শুধু আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ও কিপিং নয়, মজার মজার উক্তির জন্যও ঋষভ পন্তের আলাদা পরিচিতি আছে ভারতীয় ক্রিকেটে। কানপুর টেস্টে গতকাল প্রথম দিনেও এমন এক মজার মন্তব্য করেন পন্ত। সেটি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান মুমিনুল হকের ব্যাটিংয়ের সময়।
কানপুরের গ্রিন পার্কে গতকাল দেড় সেশনের বেশি সময় খেলা হয়নি বৃষ্টির কারণে। তার আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৫ ওভারে ৩ উইকেটে ১০৭ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ৪০ রানে অপরাজিত মুমিনুল এবং ৬ রানে অন্য প্রান্ত আগলে রেখেছেন মুশফিকুর রহিম। বৃষ্টির কারণে আজ দ্বিতীয় দিনে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত খেলা শুরু হয়নি। প্রথম সেশন ধুয়ে গেছে বৃষ্টিতে। সে যা–ই হোক, মুমিনুলকে নিয়ে পন্তের করা মন্তব্যটি গতকাল ম্যাচের ৩৩তম ওভারে, যা শুনে ধারাভাষ্যকক্ষেও হাসির রোল উঠেছে।
আমরা তার হেলমেট (বল লাগিয়ে) থেকে এলবিডব্লু নিতে পারি, ভাই (অশ্বিনকে)।ঋষভ পন্ত, গতকাল কানপুর টেস্টের প্রথম দিনে মুমিনুলকে উদ্দেশ করে
সেই ওভারে বোলিং করছিলেন ভারতের স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। প্রথম বলেই সুইপ খেলার চেষ্টা করেন মুমিনুল। ঠিকমতো ব্যাটে লাগাতে পারেননি। বল তাঁর ব্যাটের ওপরের কানায় লেগে হাতেও লেগেছে। পন্ত স্টাম্পের পেছন থেকে এলবিডব্লুর আবেদন করলেও অশ্বিন ভুল শুধরে দেন। অশ্বিন ইঙ্গিতে পন্তকে বুঝিয়ে দেন, বল ব্যাটে লেগেছিল। কিন্তু ২৬ বছর বয়সী রসিক পন্ত দমে যাওয়ার পাত্র নন।
সম্ভবত ব্যাটসম্যানকে চাপে রাখতে ও সতীর্থকে প্রেরণা দিতে পন্ত বলেন, ‘আমরা তার হেলমেটে (বল লাগিয়ে) থেকে এলবিডব্লু নিতে পারি, ভাই (অশ্বিনকে)।’ স্টাম্প মাইকে পন্তের এ কথা শোনা গেছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ভাইরাল হতেও সময় লাগেনি।
পন্তের এ কথা শুনে ধারাভাষ্যকক্ষে সুনীল গাভাস্কার ও দিনেশ কার্তিক হেসে ফেলেন। গাভাস্কার তারপর বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘হিন্দিতে পন্ত যেটা বোঝাতে চাইছে, হেলমেটে (বল) লাগিয়েও এলবিডব্লু নেওয়া যেতে পারে। সে আসলে মুমিনুলের উচ্চতাকে ইঙ্গিত করেছে। শুধু ঋষভ পন্তই এভাবে ভাবতে পারে।’
মুমিনুলের উচ্চতা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি। পন্তের উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি। দুজনের উচ্চতায় আহামরি কোনো পার্থক্য নেই। ব্যাপারটা ধরতে পেরে বুঝি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক ক্রিকেটপ্রেমী লিখেছেন, ‘এক পাঁচ ফুট আরেক পাঁচ ফুটকে নিয়ে রসিকতা করছে। ঋষভ পন্ত অশ্বিনকে বলছে, ওর হেলমেটে লাগিয়ে এলবিডব্লু নেব।’
চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্টেও মজা করেছেন পন্ত। ভারতের কাছে ২৮০ রানে সেই টেস্টে হেরেছে বাংলাদেশ। সেই টেস্টের তৃতীয় দিনে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস যখন চলছিল, একপর্যায়ে পন্তকে দেখা যায় বাংলাদেশের ফিল্ডিং সাজিয়ে দিতে। তাঁর কথা শুনে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন ফিল্ডারকে জায়গামতো দাঁড়ও করান। ম্যাচ শেষে ভারতের ধারাভাষ্যকার সাবা করিম পন্তকে ঘটনাটি মনে করিয়ে দিয়ে জানতে চান, বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক তখন কে ছিলেন—শান্ত, না পন্ত?
উত্তরে পন্ত বলেন, ‘ক্রিকেটে কীভাবে আরও ভালো করা যায়, এ নিয়ে অজয় (জাদেজা) ভাইয়ের সঙ্গে আমার প্রায়ই কথা হয়। সেটা নিজের দলের হোক বা অন্য দলের। ওখানে তখন ফিল্ডার ছিল না। এক জায়গায় দুজন দাঁড়িয়ে ছিল। আমি তাই বললাম, ওখানে একজন ফিল্ডার দাও।’
ঘটনাটি হলো, অফসাইডে বাংলাদেশের দুই ফিল্ডারকে পাশাপাশি দাঁড়ানো দেখে পন্ত হাত দিয়ে মিডউইকেটের দিকে ইশারা করে বলতে থাকেন, ‘আরে ভাই, এদিকে একজন আসো। এদিকে। ফিল্ডার কম আছে।’ শুধু হাত দিয়ে ইশারা করেই ক্ষান্ত হননি; ভালো করে বোঝানোর জন্য ‘মিডউইকেট’ও বলে দেন।