ব্যাটিংয়ে মিরাজ-তানজিদ, বোলিংয়ে পাওয়া ইংল্যান্ডের ৬ উইকেট
বাংলাদেশ বোলারদের জন্য এ ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল ‘লিটমাস টেস্ট’। ইংল্যান্ডের হেভিওয়েট ব্যাটিং লাইনআপের বিপক্ষে কেমন করেন মোস্তাফিজুর রহমানরা, সেটি ছিল দেখার বিষয়। বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের দেওয়া ১৯৭ রানের লক্ষ্য ইংল্যান্ড পেরিয়ে গেছে ২৪.১ ওভারেই। রান তাড়ায় ঝোড়োগতিতে এগোতে থাকা ইংল্যান্ডের ৫ উইকেট ১১৪ রানের মধ্যেই নিতে পেরেছিল বাংলাদেশ, শেষ দিকে আউট করেছে মঈন আলীকেও, বোলিংয়ে প্রাপ্তি সেটিই।
বোলিংয়ে বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেন মোস্তাফিজুর রহমান, তাঁর বেরিয়ে যাওয়া বলে স্লিপে ধরা পড়েন ডেভিড ম্যালান। তবে জনি বেয়ারস্টো শুরুই করেন পঞ্চম গিয়ারে থেকে। ৪ ওভারেই ৫০ পেরিয়ে যায় ইংল্যান্ড। মোস্তাফিজের ফুললেংথের বল মিস করে বোল্ড হওয়ার আগে বেয়ারস্টো করেন ২১ বলে ৩৪ রান। ইংল্যান্ড অবশ্য তাতে থামেনি।
হ্যারি ব্রুক, জস বাটলাররা শট খেলে গেছেন। হাসান মাহমুদ ও শরীফুল ইসলামরা তাঁদের থামিয়েছেন ঠিকই। ১৫ বলে ১৭ করে ব্রুক, ১৫ বলে ৩০ করে থামেন বাটলার। ১১তম ওভারে আউট হন ইংল্যান্ড অধিনায়ক, তবে তার আগেই দল পেরিয়ে গেছে ১০০। ম্যালানের পর দ্বিতীয় ইংলিশ ব্যাটসম্যান হিসেবে এক অঙ্কেই থামেন লিভিংস্টোন। মঈন আলী নামেন সাতে। ৩৯ বলে ৫৭ রানের ইনিংসের পর থামেন তিনি, তবে ততক্ষণে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন মাত্র ১০ রান।
জো রুট তিন নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমেছিলেন ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ৪০ বলে ২৬ রান করে। অন্যপ্রান্তে সতীর্থদের বিস্ফোরক ব্যাটিং শুধু দেখেই গেছেন তিনি। তবে নিশ্চিত করেছেন জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া।
এর আগে বাংলাদেশের ব্যাটিং প্রস্তুতিটা ঠিক সুবিধার হয়নি। শ্রীলঙ্কাকে ৭ উইকেটে হারানো ম্যাচে মাত্র ৫ জনকেই ব্যাটিংয়ের সুযোগ দিয়েছিল বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অবশ্য নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানবিহীন বাংলাদেশ বাধ্য হলো ১১ জনকেই নামাতে। তবে মেহেদী হাসান মিরাজ ও ওপেনার তানজিদ হাসান ছাড়া সেভাবে রানের দেখা পাননি কেউ।
সাকিবের অনুপস্থিতিতে আজ বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন নাজমুল হোসেন। টসে জিতে ব্যাটিং নেন তিনি। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা সুবিধা করতে না পারলেও ইংল্যান্ড বোলিং করিয়েছে ৮ জনকে দিয়ে। তাদের প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর মোটামুটি সবাইকে সুযোগ দিতে চেয়েছে তারা।
৫ ওভারের মধ্যে বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলে লিটন দাস ও নাজমুল হোসেনকে। দুজনই রিস টপলির শিকার। লিটন অবশ্য আউট ছিলেন না, তবে ডিপ থার্ডম্যানে নাজমুলের তোলা ক্যাচ নিয়ে সংশয় ছিল না কোনো। প্রথম ম্যাচের মতো এবারও আশাজাগানিয়া ব্যাটিং করেন তানজিদ হাসান। মার্ক উডের বলে ইনসাইড-এজে থামে তাঁর ৪৫ বলে ৪৪ রানের ইনিংস।
আগের দিন তিনে নামা মিরাজ এবার আসেন চার নম্বরে। সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে তিনি আজ করেন ৮৯ বলে ৭৪ রান। মিরাজ আজ ইনিংস গড়তে শুরুতে যথেষ্ট সময় নেন, প্রথম ২২ বলে করেন ১১ রান। তবে ৬২ বলে পূর্ণ করেন ফিফটি। ডেভিড উইলিকে আড়াআড়ি মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে থামেন, ইনিংসে মারেন ১০টি চার।
তবে তানজিদ ও মিরাজের বাইরে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে সে অর্থে ইতিবাচক দিক নেই কোনো। ১৫ বলে ৮ রান করে আদিল রশিদের গুগলিতে বোল্ড হন মুশফিকুর রহিম। মাহমুদউল্লাহ ভালো শুরু পেলেও আউট হন বাজেভাবে। রশিদের ফুলটসে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ তোলেন ২১ বলে ১৮ রান করে।
৩০ ওভারের পর নামা বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে প্রায় ৩ ঘণ্টা। মাঝে একবার খেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টিতে আবার পেছায় সেটি। প্রথমে ৪০ ওভারের পর ৩৭ ওভারে নেমে আসে ম্যাচ। বিরতির পর প্রথমে আউট হন তাওহিদ হৃদয়, স্যাম কারেনের গতি কমিয়ে আনা বলে ক্যাচ তুলে। ৩৪তম ওভারে পরপর ২ বলে মিরাজ ও নাসুম আহমেদ আউট হন। পরের ওভারের প্রথম বলে টপলির তৃতীয় শিকার হন মেহেদী। বৃষ্টি-বিরতির পর ৭ ওভারে বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারিয়ে তোলে ৩৫ রান।