চার বছর আগে শুধু টেনিস বলে খেলা সেই প্রকৌশলীই মুম্বাইয়ের নায়ক
৩.৩-০-৫-৫—অবিশ্বাস্য? নয়তো কি! গতকাল আইপিএলের এলিমিনেটরে আকাশ মাধওয়ালের এমন এক স্পেলেই লক্ষ্ণৌর বিপক্ষে ৮১ রানের জয় পেয়েছে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না খেলা বোলারদের মধ্যে এটিই আইপিএলের সেরা বোলিং।
প্লে–অফ ম্যাচে ৫ উইকেট শিকারের প্রথম কীর্তিও এটি। আইপিএলে সব আসর মিলিয়ে ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিংয়ের কীর্তিটাও এখন আকাশের।
এর আগে আইপিএলে এই রেকর্ডটি ছিল কিংবদন্তি অনিল কুম্বলের।
২০০৯ সালের আইপিএলে রাজস্থানের বিপক্ষে তিনিও ৫ রানে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। এই দুই ক্রিকেটারের মধ্যে মিল আছে আরও এক জায়গায়। দুজনেই প্রকৌশলী। তবে আকাশ পড়াশোনা করেছেন পুরকৌশলে আর কুম্বলে যন্ত্রকৌশলে।
মুম্বাইয়ের এই পেসার তো তাঁর ক্রিকেটজীবনেও কাজে লাগাচ্ছেন প্রকৌশলবিদ্যার শিক্ষা। অন্তত তাঁর কথা শুনলে তেমনটাই মনে হবে, ‘আমি অনুশীলন করে গিয়েছি আর সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। প্রকৌশলবিদ্যায় পড়েছি, সঙ্গে টেপ টেনিস ক্রিকেটটাও চালিয়ে গিয়েছি। ক্রিকেটেই ছিল আমার আগ্রহ। প্রকৌশলীদের দ্রুত শেখার একটা প্রবণতা থাকে।’ মজার ব্যাপার হলো ম্যাচ শেষে যাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে আকাশ এই কথা বলছেন, সেই হার্শা ভোগলেও একজন প্রকৌশলী।
২৯ বছর বয়সী আকাশের আইপিএল খেলার গল্পটাও দুর্দান্ত। আকাশ পড়াশোনা করে চাকরিও শুরু করেছিলেন। তবে ক্রিকেটের জন্য সেই চাকরিটা ছেড়ে দেন এই পেসার। মজার ব্যাপার হলো, ২০১৯ সালেও মুম্বাইয়ের এই পেসার খেলে বেড়িয়েছেন টেপ টেনিস ক্রিকেট। উত্তরাখন্ডের টেনিস বলের এই ক্রিকেটার আইপিএলে পা রাখেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর নেট বোলার হিসেবে। এরপর গত দুই মৌসুমে ছিলেন মুম্বাইয়ের নেট বোলার।
গত মৌসুমের শেষ দিকে যখন সূর্যকুমার যাদব চোটে পড়লেন, তখন তাঁর বদলে আকাশকেই মূল দলে অন্তর্ভুক্ত করে মুম্বাই। আর এবার নিলামে ২০ লাখ রুপিতে দলে নিয়ে তাঁকে মূল স্কোয়াডেই অন্তর্ভুক্ত করেছে রোহিত শর্মার দল। আইপিএল–যাত্রা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আকাশ বলেছেন, ‘২০১৯ সালে বেঙ্গালুরুর নেট বোলার ছিলাম। সেখানে সুযোগ পাইনি। এরপরও মুম্বাইয়ে আসি, এখানেই সুযোগটা পাই।’
সুযোগ পেয়েই মুম্বাইয়ের হয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করছেন আকাশ। ঠিক আগের ম্যাচটিতেই হায়দরাবাদের বিপক্ষে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। যে ম্যাচ জিতে সেরা চারে জায়গা করে নিয়েছে মুম্বাই। এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচ খেলে উইকেট নিয়েছেন ১৩টি।
কীভাবে ইয়র্কার করা শিখেছেন, সেই কথাও জানিয়েছেন আকাশ, ‘টেনিস বলে শুধু ইয়র্কারই শিখেছি, আর সেটাই আজ এখানে করেছি। কারণ, টেনিস বলে টিকে থাকার উপায় একটাই। একটু সামনে বা পেছনে থাকলেই তো বাউন্ডারি হয়ে যায়।’