বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে হেরে এখন কোণঠাসা অস্ট্রেলিয়া। অন্যতম ফেবারিট হিসেবে খেলতে এসে প্রথম দুই ম্যাচেই বাজেভাবে হেরে বসেছে তারা। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ধরাশায়ী হয়েছে স্বাগতিক ভারতের কাছে। ১৯৯ রানে অলআউট হওয়া অস্ট্রেলিয়া সেদিন ম্যাচ হেরেছিল ৬ উইকেটে। পরের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্যাট কামিন্সদের হারের ধরন ছিল আরও বাজে।
৩১২ রানের জবাবে ১৭৭ রানে অলআউট হয়ে হারতে হয়েছে ১৩৪ রানে। আগামীকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারলে চোখ রাঙাতে শুরু করবে বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ও। তবে দুই হারের পর এখন ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া প্যাট কামিন্সের দল। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এসে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক কামিন্স বলেছেন, এখন প্রতিটি ম্যাচই তাঁদের জন্য ফাইনাল এবং তাঁরা পরিস্থিতি বদলে দিতে চান।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হারের পর দলের অবস্থা কেমন জানতে চাইলে কামিন্স বলেছেন, ‘আমরা একেবারেই আদর্শ জায়গায় নেই। আমার মনে হয়, শেষ ম্যাচের পর আমরা সবাই কিছুটা হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। তবে গত কয়েক দিন আমরা সবাই খুব ভালো অবস্থায় আছি। সবাই নিজেদের আস্তিন গুটিয়ে প্রস্তুত। সবাই চেষ্টা করতে চায় এবং নিজেদের ভুলগুলো সংশোধন করতে চায়। সব মিলিয়ে দলের মানসিকতা খুবই দারুণ। পরিস্থিতি বদলে দিতে সবাই এখন মরিয়া।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের লক্ষ্য এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হারের কারণ নিয়ে কামিন্স আরও বলেছেন, ‘প্রথমত জিততে চাই। আমাদের শুরুটা মোটেই ভালো হয়নি, তবে আশা করি পরিস্থিতি বদলে দিতে পারব। আমি মনে করি, আমরা শেষ দিকে (আগের ম্যাচে) খুব ভালো বল করেছি। তবে তারা পুরো ইনিংসে ভালো বল করেছে। শেষ ম্যাচে কাটার খুব ভালো কাজ করেছে। আর এখানকার মাঠও কিছুটা বড় হওয়ায় কাটারে ভালো সহায়তা পাওয়া যায়।’
অস্ট্রেলিয়া নিজেদের ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলতে পারছে না। কেন এমন হচ্ছে জানতে চাইলে কামিন্সের উত্তর, ‘আমি এখনো বুঝতে পারি না, অস্ট্রেলিয়ান ধরনের খেলাটা আসলে কেমন? কোনো সন্দেহ নেই, যে মানের ক্রিকেট আমরা খেলি, সেটা ধরে রাখতে পারছি না। আমরা লাইনচ্যুত হয়েছি এবং দুই ম্যাচেই বিধ্বস্ত হয়েছি। যখন আমরা নিজেদের সেরাটা খেলি, তখন বড় সংগ্রহ গড়তে পারি। প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে পারি। মাঝামাঝি ওভারগুলোয় বোলাররা উইকেট নিতে পারে, যার কোনোটাই আমরা এখনো করতে পারিনি। আমরা জানি, এগুলোই আমাদের ভালো দলে পরিণত করে।’
দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে শুরুতে বোলিং ভালো না হলেও শেষ দিকে দারুণভাবে লড়াইয়ে ফিরেছিল অস্ট্রেলিয়া। একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল প্রোটিয়ারা ৩৫০ ছাড়িয়ে যাবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৩১১ রানে থামে তারা। নিজেদের বোলিং নিয়ে কামিন্স বলেছেন, ‘হ্যাঁ এটা বেশ ইতিবাচক ব্যাপার। একপর্যায়ে যখন ম্যাচের ১৫ ওভার বাকি, তখন তাদের ২ উইকেট পড়েছিল। আমাদের ৩৫০ চোখ রাঙাচ্ছিল। তাই তাদের ৩০০–এর একটু বেশিতে আটকে রাখতে পারা দারুণ ছিল। এটা প্রমাণ করে যে প্রতি ম্যাচেই মানদণ্ড বজায় রাখতে হবে।’
অস্ট্রেলিয়ার যে এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, তা অজানা নেই কামিন্সের। তাই এখন সব ম্যাচকেই ফাইনাল হিসেবে দেখছেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক, ‘আমরা এখন ২-০ তে পিছিয়ে আছি। আমাদের জেতা শুরু করতে হবে এবং খুব দ্রুতই। এখন প্রতিটি ম্যাচই অনেকটা ফাইনালের মতো। সবগুলো ম্যাচ আমাদের জিততে হবে।’