রশিদ–মুজিবকে বাংলাদেশের সহকারী কোচ তুলনা করলেন ওয়ার্ন-মুরালির সঙ্গে
সকাল থেকেই চট্টগ্রামে বৃষ্টি। বাংলাদেশ দলের অনুশীলনের সময় নির্ধারিত ছিল সকালে। বৃষ্টির কারণে ক্রিকেটারদের কেউই মাঠে আসেননি। কিন্তু ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলন করতে মাঠে এসেছেন দলের সহকারী কোচ নিক পোথাস। সেখানে ঘুরেফিরে এসেছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ঘটে যাওয়া মাঠের বাইরের বিতর্ক আর মাঠের পারফরম্যান্সের বিষয়টি। আফগান স্পিনের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং–সামর্থ্যও বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
পোথাস অবশ্য এত কিছুর মধ্যেও ইতিবাচক। দলের আবহ জানতে চাইলে তিনি ছোট্ট করে উত্তর দিলেন, ‘সব ঠিক আছে। কোনো সমস্যা নেই।’ এরপর ক্রিকেটারদের পেশাদারত্বের বিষয়টি মনে করিয়ে দিলেন, ‘আমরা পেশাদার ক্রিকেটারের কথা বলছি। ওরা জানে, কীভাবে কী করতে হবে। ওদের আমাদের থেকে খুব বেশি প্রেরণার প্রয়োজন হচ্ছে না।’
আফগানিস্তানের স্পিন আক্রমণের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং–ভরাডুবিও পোথাসকে খুব একটা ভাবাচ্ছে না। এই দক্ষিণ আফ্রিকান কোচের যুক্তিটা ছিল এমন, ‘ওদের স্পিন আক্রমণ বিশ্বসেরা, এটাই বাস্তবতা। ওদের তিনজনই অনেক সাদা বলের ক্রিকেট খেলেছে। এমন বোলিং আক্রমণ যেকোনো অধিনায়কের স্বপ্ন।
কৌশলগতভাবে ওরা আমাদের যে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে, সেটা বরং আমাদের জন্য সুবিধাই। এটা আমাদের খেলায় উন্নতি আনবে। এই মানের স্পিন খেলতে পারলে সব ধরনের স্পিন খেলতে পারবেন।’
আফগান স্পিনার মুজিব উর রেহমানের কথাটা আলাদা করে বললেন পোথাস। বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেওয়ার আগে মিডলসেক্স কাউন্টি দলের কোচ ছিলেন তিনি। তখন মিডলসেক্সের বিদেশি ক্রিকেটার ছিলেন মুজিব। আজ মুজিবের কোচ হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতাও ভাগাভাগি করেছেন পোথাস, ‘আমরা কেন ওদের বোলিং বুঝতে পারছি না, প্রশ্নটা এটা নয়। প্রশ্ন হচ্ছে, ওদের বোলিং কেন পুরো বিশ্বই বুঝতে পারছে না। বিশ্বের সব দলেরই ওদের বোলিং বুঝতে কষ্ট হয়। মিডলসেক্সে আমি মুজিবকে পেয়েছি। উইকেটকিপারের জায়গা থেকে ওর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও আমি বুঝতে পারছিলাম না, সে কী করছে। সে জন্যই ওরা বিশ্বসেরা।’
আফগান স্পিনারদের শেন ওয়ার্ন, মুত্তিয়া মুরালিধরনের সঙ্গেও তুলনা করেছেন বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ। তাঁর কথা, ‘ওয়ার্ন কিংবা মুরালিধরনের বোলিং কি কেউ বুঝতে পারত? ওরা বিশ্বসেরা বোলার ছিল। সে জন্যই বিশ্বের প্রতিটি লিগ ওদের মতো স্পিনারদের পেছনে এত টাকা খরচ করে। প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা এখন কী করব? কীভাবে নিজেদের আরও উন্নতি করব?’
বাংলাদেশের সামনে এখন ধবলধোলাই এড়ানোর চ্যালেঞ্জ। কাল সিরিজের শেষ ম্যাচ তাদের জিততেই হবে। সে জন্য বাংলাদেশকে খুঁজতে হবে পোথাসের প্রশ্নের উত্তর। আর সেটা সম্ভব ২২ গজেই, আফগানদের স্পিন খেলে। একটা পর্যায়ে এসে আফগান স্পিনরহস্য ভেদ করবেন বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানরা, পোথাসের এমনই প্রত্যাশা। বাংলাদেশ দলের সমর্থকেরা চাইবেন, সেটা হোক অক্টোবরে অনুষ্ঠেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগেই। কারণ, এই আফগানিস্তানের বিপক্ষেই যে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ!