গ্রুপ থেকে শ্রীলঙ্কা ও মালয়েশিয়ার বিপক্ষে দুই ম্যাচই জিতে সুপার ফোরে চার ম্যাচের তিনটিতে জিতে ফাইনালে উঠেছিল মেয়েদের এ দলটি। সুপার ফোরে হেরেছিল শুধু ভারতের বিপক্ষে এবং ফাইনালে হারও ভারতের বিপক্ষেই। মালয়েশিয়ার কন্ডিশনটা জানা বলেই এবারের বিশ্বকাপে সুবিধাই দেখছেন সুমাইয়া, ‘যেহেতু আমরা মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলাম তো ওই দিক থেকে সেটা আমাদের একটু সুবিধা দেবে।’
কোচ সারোয়ার ইমরানও জানালেন আশার কথা, ‘আমাদের ফিল্ডিং, বোলিং টপ গ্রেডের ধরতে পারেন। ব্যাটিংটা ভালো, কিন্তু অভিজ্ঞতা কম। টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা কম, সে হিসেবে ব্যাটিংটাকে একটু পিছিয়ে রাখছি। তারপরও আমরা শেষ দুই মাস অনুশীলন করে একটা অবস্থায় দলকে নিতে পেরেছি। আমি আশাবাদী, আমার দল ভালো করবে।’
গতবারের মতো এবারও চারটি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে ১৬টি দল। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ১৮ জানুয়ারি নেপালের বিপক্ষে। প্রতিটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ তিনটি করে দল উঠবে সুপার সিক্সে। ১২ দলের সুপার সিক্স পর্বে দুটি ভাগে ভাগ করা হবে ছয়টি করে দল নিয়ে। সুপার সিক্সের দুটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল উঠবে সেমিফাইনালে। ফাইনাল ২ ফেব্রুয়ারি।