নিখাদ ক্রিকেটপ্রেমী মাত্রই আইপিএলের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের কথা মনে গেঁথে রাখার কথা। ২০১৩ সালে স্বীকৃত টি–টোয়েন্টি ইতিহাসে ক্রিস গেইলের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের কীর্তি গড়ার দিন ২৬৩ রান করেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। এক দশক ধরে টিকে থাকা রেকর্ডটা আজ হুমকিতে পড়েছিল। আরেকটু হলেই বেঙ্গালুরুর রেকর্ড ভেঙে ফেলত লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস।
সেটা না হলেও লক্ষ্ণৌ যা করেছে, তাতেই আইপিএলের রেকর্ড বই ওলটপালট হয়ে গেছে। কাইল মায়ার্স, মার্কাস স্টয়নিস, নিকোলাস পুরানদের ব্যাটিং তাণ্ডবে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ২৫৭ রান করেছে মাত্র দ্বিতীয় মৌসুম খেলতে নামা দলটি। এটিই যে এ মৌসুমের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ, সেটা না বললেও চলছে। শুধু কি তাই? গত ৯ বছরে এটিই কোনো দলের সেরা ব্যাটিং পারফরম্যান্স। প্রতিপক্ষের মাঠেও সর্বোচ্চ।
লক্ষ্ণৌর রেকর্ড তোলপাড়ের রাতে ম্যাচের ফল অনুমতিভাবেই তাদের পক্ষে গেছে। তাই বলে প্রীতি জিনতার দল খুব একটা খারাপ করেনি। ১ বল বাকি থাকতে অলআউট হওয়ার আগে তারাও পেরিয়েছে ২০০–এর গণ্ডি। তবু হেরেছে ৫৬ রানের বড় ব্যবধানে।
এ হারেও অবশ্য পয়েন্ট তালিকার ছয়ে রয়ে গেল পাঞ্জাব। লোকেশ রাহুলের লক্ষ্ণৌ উঠে এল দুইয়ে। সমান ১০ পয়েন্ট করে হলেও লক্ষ্ণৌয়ের চেয়ে নেট রানরেটে এগিয়ে থাকায় শীর্ষে আছে রাজস্থান রয়্যালস।
দলীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহের মতো এক ম্যাচে দুই দল মিলিয়ে তোলা সর্বোচ্চ রানও হুমকিতে পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত সেটা না হলেও ৪৫৮ রানের ম্যাচটি বহুদিন মনে রাখবে রান দেখতে ভালোবাসা ক্রিকেটপ্রেমীরা। আর দুটি চার বা ছক্কা মারতে পারলে আইপিএলে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি বাউন্ডারিতেও বেঙ্গালুরুকে ছাড়িয়ে যেত লক্ষ্ণৌ।
এ ম্যাচে লক্ষ্ণৌয়ের আক্ষেপ বলতে শুধু একটি—বোলিংয়ের সময় মার্কাস স্টয়নিস হাতের আঙুলে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়া। অস্ট্রেলিয়ান এই অলরাউন্ডারদের চোট কতটা গুরুতর, সেটা অবশ্য ম্যাচ শেষে জানা যায়নি। তবে সতীর্থের চোটে কপাল খুললেও খুলতে পারে কুইন্টন ডি ককের।
আইপিএলে অভিষেক মৌসুম খেলতে নামা মায়ার্স এতটাই দুর্দান্ত ছন্দে আছেন যে, ডি ককের মতো তারকাকে ম্যাচের পর ম্যাচ বসে থাকতে হচ্ছে! অবশ্য লক্ষ্ণৌ দলটার গভীরতাও তো তাতে পরিস্ফুটিত হয়।
কদিন ধরে আগে ব্যাট করা মানে যেন জয় অবধারিত। নতুন ‘ট্রেন্ড’ জানা থাকলেও টস জিতে লক্ষ্ণৌকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন এ ম্যাচ দিয়ে চোট কাটিয়ে ফেরা পাঞ্জাব অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান। প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে নেতৃত্ব–ব্যাটিং সবকিছুতেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন ধাওয়ান। দলকেও এর খেসারত দিতে হয়েছে ঘরের মাঠে বড় ব্যবধানে হেরে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস : ২০ ওভারে ২৫৭/৫
(স্টয়নিস ৭২, মায়ার্স ৫৪, পুরান ৪৫; রাবাদা ২/৫২, লিভিংস্টোন ১/১৯, কারেন ১/৩৮)
পাঞ্জাব কিংস : ১৯.৫ ওভারে ২০১
(তাইদে ৬৬, রাজা ৩৬, জিতেশ ২৪; ঠাকুর ৪/৩৭, নাভিন ৩/৩০, বিষ্ণই ২/৪১)
ফল : লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস ৫৬ রানে জয়ী।