২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

৫০০-এর সামনে কোহলি, দ্রাবিড় যেটিকে সবচেয়ে বড় হিসেবে দেখেন

বিরাট কোহলিছবি: রয়টার্স

‘হোয়াট আ প্লেয়ার!’

বিরাট কোহলি এমন প্রশংসা তাঁর ক্যারিয়ারে অজুতবার শুনেছেন। পোর্ট অব স্পেনে আজ যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে নামবেন, তখনো নিশ্চয়ই কথাটা শুনবেন। প্লেটোর ‘রিপাবলিক’ বইয়ে পলিমার্কাস যেমন ন্যায়ের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘যাঁর যা প্রাপ্য, তাঁকে তা দেওয়াই ন্যায়।’

কোহলিরও তেমনি এই প্রশংসা প্রাপ্য। পোর্ট অব স্পেনের টেস্টটি তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ৫০০তম ম্যাচ। সব ক্রিকেটারের এমন মাইলফলক ছোঁয়ার সৌভাগ্য হয় না। কারণ, চাইলেই সবাই কোহলি হতে পারেন না। আর তাই সবার কপালে এমন প্রশংসাও জোটে না।

আরও পড়ুন

কোহলিকে দেখে এখন আক্ষেপ হতে পারে ইনজামাম–উল–হকের। তিলকারত্নে দিলশানেরও এমন লাগতে পারে। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৪৯৯ ম্যাচ খেলে অবসর নিয়েছিলেন পাকিস্তান কিংবদন্তি। শ্রীলঙ্কার সাবেক অলরাউন্ডার এবং পরে ওপেনার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা দিলশান খেলেছেন ৪৯৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এই দুই সাবেকের আক্ষেপ হতে পারে এই ভেবে, ৫০০ ম্যাচের ‘ক্লাব’–এ নাম লিখিয়ে অবসর নিতে পারতেন। কোহলি এই ক্লাবেই আজ নাম লেখাবেন ১০ম সদস্য হিসেবে, যেখানে ম্যাচ খেলার সংখ্যায় সর্বশেষ হিসেবে যে ব্যক্তিটি আছেন, তিনি কোহলিরই জাতীয় দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড়।

‘ফাইভ হানড্রেড’ ক্লাবের ৯ জন খেলোয়াড়ের নাম আগে জানিয়ে দেওয়া যাক—শচীন টেন্ডুলকার (৬৬৪), মাহেলা জয়াবর্ধনে (৬৫২), কুমার সাঙ্গাকারা (৫৯৪), সনাৎ জয়াসুরিয়া (৫৮৬), রিকি পন্টিং (৫৬০), মহেন্দ্র সিং ধোনি (৫৩৮), শহীদ আফ্রিদি (৫২৪), জ্যাক ক্যালিস (৫১৯) ও রাহুল দ্রাবিড় (৫০৯)।

পোর্ট অব স্পেন টেস্টে কোহলি এই মাইলফলক ছোঁয়ার আগে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের কোচ দ্রাবিড়। সে তো সবাই জানাবেন। তবে দ্রাবিড় তাঁর সাবেক সতীর্থ ও এখনকার শিষ্যকে নিয়ে যে কথাগুলো বলেছেন, উঠতি ক্রিকেটারদের জন্য সেসব কথা রেফারেন্স পয়েন্ট হতে পারে।

আরও পড়ুন

কোহলির জন্য এই বছরটা এমনিতেই মাইলফলক ছোঁয়ার। আগামী মাসেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ বছর পূর্ণ হবে তাঁর। এরই মধ্যে ১১০ টেস্ট, ২৭৪ ওয়ানডে ও ১১৫ টি–টোয়েন্টি খেলে ফেলেছেন।

কোহলিকে ‘ফাইভ হানড্রেড’ ক্লাবে দ্রাবিড় কোথায় দেখেন, তা নিয়ে বলতে গিয়ে ভারতের কোচের ব্যাখ্যা, ‘কোনো সন্দেহ নেই, সে তার নিজের দলেই অনেকের প্রেরণা। আর ভারতে প্রচুর ছেলে–মেয়ে তো তাকে অনুসরণ করেই। পরিসংখ্যানই তার হয়ে কথা বলে, পারফরম্যান্সগুলোও ইতিহাসে থাকবে। কিন্তু আমার কাছে সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, পর্দার আড়ালে তার নিবেদন ও চেষ্টা—যা কেউ দেখে না। তার ৫০০তম ম্যাচ খেলতে যাওয়া সেই চেষ্টা ও নিবেদনেরই প্রতিফলন।’

গ্রাফিকস: প্রথম আলো

৩৪ বছর বয়সী কোহলিকে এখনো দারুণ ফিট ও শক্তিশালী মনে করেন দ্রাবিড়। বিষয়টি বুঝিয়ে বললেন এভাবে, ‘১২–১৩ বছরের মধ্যে ৫০০ ম্যাচের সামনে দাঁড়িয়েও তার উদ্দীপনা দেখার মতো। সে এখনো অনেক ফিট ও শক্তিশালী। এটা আসলেই অসাধারণ ব্যাপার। সহজে এমন কিছু পাওয়া যায় না। অনেক পরিশ্রম ও ত্যাগ থাকতে হয়, যেটা সে তার ক্যারিয়ারে করে এসেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। এটা কোচদের জন্যও যেমন ভালো, তেমনি তরুণেরাও অনুপ্রাণিত হয়।’

আরও পড়ুন

তরুণদের প্রেরণা পাওয়ার বিষয়টিও ব্যাখ্যা করেছেন দ্রাবিড়। ভারতের এই কোচের মতে, কোহলিকে কাউকে মুখে বলে অনুপ্রাণিত করার প্রয়োজন নেই। তিনি প্রাত্যহিক অনুশীলন ও নিজেকে যেভাবে প্রস্তুত করে থাকেন, সেসব দেখেই অনুপ্রাণিত হন তরুণেরা।

দ্রাবিড়ের ভাষায়, ‘কিছু বলার দরকার নেই। সে নিজেকে যেভাবে পরিচালিত করে, অনুশীলন করে এবং ফিটনেস ধরে রাখে, সেসবই তরুণদের জন্য প্রেরণা। তারাও সেগুলো অনুসরণ করে কোহলির মতো অনেক ম্যাচ খেলতে চায়। কঠোর পরিশ্রম, নিয়মানুবর্নিতা, মানিয়ে নেওয়ার দক্ষতা ও অনুশীলন—এসবের কারণেই ক্যারিয়ার দীর্ঘ হয়, যার সবকিছুই সে প্রদর্শন করেছে এবং সামনেও করবে।’