বাংলাদেশ, ভারতের বিপক্ষে পারফরম্যান্স দিয়ে আইসিসির মাসসেরার মনোনয়নে রাজা
বাংলাদেশের বিপক্ষে টানা দুটি অপরাজিত শতকে ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি সিরিজ জয়ে, এরপর ভারতের বিপক্ষে আরেকটি শতকে দলকে নিয়ে গিয়েছিলেন জয়ের খুব কাছে। দুর্দান্ত সময় কাটানো সিকান্দার রাজার পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি দিল আইসিসিও। আগস্টে ছেলেদের মাসসেরা ক্রিকেটারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ইংল্যান্ড টেস্ট অধিনায়ক বেন স্টোকস ও নিউজিল্যান্ড অলরাউন্ডার মিচেল স্যান্টনারের সঙ্গে আছেন এ জিম্বাবুইয়ান অলরাউন্ডার। গত মাসে মেয়েদের সেরা ক্রিকেটারের মনোনয়ন পেয়েছেন কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের বেথ মুনি ও তালিয়া ম্যাকগ্রা, রুপাজয়ী ভারতের জেমিমা রদ্রিগজ।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তেমন কিছু করতে না পারলেও রাজা তার আগের দুটি সিরিজে ছিলেন দারুণ ফর্মে। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ৩০৪ রান তাড়ায় চতুর্থ উইকেটে ১৯২ রানের জুটি গড়েন ইনোসেন্ট কাইয়ার সঙ্গে, নিজে ১০৯ বলে ১৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।
পরের ম্যাচে ২৯২ রান তাড়ায় আবার চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে, এবার অধিনায়ক রেজিস চাকাভাকে নিয়ে জিম্বাবুয়েকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন। ওই ম্যাচে ১২৭ বল খেলে অপরাজিত থাকেন ১১৭ রান করে। ৯ বছর পর বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জেতে জিম্বাবুয়ে। ভারতের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতেও জিম্বাবুয়েকে দারুণ এক জয় এনে দিতে হাল ধরেছিলেন রাজা। ২৯০ রান তাড়ায় ৯৫ বলে ১১৫ রানের ইনিংস খেলেন, তবে অন্য প্রান্তে তেমন সহায়তা পাননি। জিম্বাবুয়ে ম্যাচটি হারে ১৩ রানে।
স্টোকস মনোনয়ন পেয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে। সিরিজে পিছিয়ে থাকা ইংল্যান্ড ওই ম্যাচ জেতে ইনিংস ব্যবধানে। প্রথম ইনিংসে ১৫১ রানে গুটিয়ে যায় প্রোটিয়ারা, মিডল অর্ডারে এইডেন মার্করাম ও রেসি ফন ডার ডুসেনের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট পান ইংল্যান্ড অধিনায়ক। দ্বিতীয় দিন শুরুতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে এরপর এগিয়ে নেন স্টোকস, ১০৩ রানের ইনিংসে। দ্বিতীয় ইনিংসে ফন ডার ডুসেন ও কিগান পিটারসেনের গুরুত্বপূর্ণ জুটি ভাঙেন তিনি, দুই ইনিংস মিলিয়ে নেন ৪ উইকেট। ম্যাচসেরাও হন তিনি।
অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দেন স্যান্টনার। তিনি সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে তিনে এসে খেলেন ৪২ বলে ৭৭ রানের অপরাজিত ইনিংস। ফর্মটা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও টেনে আনেন তিনি। প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে স্যান্টনা নেন ৩টি করে উইকেট। প্রথম দুই ওয়ানডেতে কার্যকর ইনিংস খেলার পর শেষ ম্যাচে তিনি নেন ২ উইকেট, হন সিরিজসেরা।
মুনি মনোনয়ন পেয়েছেন কমনওয়েলথ গেমসে ব্যাটিংয়ে দারুণ পারফরম্যান্সে। টুর্নামেন্টে ৪৪.৭৫ গড় ও ১৩৩.৫৮ স্ট্রাইক রেটে ১৭৯ রান করে তিনি হন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ফাইনালে তাঁর ৪১ বলে ৬১ রানের ইনিংসে লড়াই করার মতো সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া। মুনির সতীর্থ ম্যাকগ্রা অবদান রাখেন ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়েও। ফাইনালে করোনা পজিটিভ হওয়ার পরও খেলানো হয় তাঁকে, যদিও তেমন কিছু করতে পারেননি। তবে তিনি টুর্নামেন্টে আগের ম্যাচগুলোতে দুর্দান্ত ছিলেন। ৪২.৬৬ গড় ও ১৪৮.৮৩ স্ট্রাইক রেটে ৫ ম্যাচে ১২৮ রান করেন তিনি, সঙ্গে নেন গুরুত্বপূর্ণ উইকেটও।
ভারতকে ফাইনালে তোলার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় পাঁচে থাকা জেমিমা রদ্রিগজ। বারবাডোজের সঙ্গে তাঁর ৪৬ বলে ৫৬ রানের অপরাজিত ইনিংসে সেমিফাইনালে জায়গা নিশ্চিত হয় ভারতের। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারানো ম্যাচে তিনি খেলেন ৩১ বলে ৪৬ রানের ইনিংস। ফাইনালে একদিকে উইকেট ধরে রেখেছিলেন তিনি, তবে ৩৩ বলে সমান রানের ইনিংসটি শেষ পর্যন্ত যথেষ্ট হয়নি ভারতের।