মধ্যরাতে আর বিমান ভ্রমণ নয়, ঘুমাতে না পেরে বিরক্ত রোহিত-কোহলিরা

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে ভ্রমণ–ঝক্কি পোহাতে হয়েছে রোহিত–কোহলিদেরছবি : আইসিসি

টেস্ট সিরিজের শেষ আর ওয়ানডে সিরিজের শুরুর মধ্যে ব্যবধান আড়াই দিনের কম। শেষ টেস্ট আর প্রথম ওয়ানডের ভেন্যু আবার আলাদা দুই দেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ভারত সিরিজ নির্ধারণী টেস্ট খেলেছে ত্রিনিদাদে; আগামীকাল প্রথম ওয়ানডে খেলবে বার্বাডোজে।

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের এক দেশ থেকে আরেক দেশের দূরত্ব কাছাকাছি হওয়ায় ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের (সিডব্লিউআই) এমন সূচি নতুন কিছু নয়। ত্রিনিদাদের রাজধানী পোর্ট অব স্পেন থেকে বার্বাডোজের রাজধানী ব্রিজটাউনে আকাশপথের দূরত্ব খুব বেশি নয়, ৩৪০ কিলোমিটার। বাংলাদেশের উদাহরণ দিলে ঢাকা থেকে কক্সবাজারে যাওয়ার মতো। গন্তব্যে পৌঁছাতে লাগে সর্বোচ্চ ৪০ মিনিট।

কিন্তু এই দূরত্ব অতিক্রম করতেই ভারতীয় দলের লেগে গেছে কয়েক ঘণ্টা। কারণ, বিমান ছাড়তে দেরি। পোর্ট অব স্পেনের হোটেল থেকে রোহিত–কোহলিরা বেরিয়েছিলেন কাল স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৪০ মিনিটে। ব্রিজটাউনের উদ্দেশে রাত ১১টায় রওনা হওয়ার কথা থাকলেও বিমান ছেড়েছে চার ঘণ্টা দেরিতে; রাত তিনটায়। ব্রিজটাউনে পৌঁছাতে প্রায় ভোর হয়ে গেছে।

গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মাহমুদউল্লাহরা
ছবি : প্রথম আলো

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে অতিথি দলগুলোর এমন অভিজ্ঞতা নতুন কিছু নয়। গত বছর জুলাই মাসেই ওয়েস্ট সফরে বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা হয়েছিল বাংলাদেশ দলের। ফেরিতে করে সেন্ট লুসিয়া থেকে মার্টিনেক হয়ে ডমিনিকা যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ, শরীফুল ইসলাম, নুরুল হাসানসহ বেশ কজন ক্রিকেটার। অবস্থা খারাপ হয়েছিল দলের ম্যানেজার নাফিস ইকবালেরও। ফেরিতে ৫ ঘণ্টার দীর্ঘ সমুদ্রপথ পাড়ি দেওয়ার অভিজ্ঞতা আগে কারোরই ছিল না। দলের অনেকেই ভুগেছেন ‘মোশন সিকনেসে’। এক বছর পর আরেকটি জুলাই মাসে রোহিত–কোহলিদের পড়তে হলো বিড়ম্বনায়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, বিমানবন্দরে লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হওয়ায় ও ভোরের দিকে ব্রিজটাউনে পৌঁছানোয় সারা রাত ঘুমাতে পারেননি রোহিত–কোহলিরা। এ নিয়ে যারপরনাই চটেছেন তাঁরা। ভবিষ্যতে আর যাতে মাঝরাতে ভ্রমণসূচি না রাখা হয়, বিসিসিআইয়ের কাছে সেই অনুরোধ জানিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। ওই বিমানে থাকা খেলোয়াড়দের আজ সকালে অনুশীলন করার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়েছে।

আরও পড়ুন
কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহাল দুদিন আগেই বার্বাডোজ পৌঁছেছেন
ছবি : বিসিসিআই

এ ব্যাপারে বিসিসিআইয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘বিমানবন্দরে ওদেরকে (ভারতীয় দলকে) লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। টিম ম্যানেজমেন্ট আমাদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে যে ভবিষ্যতে যাতে সকালে ফ্লাইট রাখা হয়। গভীর রাতে ভ্রমণসূচি থাকলে তারা ঘুমাতে পারে না। আমরা তাদের অনুরোধ মেনে নিয়েছি এবং ভ্রমণসূচিতে সংশোধনের পরিকল্পনা করছি।’

টেস্ট সিরিজের দলে থাকা ১১ জন ওয়ানডে সিরিজেও আছেন। তাঁরাই বিমানবন্দরে ভোগান্তিতে পড়েছিলেন। রোহিত–কোহলি ছাড়াও ভ্রমণের ঝক্কি পোহাতে হয়েছে রবীন্দ্র জাদেজা, মোহাম্মদ সিরাজ, ঈশান কিষান, শুবমান গিল, রুতুরাজ গায়কোয়াড়, শার্দূল ঠাকুর, জয়দেব উনাদকাট, অক্ষর প্যাটেল ও মুখেশ কুমারকে।

শুধু ওয়ানডে দলে থাকা বাকি ছয়জন দুই দিন আগেই বার্বাডোজে পৌঁছেছেন। তাঁরা হলেন সহ–অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া, ব্যাটসম্যান সূর্যকুমার যাদব, উইকেটরক্ষক–ব্যাটসম্যান সঞ্জু স্যামসন, ফাস্ট বোলার উমরান মালিক এবং দুই স্পিনার কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহাল।

কোহলি–সিরাজরা গভীর রাতে আর বিমানভ্রমণ করতে চান না
ছবি : বিসিসিআই

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুটি হবে বার্বাডোজে। শেষ ওয়ানডে খেলতে ভারতীয় দলকে আবারও ত্রিনিদাদে যেতে হবে। এশিয়া কাপের আগে ওয়ানডেতে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার এটা শেষ সুযোগ রোহিত–কোহলিদের।