বাংলাদেশ চায় ২৫০ রানের লক্ষ্য, শ্রীলঙ্কা তার চেয়েও বেশি
সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ২১১ রানে এগিয়ে আছে শ্রীলঙ্কা। হাতে আছে আরও পাঁচ উইকেট। ম্যাচের এমন অবস্থায় বাংলাদেশ দলের লক্ষ্য কী হওয়া উচিত, তা অনুমান করতে ক্রিকেট–বিশেষজ্ঞ হতে হয় না। শ্রীলঙ্কাকে যত অল্প রানে থামানো যায়, নাজমুলদের জন্য তত ভালো। তা সেই সংখ্যাটা কত?
দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে আসা ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্পের মুখেই শুনুন লক্ষ্যটা, ‘ওরা এখন ২১১ রানে এগিয়ে আছে। আমরা যদি আগামীকাল সকালে দ্রুত কিছু উইকেট নিতে পারি, তাহলে আমাদের চতুর্থ ইনিংসে ২৫০ রানের মতো তাড়া করতে হবে।’
শ্রীলঙ্কা অবশ্য আরেকটু বেশি রানে নিরাপত্তা খুঁজছে। দলটির পেস বোলিং কোচ দর্শনা গেমগে সংবাদ সম্মেলনে এসে বলেন, ‘উইকেটে কিছুটা অসম বাউন্স আছে। এখানে রান করা সহজ নয়। আমরা যদি লিডটাকে ৩০০ রানে নিতে পারি বা তার চেয়েও বেশি, তাহলে আমরা এগিয়ে থাকব।’
সিলেট টেস্টে শ্রীলঙ্কার এই এগিয়ে থাকার দায়টা অবশ্য বাংলাদেশ দলেরই। আরও নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানদের। শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে ২৮০ রান তোলার পর বাংলাদেশ আটকে গেছে ১৮৮ রানে, তা–ও শেষ দুই উইকেটে ৪১ রান না উঠলে ১৫০–ই হয় না সংগ্রহ। ব্যাটিং কোচ হেম্পও তাই বললেন, ‘আমরা অবশ্যই হতাশ। কারণ, আমরা ৫১ ওভারের বেশি ব্যাটিং করতে পারিনি।’
বাংলাদেশ দলের এমন ব্যাটিং দুরবস্থার পেছনে যে নিজেদের ব্যর্থতাই মূল কারণ, সেটিও উঠে এসেছে হেম্পের কথায়, ‘সব ব্যাটসম্যানই বলেছে এই উইকেটটা ভালো। ভালো শট খেললে এখানে রান আসবে। দিনের শেষ সেশনে কিছু বল নিচু হয়েছে। তবে সেগুলো স্টাম্পের বাইরের বল ছিল। এর বাইরে আমার মনে হয় না, আমরা ঠিকমতো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।’
বিপিএলের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ, পাশাপাশি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ—টানা সাদা বলের ক্রিকেট ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা কারণ হতে পারে কি না, এমন প্রশ্ন আছে। হেম্প অবশ্য তা মনে করছেন না, ‘আপনি বলতে পারেন। তবে এটা মানসিকতার ব্যাপার। আমার এটাকে খুব একটা সমস্যা মনে হয় না। খেলোয়াড়েরা এসবের সঙ্গে ভালোই মানিয়ে নেয়।’
অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমের না থাকাও বাংলাদেশকে ভুগিয়েছে। এ প্রসঙ্গে হেম্পকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছেন, ‘অভিজ্ঞতা হারালে যেকোনো দলকেই এর জন্য ভুগতে হয়। তবে এটাও ঠিক, যারা দলে নতুন আসছে, এটা তাদের জন্য সুযোগ।’ উদাহরণ দিতে গিয়ে শাহাদাত হোসেনের কথা টানলেন হেম্প, ‘দিপুর পায়ের কাজ দারুণ ছিল। ধরে খেলা আর মেরে খেলার মধ্যে আক্রমণাত্মক মানসিকতা ছিল। এটা আমাদের জন্য ভালো লক্ষণ। আপনাকে অভিজ্ঞদের বিদায়ের পর কী হবে, সেটার প্রস্তুতিও নিতে হবে। এটা ঠিক যে আমরা মুশির অভিজ্ঞতা হারিয়ে হতাশ। তবে আপনাকে সামনে তাকাতে হবে।’
বাংলাদেশ দলও সামনেই তাকাচ্ছে। আগামীকাল সকালের সেশনেই শ্রীলঙ্কাকে দ্রুত অলআউট করতে চান নাজমুল-মিরাজরা। এরপর চতুর্থ ইনিংসের রান তাড়ায় ব্যাটিং দলের কাছে কোচ হেম্পের একটাই প্রত্যাশা, ‘আমাদের ওদের বোলিংয়ে রান করতে হবে। আমরা হয়তো ক্রিজে একটু বেশিই আটকে আছি। একটু দূরের বল খেলছি, যা আমাদের ডিফেন্ড করা উচিত।’