অধিনায়ক নাজমুলের চাওয়া: টেস্টে মানসিকতা, ওয়ানডেতে ট্রফি আর টি-টোয়েন্টিতে উন্নতি
নাজমুল হোসেন তিন সংস্করণের ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব পেয়েছেন তিন সপ্তাহ হয়ে গেল। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর অবশ্য সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হননি এই বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।
আজ সকালে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে হয়ে গেল সেই আনুষ্ঠানিকতা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগের আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বেশির ভাগ প্রশ্নই হলো তাঁর অধিনায়কত্বের ভাবনা ও লক্ষ্য নিয়ে।
এর আগে অন্তর্বর্তীকালীন অধিনায়ক হিসেবে তিন সংস্করণেই নেতৃত্ব দিয়েছেন নাজমুল। তাঁর নেতৃত্বে দল কেমন করে, তা মোটামুটি সবারই জানা। তবে এখন নাজমুলকে খণ্ডকালীন চিন্তা করলে চলবে না। তাঁকে ভাবতে হবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের দীর্ঘমেয়াদি উন্নতি নিয়ে। তা তিন সংস্করণের ক্রিকেট নিয়ে নাজমুলের ভাবনাটা কী?
আজ সংবাদ সম্মেলনে এ প্রশ্ন করা হলে টেস্ট ক্রিকেটের উন্নতির বিষয়টি নাজমুলের উত্তরে গুরুত্ব পেল, ‘আমার কাছে মনে হয় না টেস্ট ক্রিকেটে খুব বেশি উন্নতি করেছি। আগে যে অবস্থায় ছিলাম, তার চেয়ে ভালো খেলা শুরু করেছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে চাইব যে ঘরের মাঠে আমরা যে ম্যাচগুলো খেলব, বেশির ভাগ ম্যাচ যেন আমরা জিততে পারি।’
ক্রিকেটারদের টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে ভাবনায়ও বদল চান নতুন অধিনায়ক, ‘টেস্ট খেলার যে গুরুত্ব, সেটা যেন সবার মধ্যে আরও ভালোভাবে বিল্ডআপ হয়। আমরা যখন দেশের বাইর যাব, বাইরের দলগুলোর সঙ্গে যেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি। এটা একটা দিক।’
ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশকে একটা শিরোপা এনে দেওয়ার স্বপ্ন দেখেন নাজমুল। তাঁর কথা, ‘ওয়ানডে তো আমরা ভালো করছি। তবে দল হিসেবে বড় কোনো টুর্নামেন্টে আমরা পারিনি। এই পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাব যে আমরা কীভাবে বড় টুর্নামেন্টে ভালো করতে পারি বা দেশের জন্য একটা ট্রফি নিয়ে আসতে পারি।’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নাজমুল পাচ্ছেন সাকিব আল হাসানের গড়ে দেওয়া ধারাবাহিক একটি দল। গত বছর ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডকে ধবলধোলাইয়ের পর নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ড্র করেছে বাংলাদেশ। ২০ ওভারের খেলায় গত বছরের সেই ধারা বজায় রাখাই হবে বিরাট সাফল্য।
তবে নাজমুল চান আরেকটু উন্নতি, ‘টি-টোয়েন্টিতে আমাদের গত বছরটা খুব ভালো কেটেছে। আমার মনে হয়, এ ক্ষেত্রে আগে থেকে অনেক উন্নতি হয়েছে। আরও কিছু জায়গায় উন্নতি করলে দেখা যাবে যে আমরা যেকোনো দলের বিপক্ষে যেকোনো কন্ডিশনে ভালো করছি। যখন খেলাগুলো শুরু হবে, তখন পরিকল্পনাগুলো আরও পরিষ্কার হবে। তবে এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা তিন সংস্করণে যে খেলোয়াড়েরা খেলব, শুধু ১৫ জন নয়, জাতীয় দলের আশপাশে যে ৩০-৩৫ জন আছে, প্রত্যেকের কীভাবে যার যার জায়গা থেকে দলের জন্য উন্নতি করে আসতে পারি।’
দেশকে তিন সংস্করণে নেতৃত্ব দেওয়ার গর্বের অনুভূতিটাও নাজমুলের কথায় বোঝা যাচ্ছিল, ‘বিষয়টা অনেক আনন্দের। এটা আমার জন্য, আমার পরিবারের জন্য অনেক গর্বের। প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা। ওই সুযোগটা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড করে দিয়েছে। তাদের ধন্যবাদ জানাই। খুবই আনন্দিত।’
অধিনায়কত্বের কাজটা কখনোই সহজ নয়। বাংলাদেশের দলের নেতৃত্ব দেওয়াটা অবশ্য একটু বেশিই কঠিন। তবে নাজমুল কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যেও খুঁজে পাচ্ছেন ইতিবাচকতা, ‘আমার মনে হয়, কাজটা আমার জন্য এখন আরও...অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং। তবে পরিকল্পনা করা একটু সহজ হবে। প্রত্যেক খেলোয়াড় সম্পর্কে জানতে হবে। যদিও আমরা সবাই খেলার মধ্যেই থাকি, সবার সঙ্গে দেখা হয়, কথা হয়। আমার মনে হয় পরিকল্পনা করার দিক থেকে একটু হলেও সুবিধা হবে। তিন সংস্করণেই দায়িত্বে আছি। আশা করছি সামনে ভালো কিছুই হবে।’
বাংলাদেশ দলের সমর্থকেরাও নিশ্চয়ই তেমন আশাই করছেন।