পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ যেন ভোজবাজি! যেদিন দুই ওপেনার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান ভালো করবেন, মনে হবে এ ব্যাটিং লাইনআপ কতই না শক্তিশালী। আর যেদিন এ দুজনের কারও ব্যাটই হাসবে না, যেন বাতাসে মিলিয়ে যাবে সেই শক্তি!
ত্রিদেশীয় সিরিজে আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ঘটনাটাই ঘটেছে। বাবর আর রিজওয়ানের ব্যাট হাসেনি, দাঁড়াতে পারেনি পাকিস্তানের ভঙ্গুর মিডল অর্ডারও। ফল, ২০ ওভারে ৭ উইকেটে মাত্র ১৩০ রানই তুলতে পেরেছে পাকিস্তান। ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২৩ বল হাতে রেখে ৯ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে নিউজিল্যান্ড।
ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ে পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর ২২ রান করে আউট হয়েছিলেন। সেই ম্যাচে পাকিস্তানের ৫ উইকেটে ১৬৭ রানের ইনিংসে রিজওয়ান বড় ভূমিকা রাখেন ৫০ বলে অপরাজিত ৭৮ রান করে। গত শনিবার পরের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে রান তাড়া করতে নেমে রিজওয়ান মাত্র ৪ রান করেছিলেন। কিন্তু বাবরের ৫৩ বলে অপরাজিত ৭৯ রানের ইনিংসে পাকিস্তান ম্যাচ জেতে ৬ উইকেটে।
যেদিন বাবার–রিজওয়ান দুজনেই ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠে, সেদিন কী হয় এর উদাহরণ অনেকবারই দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। গত বছরের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে এ দুজনের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ১০ উইকেটে জিতেছিল পাকিস্তান। সেই ম্যাচে বাবর–রিজওয়ানের অবিচ্ছিন্ন জুটিটি ছিল ১৫২ রানের। এরপর গত মাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তান ১০ উইকেটে জিতেছে ১৯৯ রান তাড়া করে। সেই ম্যাচে বাবর অপরাজিত ছিলেন ৬৬ বলে ১১০ রান করে। আর রিজওয়ান করেছেন ৫১ বলে অপরাজিত ৮৮ রান।
আজ হ্যাগলি ওভালে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি স্থায়ী হয় মাত্র ৪.২ ওভার। ১৭ বলে ১৬ রান করে আউট হয়ে যান রিজওয়ান। এরপর দ্রুতই আউট হয়ে ফেরেন শান মাসুদ ও শাদাব খান। বাবর এক প্রান্ত আগলে রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু অফ স্পিনার মাইকেল ব্রেসওয়েলের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। বাবর যখন ফেরেন, পাকিস্তানের রান ৪ উইকেটে ৬৫। তিনি নিজে করেছেন ২৩ বলে ২১ রান।
বাবর–রিজওয়ান চলে যাওয়ার পর আর সেভাবে কেউ হাল ধরতে পারেননি। বরাবরের মতোই পাকিস্তানের মিডল অর্ডার ব্যর্থ হয়েছে আবার। মিডল অর্ডারে ইফতিখার আহমেদ ২৭ বলে ৩ চারে করেছেন ২৭ রান। আর শেষ দিকে আসিফ আলী ঝড় তোলার চেষ্টা করেও সফল হনননি। ২০ বলে অপরাজিত ২৫ রানের ইনিংসে মারতে পেরেছেন ৩টি চার।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন টিম সাউদি, মিচেল স্যান্টনার ও ব্রেসওয়েল। ইশ সোধি নিয়েছেন একটি উইকেট।
রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের বোলারদের ওপর শুরু থেকেই চড়াও হন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার ফিন অ্যালেন ও ডেভন কনওয়ে। অসুস্থা কাটিয়ে এ ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফেরা নাসিম শাহ তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেননি। ৩.১ ওভার বল করে ১৮ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন তিনি।
কিউই ওপেনার অ্যালেন ৪২ বলে ১ চার ও ৬ ছয়ে ৬২ রান করে আউট হয়েছেন। তাঁর উইকেটটি নিয়েছেন শাদাব। আরেক ওপেনার কনওয়ে ৪৬ বলে ৫ চারে ৪৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামা অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন করেছেন অপরাজিত ৯ রান।