শেষ ওভারের রোমাঞ্চে কুমিল্লার জয়
৬ বলে দরকার ১৭ রান—খুলনা টাইগার্সের জয়ের জন্য সমীকরণটা ছিল এমন। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের দিকে তখন সবার চোখ। মোসাদ্দেক হোসেন নাকি মুকিদুল ইসলাম, দুজনের মধ্যে কার হাতে উঠবে শেষ ওভারের দায়িত্ব। ইমরুল বেছে নিলেন সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ ওভারে বল করে বাংলাদেশকে জেতানো মোসাদ্দেককেই।
আজও শেষ পর্যন্ত দলকে জয় উপহার দিলেন মোসাদ্দেক। খুলনার অধিনায়ক ইয়াসির আলী টানা দুটি চার মারলেও তাঁর দল শেষ ওভারে ১২ রান নিতে পারে। ম্যাচ জিততে শেষ বলে ৬ রান দরকার ছিল খুলনার। তবে ইয়াসির নিদে পারেন ১ রান। শেষ পর্যন্ত কুমিল্লার ১৬৫ রানের জবাবে খুলনার ইনিংস থেমেছে ১৬১ রানে। ৪ রানের জয়ে সিলেট পর্ব শুরু হলো বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। এটি তাদের টানা পঞ্চম জয়।
রান তাড়ার খুলনার শুরুটা ভালো হয়নি। শুরুতেই পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার নাসিম শাহর আগুনে বোলিংয়ে তামিম ইকবালকে হারায় খুলনা। তবে খুলনার দুই নতুন বিদেশি অ্যান্ড্রু বলবার্নি ও শাই হোপ জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কাটা সামনে নেন। তবে দুজনই রান করেছেন ধীর গতিতে। দুজনের ৪৯ রানের জুটিটি এসেছে ৪০ বলে। বলবার্নি ৩১ বল ৩৮ রান করে হয়েছেন রানআউট।
তবে দুজনের মন্থর ব্যাটিংয়ের ক্ষতিটা পুষিয়ে দিয়েছিলেন মাহমুদুল হাসান। মাঝের ওভারে ক্রিজে এসে ১৩ বলে ২৬ রান যোগ করেন তিনি। তাতে রান তাড়ায় খুলনা কিছুটা এগিয়ে যায়। কিন্তু মাহমুদুলের পর কেউই দ্রুত গতিতে রান তুলে সময়ের দাবি মেটাতে পারেননি। আজম খান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ইনিংস দীর্ঘ হয়নি। টিকে ছিলেন হোপ। কিন্তু তাঁর ৩২ বলের ৩৩ রানের ইনিংস উল্টো চাপে ফেলে খুলনাকে। পরে ইয়াসির ১৯ বলে ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন।
কুমিল্লার ইনিংসটাও প্রত্যাশিত গতিতে এগোয়নি। লিটন দাস ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের উদ্বোধনী জুটিতে ৬৫ রান এলেও তা দ্রুত আসেনি। একটু থেমে আসা উইকেটে দুজনই সময় নিয়ে খেলেছেন।ফিফটি করেছেন দুজনই। দুজনের মধ্যে লিটন প্রথম ১০ ওভারে কুমিল্লার ইনিংস টেনেছেন, পরের ১০ ওভারে হাত খুলেছেন রিজওয়ান।
লিটন ৪২ বল খেলে ৫০ রান করে আউট হয়েছেন ইনিংসের দশম ওভারে। ৯টি চার ছিল লিটনের ১১৯ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে। রিজওয়ান অপরাজিত ছিলেন ৪৭ বলে ৫৪ রান করে।
৪টি চার ও ১টি ছক্কা ছিল রিজওয়ানের ইনিংসে। তবে কুমিল্লার ইনিংসে গতি এনেছেন মূলত জনসন চার্লস। তিনে নেমে ৫টি ছক্কা মেরেছেন, ২২ বলে করেছেন ৩৯ রান। তাঁর ১৭৭ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটি কুমিল্লার রানটাকে দেড় শ’র ওপারে নিতে সাহায্য করেছে।
খুলনার বোলারদের মধ্যে মিতব্যয়ী বোলিং করেছেন নাসুম আহমেদ। তাঁর ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রান নিতে পেরেছে কুমিল্লা। তারকায় ঠাসা কুমিল্লার টপ অর্ডারকে হাত খুলে খেলতে দেননি এই বাঁহাতি। ভালো করেছেন পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও। কোনো উইকেট না পেলেও তাঁর ৪ ওভার থেকে ৩০ রান নিতে পেরেছে কুমিল্লা।
তবে তরুণ পেসার নাহিদ রানা ও ওয়াহাব রিয়াজ খরুচে বোলিং করেছেন। রিয়াজ ৪ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন। ৪ ওভারে ৪৯ রান দেওয়া রানা ছিলেন খুলনার সবচেয়ে খরুচে বোলার।