অভিষেকে ৫ উইকেটে বাংলাদেশের ৮
টেস্ট অভিষেকে প্রথম বলেই পেয়েছিলেন উইকেট। সেটি কাল মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনে। নিজাত মাসুদকে তাই ভাগ্যবান ভাবতেই পারেন। টেস্টে ২২তম বোলার হিসেবে এই সংস্করণে নিজের প্রথম বলেই উইকেট নেওয়া এই আফগান পেসার ভাগ্যবান হলেও দক্ষতাও কম নেই। ওটা না থাকলে কি আর ইনিংসে ৫ উইকেট মেলে!
সেটাও টেস্ট অভিষেকেই। বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকে পঞ্চম বোলার হিসেবে ৫ উইকেট নিলেন এই পেসার। আর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ এই কীর্তি গড়ে নিজাত যখন বল উঁচিয়ে মাঠ ছাড়লেন, তখন অনেকের বাংলাদেশ দলের প্রথম জিম্বাবুয়ে সফরের স্মৃতি মনে পড়তে পারে।
২০০১ সালে সেই সফরে বুলাওয়ে টেস্টে অভিষেক হয়েছিল জিম্বাবুয়ের অলরাউন্ডার অ্যান্ডু ব্লিগনটের। ৫ উইকেট নিয়ে অভিষেক টেস্ট স্মরণীয় করে রাখেন এই পেসার। পাকিস্তানের পেসার সাব্বির আহমেদ ২০০৩ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে করাচি টেস্টে নিজের অভিষেক রাঙিয়েছেন ৪৮ রানে ৫ উইকেট নিয়ে। এরপর লম্বা বিরতির পর ২০১৮ সালে মিরপুরে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টেস্টে অভিষেকে ৫ উইকেট নিয়েছেন অফ স্পিনার আকিলা ধনাঞ্জয়া।
ধনাঞ্জয়ার সেই স্পেলটিও ছিল স্মরণীয়। মাত্র ৫ ওভারে ২৪ রান দিয়ে বাংলাদেশের ৫ ব্যাটসম্যানকে আউট করেন এই অফ স্পিনার। এ তালিকায় আছেন আরেক লঙ্কান স্পিনার প্রবীণ জয়বিক্রমা। ২০২১ সালে বাংলাদেশ দলের শ্রীলঙ্কা সফরে অভিষেকে দুই ইনিংসেই ৫ উইকেট নিয়েছেন। পাল্লেকেলে টেস্টে প্রবীণ দুই ইনিংস মিলে নিয়েছেন ১১ উইকেট, যা বাংলাদেশের বিপক্ষে অভিষেকে যেকোনো বোলারের সেরা পারফরম্যান্স।
টেস্ট অভিষেকে বাংলাদেশের বোলারদের ৫ উইকেট নেওয়ার তালিকাটা অবশ্য আরও দীর্ঘ। এখন পর্যন্ত আটজন বোলার অভিষেকে ৫ উইকেট নিয়েছেন। আর প্রত্যাশিতভাবে সে তালিকায় সাতজনই স্পিনার। শুরুটা হয় বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট দিয়ে, ভারতের বিপক্ষে নাঈমুর রহমান ১৩২ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন। ২০০১ সালে বুলাওয়ে টেস্টে ৮১ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন বাঁহাতি পেসার মঞ্জুরুল ইসলাম। একই ম্যাচে ব্লিগনটও অভিষেকে ৫ উইকেট নিয়েছেন।
আরেক অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫১ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন। ২০১১ সালে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ৬ উইকেট নিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার ইলিয়াস সানি। সোহাগ গাজী এ তালিকায় যোগ দেন ২০১২ সালে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে ৭৪ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন এই স্পিনার। বলে রাখা ভালো, সেই টেস্টে অনাকাক্ষিত এক রেকর্ডও গড়েছিলেন সোহাগ গাজী। টেস্ট ইতিহাসে অভিষেকে প্রথম বলেই ছক্কা হজম করা একমাত্র বোলার সোহাগ গাজী, মেরেছিলেন ক্রিস গেইল।
তাইজুল ইসলামের টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছে ৫ উইকেটে। ২০১৪ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ১৩৫ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন এ বাঁহাতি। মেহেদী হাসান মিরাজের সেই স্মরণীয় অভিষেকের স্মৃতি কার না মনে আছে। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে ৮০ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন। এ তালিকায় সর্বশেষ সংযুক্তি আরেক অফ স্পিনার নাঈম হাসান। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬১ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন নাঈম। তখন টেস্ট অভিষেকে সর্বকনিষ্ঠ বোলার হিসেবে ৫ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়েছিলেন নাঈম।