ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে ভারতীয় মালিকদের দাপট, চিন্তিত পাকিস্তান
পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা ভারতের আইপিএলে খেলতে পারেন না। ২০০৮ সালে প্রথম আসরে খেললেও এরপর থেকে চলছে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা। দুই দেশের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সম্পর্কে যে টানাপোড়েন, অদূর ভবিষ্যতেও পাকিস্তানিদের আইপিএলে খেলার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
এ নিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের খুব বেশি মাথাব্যথাও দেখা যায়নি এত দিন। নিজেদের আয়োজনে পিএসএল আছে, ভারত বাদে বিশ্বের অন্যান্য দেশের টুর্নামেন্টেও খেলার সুযোগ পান শোয়েব মালিক–শাদাব খানরা।
তবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এবার নির্ভার থাকতে পারছে না। আইপিএল ছাড়িয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের টুর্নামেন্টে ভারতীয় বিনিয়োগের উপস্থিতি বাড়ছে। দল কিনছেন আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকেরা। আর সেই দলগুলাতে পাকিস্তানের ক্রিকেটার বলতে গেলে নেওয়াই হচ্ছে না। গত সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট এসএটি-টোয়েন্টির নিলাম অনুষ্ঠিত হয়।
এই নিলামে পাকিস্তানের একজন ক্রিকেটারকেও নেওয়া হয়নি। নতুন শুরু হতে যাওয়া অংশগ্রহণকারী ৬ দলের প্রতিটিরই মালিকানা আইপিএল ফ্রাঞ্চাইজির মালিকদের।
আগামী বছরের শুরুতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হবে ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি-টোয়েন্টি নামের আরেকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট। এখানে ছয়টি দলের মধ্যে পাঁচটিরই মালিকানা ভারতীয়দের। এ লিগে দল পেয়েছেন শুধু পাকিস্তানের আজম খান। তবে সেটিও যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানার দল ডেজার্ট ভাইপারে।
নতুন দুই টুর্নামেন্টের আগে থেকেই ভারতীয়দের মালিকানার উপস্থিতি আছে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএলে)। এখানে আইপিএলের দল রাজস্থান রয়্যালসের মালিক মনোজ বাদালের দল বার্বাডোজ রয়্যালস আর কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিকপক্ষ রেডচিলিস এন্টারটেইনমেন্ট কনসোর্টিয়ামের দল ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স।
এ দুই দলে এ বছর সুযোগ পাওয়া একমাত্র পাকিস্তানি ক্রিকেটারও আজম, যিনি বার্বাডোজের হয়ে খেলেছেন। অবশ্য মেয়েদের সিপিএলে একই ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলেছেন পাকিস্তানের ফাতিমা সানাও।
তবে সব মিলিয়ে এটি স্পষ্ট যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টুর্নামেন্টে ভারতীয়দের উপস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের সুযোগের হার কমছে। এ নিয়ে চিন্তিত পিসিবি বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে।
ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, পিসিবি চেয়ারম্যান রমিজ রাজা পাকিস্তানিদের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে দল না পাওয়ার বিষয়ে অন্যান্য বোর্ডপ্রধানদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
এ ছাড়া বোর্ডগুলোর সঙ্গে পারস্পরিকভাবে অনাপত্তিপত্র প্রদানের একটি ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনাও করেছেন রমিজ। সেটি বাস্তবায়িত হলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড অন্যান্য দেশের লিগের জন্য নিজের খেলোয়াড়দের অনাপত্তিপত্র দেবে, আবার অন্যান্য দেশগুলো পিএসএলে খেলার জন্য তাঁদের খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে একই কাজ করবে বলে আশা তাঁদের।
পিসিবির দুশ্চিন্তার আরেকটি দিক পিএসএলের মান ধরে রাখা নিয়েও। আর্থিক দিক থেকে পিএসএলকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও আরব আমিরাতের লিগ দুটি। বিশেষ করে আরব আমিরাতের লিগ থেকে খেলোয়াড়দের আয়ের পরিমাণ হবে বেশি, যেখানে একজন বিদেশি খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত পাওয়ার সুযোগ আছে।