‘ফেক ফিল্ডিং’–এর পক্ষে গাভাস্কার
বাংলাদেশ–ভারত ম্যাচের পর ‘ফেক ফিল্ডিং’ নিয়ে কী তোলপাড়ই না হয়ে গেল!
সেদিন লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন রানের জন্য দৌড়ানোর সময় বল হাতে না থাকার পরও থ্রোর ভান করেছিলেন বিরাট কোহলি। ম্যাচের পর বাংলাদেশ সহ–অধিনায়ক নুরুল হাসান কোহলির বিরুদ্ধে ফেক ফিল্ডিংয়ের অভিযোগ আনেন, ভিডিও ফুটেজেও যার সত্যতা মেলে। আইন অনুযায়ী জরিমানা হিসেবে বাংলাদেশ দলের ৫ রান পাওয়ার কথা। ম্যাচে ভারতের কাছে বাংলাদেশ হারেও ৫ রানেই (ডিএল মেথডে)।
এ ঘটনায় বাংলাদেশের সমর্থক মহলে আলোড়ন ওঠে। সমালোচনার শিকার হন কোহলি ও মাঠের আম্পায়াররা। ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার আকাশ চোপড়া স্বীকার করেন, কোহলির সেই থ্রোর ভান করাটা ফেক ফিল্ডিংই ছিল। আরেক ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে অবশ্য ফেক ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত আম্পায়ারের ওপরই ছেড়ে দেন।
ঘটনার এক সপ্তাহ পর সম্পূর্ণ ভিন্ন মত নিয়ে এলেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কার। ভারতের সাবেক এই ক্রিকেটার স্পোর্টস্টারে নিজের কলামে বলেন, ক্রিকেট আইনে ফেক ফিল্ডিংয়ের ধারাটিই থাকা উচিত নয়।
এ ক্ষেত্রে যুক্তি হিসেবে ব্যাটসম্যানদের বারবার জায়গা বদলের বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি, ‘ক্রিকেট যদি হয় ছলচাতুরীর খেলা, যেখানে ব্যাটসম্যানকে আউট করেত বোলাররা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেন। আবার ব্যাটসম্যানরাও বোলারদের ভ্রান্ত করতে বারবার জায়গা বদল করেন, যাতে ভালোভাবে মারা যায়। তাহলে বল হাতে না থাকলেও ফিল্ডিংয়ের ভান করলে সমস্যা কোথায়?’
ক্রিকেট আইনের ৪১.৫.১ ধারায় বলা আছে, ‘স্ট্রাইকার বল খেলার পর কোনো ফিল্ডার ইচ্ছাকৃতভাবে কথা বা কাজ দ্বারা যেকোনো ব্যাটসম্যানের মনোযোগ সরিয়ে দেওয়ার বা ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করলে সেটি “আনফেয়ার প্লে” বলে বিবেচ্য হবে।’
এ ক্ষেত্রে এমন কিছু হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন আম্পায়াররা। আম্পায়ার যদি মনে করেন, ফিল্ডার ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন, তাহলে ওই বলকে ডেড ঘোষণা করা হবে, সঙ্গে ব্যাটিং দলের স্কোরে ৫টি পেনাল্টি রান যোগ হবে।
গাভাস্কারের মতে, ব্যাটসম্যান, বোলারের মতো ফিল্ডারেরও চাতুরীর আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ থাকা উচিত। ফেক ফিল্ডিংয়ে জরিমানার বিধান উঠিয়ে এটিকে ক্রিকেটেরই অংশ বানিয়ে নেওয়া দরকার বলে মন্তব্য তাঁর, ‘এ ব্যাপারটিকে (ফেক ফিল্ডিং) ক্রিকেটে চালু থাকা চাতুরীর অংশ বিবেচনা করা উচিত।’