রিশাদকে এখনই টেস্ট ক্রিকেটে দেখছেন না অধিনায়ক
হাই পারফরম্যান্স বিভাগের একটা দল অস্ট্রেলিয়ায় গেছে চার দিনের ম্যাচ খেলতে। চট্টগ্রামে চলছে ‘টাইগার্স’ ক্রিকেটারদের অনুশীলন। সবকিছুরই লক্ষ্য পাকিস্তান সফরের আসন্ন দুই টেস্টের সিরিজ।
আজ ঢাকায় একটি কুইজের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন কথা বলেছেন এই সফরের প্রস্তুতি আর পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে তাঁর দলের সম্ভাবনা নিয়ে।
টেস্টের প্রসঙ্গ ধরে এসেছে রিশাদ হোসেনের বিষয়ও। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চমকে দেওয়া সাদা বলের ক্রিকেটের ‘আবিষ্কার’ রিশাদ কি জায়গা করে নিতে পারবেন টেস্ট দলে?
সাদা বলের ক্রিকেটে রিশাদের লেগ স্পিন বাংলাদেশ দলের বোলিং আক্রমণে বহুল প্রত্যাশিত বৈচিত্র্য নিয়ে এলেও অধিনায়ক নাজমুল বলেছেন, টেস্টে এখনই রিশাদের সম্ভাবনা তিনি দেখেন না। রিশাদের টেস্ট দলে আসা বা না আসার ব্যাপারে নির্বাচকদের কাছে জানতে চাইলেই ভালো হবে মন্তব্য করেও নাজমুল শেষে বলেছেন, ‘আমার যতটুকু মনে হয়…আমার মনে হয় না এই মুহূর্তে ও লাল বলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।’
রিশাদের ভালো করায় টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদের ভূমিকাকে বড় করে দেখা হচ্ছে। মুশতাকের অবদান অস্বীকার করছেন না নাজমুলও। তবে একই সঙ্গে স্থানীয় কোচদেরও কৃতিত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক, ‘খুবই ভালো কাজ করেছেন মুশতাক। রিশাদসহ অন্য স্পিনাররাও ওনার সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পেরেছে। তবে আমি শুধু মুশতাক আহমেদকেই কৃতিত্ব দিতে চাই না। রিশাদ কিন্তু তারও আগে থেকে আমাদের স্থানীয় কোচদের কাছে কোচিং নিচ্ছিল।’
পাকিস্তানের সাবেক লেগ স্পিনার মুশতাক আহমেদ বিশ্বকাপ জিতেছেন, বিশ্বকাপ দলের কোচ ছিলেন, খেলোয়াড় হিসেবে অভিজ্ঞতাও অনেক বছরের। নাজমুলের ধারণা, মুশতাক রিশাদের সঙ্গে যতটা না টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন, তার চেয়ে এসব অভিজ্ঞতাই বিনিময় করেছেন বেশি। টেকনিক্যাল বিষয়ে স্থানীয় কোচদের সাহায্যই রিশাদকে বেশি সাহায্য করেছে বলে মনে করেন নাজমুল, ‘টেকনিক্যালি স্থানীয় কোচরা সাহায্য করেছেন। তাকে প্রেরণা জোগানো, তার ঘাটতিগুলো ধরিয়ে দেওয়া। কাজেই কৃতিত্বটা সবাইকেই দেওয়া উচিত।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে আসন্ন দুই টেস্টের সিরিজটা নাজমুলের দৃষ্টিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সিরিজ দিয়েই টেস্ট ক্রিকেটটা আবার ভালোভাবে শুরু করতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘সিরিজের আগে সবাই প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট সময় পাচ্ছে। আশা করি ভালোই হবে।’
অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়া ক্রিকেটারদের মধ্য থেকে যারা টেস্ট দলে সুযোগ পাবেন, তারা পাকিস্তান সিরিজের আগে প্রস্তুতির ভালো একটা সুযোগ পেলেন। আবার যারা দেশে আছেন, সফরের আগে চট্টগ্রামে তারাও দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন।
সব মিলিয়ে গত বেশ কয়েক মাস টি–টোয়েন্টির স্রোতে গা ভাসানোর পর টেস্টে ফেরার প্রস্তুতিটা ভালো করার সুযোগ দেখছেন অধিনায়ক, ‘সব পরিকল্পনাই করা আছে। প্র্যাকটিস ম্যাচ আছে এবং যাওয়ার আগে প্র্যাকটিস সেশনও থাকবে। এগুলো করে যতটা সম্ভব ভালো প্রস্তুতি নিয়ে যেতে চাই।’ সঙ্গে এও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘এখানে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় আসবেন, যাঁরা টি–টোয়েন্টিতে ছিলেন না। পাকিস্তান সিরিজের জন্য তাঁরা অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
সাম্প্রতিক অতীতে বাংলাদেশের ব্যাটিং মানেই ভেঙে পড়া তাসের ঘরের ছবি। অন্যদিকে পাকিস্তানের পেস বোলিং মানেই আগুনের ফুলকি। পাকিস্তানের মাটিতে গিয়ে তাদের বিপক্ষে টেস্ট খেলাটাকে চ্যালেঞ্জিং মনে হচ্ছে নাজমুলেরও। তবু ভালো কিছুর চেষ্টা তো করতেই হবে। সেই জায়গায় অধিনায়কের বড় ভরসা দলের অভিজ্ঞরা, ‘অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং হবে, তারা খুবই ভালো দল। তবে আমার মনে হয় এই ফরম্যাটে আমাদেরও বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছেন। মুশফিক ভাই, মুমিনুল ভাইসহ আরও বেশ কয়েকজন। আমরা যদি আমাদের অভিজ্ঞতাটা কাজে লাগিয়ে শক্তি অনুযায়ী খেলতে পারি, সিরিজটা অবশ্যই ভালো হবে।’