ফাইনালের সকালেও আহমেদাবাদের পিচ নিয়ে ‘চিন্তিত’ ছিলেন অস্ট্রেলিয়ানরা
ফাইনালে আহমেদাবাদের পিচ নিয়ে ‘চিন্তিত’ ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড়েরা, এমন কথাই জানিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং। মন্থর গতি ও নিচু বাউন্সের উইকেটে শেষ পর্যন্ত ভারতকে ফাইনালে হারিয়ে অবশ্য রেকর্ড ষষ্ঠ শিরোপা জিতেছে অস্ট্রেলিয়াই।
সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের ম্যাচের আগে পিচ বদলে ফেলা হয়েছে, সংবাদমাধ্যমে এমন প্রতিবেদন আসার পর থেকেই আলোচনায় ছিল ফাইনালের পিচও। ম্যাচের আগের দিন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে ছবিও তুলে রাখতে দেখা যায় ফাইনালে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের পিচের। সে পিচ স্পিনারদের সহায়তা করবে, মন্থর উইকেট ভারতের পক্ষেই যাবে—ভাবা হচ্ছিল এমন।
কিন্তু টসে জিতে আগে ফিল্ডিং করার সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে শুরু করে কন্ডিশন দারুণভাবে কাজে লাগানো—ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া ছিল পরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়নে দুর্দান্ত। তবে ম্যাচ শেষে অস্ট্রেলিয়ানদের পিচ নিয়ে চিন্তার কথা ঠিকই জানিয়েছেন পন্টিং।
ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করা ২০০৩ ও ২০০৭ সালের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক পন্টিং আইসিসির ম্যাচ সম্প্রচারে বলেন, ‘সত্যি বলতে কি, কয়েকজনের (অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার) সঙ্গে সকালে কথা বলেছি, তারা পিচ নিয়ে চিন্তিত ছিল। তাদের বলেছি, “পিচ নিয়ে চিন্তা করো না। এটা ক্রিকেট পিচ, ২২ গজ দীর্ঘ, নেমে নিজের সেরাটি খেলো। তাহলেই জিতবে। তারা তেমন কিছুই করতে পেরেছে।’
আহমেদাবাদে লাখখানেক দর্শককে স্তব্ধ করে দিয়েই শিরোপা জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। অন্য জয়গুলোর সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে পন্টিং বলেছেন, ‘ওপরের দিকেই থাকবে (এ পারফরম্যান্স)। কাচের দেয়ালের এ পাশ থেকে দেখাটা সব সময়ই সহজ। কিন্তু এই অস্ট্রেলিয়ান দলের কী দারুণ পারফরম্যান্স! তারা যেভাবে বোলিংয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে, তাদের মাঠের শরীরী ভাষা, এনার্জি—ভারত আসলে সামলাতে পারেনি। অস্ট্রেলিয়ার আসলে এ জয় প্রাপ্য।’
এ বছর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে অস্ট্রেলিয়া, এরপর ইংল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ ড্র করে ধরে রেখেছে অ্যাশেজ। এরপর ভারতের মাটিতে জিতল বিশ্বকাপ। সবকিছুই হয়েছে ৬ মাসের কম সময়ের মধ্যে। উত্তরসূরিদের বেশ প্রশংসাই করেছেন পন্টিং, ‘গত এক বছর দারুণ ছিল অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের জন্য। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে, অ্যাশেজ (ধরে রেখেছে), এখানে এত তাড়াতাড়ি এসে বিশ্বকাপ জেতা আসলে এই দলের খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফদের সম্বন্ধে অনেক কিছু বলে দেয়।’
এবারের ফাইনালে ভারত ছিল পরিষ্কার ফেবারিট, অস্ট্রেলিয়াকে ধরা হচ্ছিল ‘আন্ডারডগ’। কিন্তু এমন মঞ্চে গিয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ভারতকে ম্লান করে দিয়েছে প্যাট কামিন্সের দল। অস্ট্রেলিয়ানদের এমন সাফল্যের রহস্য হিসেবে পন্টিং বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট আসলে বড় মুহূর্ত, মঞ্চ এসব ভালোবাসে—এসবে ভীত হয় না। তারা সুযোগ আসবে বলে অপেক্ষা করে থাকে না, সুযোগ নিতে সামনে এগিয়ে যায়। এ কারণেই অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দল বড় মঞ্চে এত সাফল্য পেয়েছে।’