মেলবোর্ন টেস্ট: ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার সঙ্গে ‘মি: এক্সট্রা’ ৫২, চাপে পাকিস্তান
হতাশা...হতাশা এবং হতাশা!
পাকিস্তান দলের অস্ট্রেলিয়া সফরের গল্পটাই এমন। সেটা কখনো ব্যাটিং, কখনো বোলিংয়ে, আবার কখনো ফিল্ডিংয়ে। মেলবোর্ন টেস্টে প্রথম দিনে ভালো বোলিংয়ের পরও ফিল্ডারদের ভুলে মাত্র ৩ উইকেট নিতে পেরেছিল পাকিস্তান।
আজ দ্বিতীয় দিনে পাকিস্তানের বোলাররা আরও ভালো করলেন, ফিল্ডাররাও দারুণ ক্যাচ নিলেন। ৩ উইকেট ১৮৭ রানে দিন শুরু করা অস্ট্রেলিয়াও অলআউট ৩১৮ রানে।
কিন্তু পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা নিজেদের প্রথম ইনিংসে আজ ভালো করতে পারলেন না। ৫৫ ওভারে ৬ উইকেটে ১৯৪ রানে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে পাকিস্তান। ১২৪ রানে পিছিয়ে তৃতীয় দিনে ব্যাট করতে নামবে পাকিস্তান। ২৯ রানে ক্রিজে অপরাজিত মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ২ রানে অন্য প্রান্তে আছেন আমের জামাল।
ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি আরও একটা বিষয় পাকিস্তানি সমর্থকদের হতাশ করতে পারে। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ৩০৮ রানের ৫২ রানই এসেছে ‘মি. এক্সট্রা’, অর্থাৎ অতিরিক্ত থেকে।
মেলবোর্নের বোলিং–সহায়ক উইকেটে যা পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। এমসিজিতে টেস্টে কোনো দলের ইনিংসে অতিরিক্ত খাতে এটাই সর্বোচ্চ রান দেওয়ার নজির। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ রান মারনাস লাবুশেনের (৬৩), এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান এসেছে অতিরিক্ত থেকে।
বোলিং আর ফিল্ডিংয়ের পর ব্যাটিংয়েও ভালো শুরু পেয়েছিল পাকিস্তান। নাথান লায়নের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে দলীয় ৩৪ রানে ইমাম-উল-হক ফিরে গেলেও বড় বিপদ হয়নি। অধিনায়ক শান মাসুদ ও আরেক ওপেনার আবদুল্লাহ শফিকের ৯০ রানের জুটিতে ১ উইকেট ১২৪ রান তোলে পাকিস্তান। অনেকেই তখন পাকিস্তানের লিড পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলছিলেন। কিন্তু দিনের খেলা শেষে বোঝা যাচ্ছে, সেটি করা এখন পাকিস্তানের জন্য বেশ কঠিন।
পাকিস্তানকে আটকে রাখার কাজে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। শুরুটা করেছিলেন শফিককে (৬২) ফেরানোর মধ্যে দিয়ে। শফিক ভালো লেংথের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে কামিন্সের হাতে ক্যাচ দেন। এরপর পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক বাবর আজমকে দুর্দান্ত এক বলে বোল্ড করেন কামিন্স। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কের ব্যাক অব দ্য লেংথ ডেলিভারি ভেতরে ঢুকলে ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড হন বাবর (১)।
লায়নকে ওভার দ্য টপ খেলতে গিয়ে মিচেল মার্শের হাতে ক্যাচ দেন দুর্দান্ত খেলতে থাকা মাসুদ (৭৪ বলে ৫৪ রান)। সৌদ শাকিল ও আগা সালমান ক্রিজে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। দলীয় ১৫১ রানে সালমানকে ফেরান কামিন্স। এরপর জামালকে সঙ্গে নিয়ে রিজওয়ান শেষ বিকেলের ঝড়টা কোনোমতে সামলেছেন। কামিন্স উইকেট নিয়েছেন ৩টি, লায়ন ২টি।
এর আগে ৩ উইকেটে ১৮৭ রানে দ্বিতীয় দিন শুরু করা অস্ট্রেলিয়া শুরুতেই ট্রাভিস হেডের উইকেট হারায়। তাঁকে ফেরান শাহিন শাহ আফ্রিদি। দলীয় ২৫০ রানে ব্যক্তিগত ৬৩ রানে করে ফেরেন মারনাস লাবুশেন। তাঁকে আউট করেন জামাল।
এরপর থিতু হওয়া মিচেল মার্শকে ৪১ রানে মীর হামজা আউট করলে অস্ট্রেলিয়াকে অলআউট করার কাজটা সহজ হয়ে যায় পাকিস্তানের। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া থামে ৩১৮ রানে। ৬৪ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন জামাল। আফ্রিদি, হামজা ও হাসান আলী ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।