দুই শতক আর এক অর্ধশতকে ৩৬৮ রান, ৩ উইকেট। দল জিতেছে। আপনি জিতেছেন ম্যাচসেরার ওই পুরস্কার। পুরো সিরিজে আপনার ও দলের পারফরম্যান্স কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
কামিন্দু মেন্ডিস: আমার দুই বছর আগে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল। কিন্তু দলে নিয়মিত হতে পারিনি। এই সিরিজটা আমার জন্য ভালো কেটেছে। দলের সবাই ভালো করেছে। বিশেষ করে ফাস্ট বোলারদের কথা আলাদা করে বলতে হয়। অনেক গরম এখন (হাসি)। তবে বেশ উপভোগ করেছি। খুব ভালো অভিজ্ঞতা ছিল আমার জন্য।
সিলেট টেস্টে ফিরে যাই। ৫৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর পরও আপনি ক্রিজে এসে প্রতি–আক্রমণে যে শতক করলেন, সেটা পুরো সিরিজের ছবিটাই পাল্টে দেয়। সেটি ছিল আপনার প্রথম টেস্ট শতকও। ওই অভিজ্ঞতাটা কেমন ছিল?
মেন্ডিস: আমি সিলেটের দুই ইনিংস নিয়েই খুবই সন্তুষ্ট। ৫০ রানে আমাদের ৫ উইকেট পড়ে যায় প্রথম ইনিংসে। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সহজ ছিল না। অধিনায়ককে কৃতিত্ব দিতে হয়। তিনি আমাকে অনেক সমর্থন দিয়েছেন, সাহস দিয়েছেন ওই অবস্থায়ও নিজেদের সহজাত খেলাটা খেলার জন্য। টেস্ট ক্রিকেটে এমন পরিস্থিতি আসবেই। ধস নামতেই পারে। তবে আপনাকে দলকে ভালো জায়গায় নিয়ে আসতে হবে।
আক্রমণাত্মক ব্যাটিং নিশ্চয়ই আপনার সহজাত?
মেন্ডিস: সিলেটে আমার দুটি ইনিংস খেয়াল করলে দেখবেন, আমি প্রথম শতকটি করেছি ১২৮ বলে। পরের ইনিংসে আমি ১৬৪ রান করেছি ২৩৭ বলে। দুটি কিন্তু দুই রকম। আপনাকে টেস্ট ক্রিকেটে দুই ধরনের ব্যাটিংই করতে হবে। ম্যাচের অবস্থা বুঝে খেলতে হবে। প্রথম ইনিংসে অধিনায়ক ভেবেছিল, আমাদের এই মুহূর্তে ইতিবাচক ক্রিকেট খেলা উচিত। আমরা সেটাই করেছি।
শতক চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসেও হতে পারত। ৯২ রানে অপরাজিত ছিলেন। তিনটি ইনিংসেই আপনি নিচের দিকের ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে কৌশলী ব্যাটিং করেছেন...
মেন্ডিস: আপনি যখন সাত-আটে খেলবেন, নিচের দিকের ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে খেলতে হবে। এটাই স্বাভাবিক। তখন আপনাকে কিছু মনস্তাত্ত্বিক খেলা খেলতে হয় প্রতিপক্ষের সঙ্গে। ঝুঁকি নিতে হয়। একই সঙ্গে নিজ দলের নিচের দিকের ব্যাটসম্যানদের ওপর আস্থাও রাখতে হয়। আমি সেটাই করেছি। আমার ইনিংস দীর্ঘ হওয়ার পেছনে ওদেরও অবদান আছে।
বোলিং করে ৩ উইকেট নিশ্চয়ই উপভোগ করেছেন?
মেন্ডিস: হ্যাঁ, বোলিং নিয়ে স্পিন কোচের সঙ্গে কাজ করছি। এখনো মনে হয় অনেক উন্নতি দরকার।
আপনি বাংলাদেশেই ২০১৬ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দুই হাতে বোলিং করে আলোচনায় এসেছিলেন। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও আপনাকে সব্যসাচী বোলারের ভূমিকায় দেখা গেছে? টেস্টেও কি এমন কিছু দেখা যাবে?
মেন্ডিস: হ্যাঁ, আমি পারব। জানেন তো, টেস্ট ক্রিকেটে আপনাকে শৃঙ্খলা বজায় রেখে বোলিং করতে হয়। এই টেস্টে ডান হাতে বোলিং করলাম। আমি আসলে টেস্টেও দুই হাতে বোলিং করতে প্রস্তুত।
২০১৬ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে খেলেছিলেন বাংলাদেশ দলের মেহেদী হাসান মিরাজ, নাজমুল হোসেন ও জাকির হাসান। জাতীয় দলে এখন সেই নাজমুলরাই আপনাদের প্রতিপক্ষ।
মেন্ডিস: হ্যাঁ, ভালো স্মৃতি। মিরাজ, আমি, শান্ত, হাসারাঙ্গা, আসালাঙ্কা…সবাই ওই বিশ্বকাপে খেলেছিলাম। আসালাঙ্কা আমাদের অধিনায়ক ছিল। লাহিরু কুমারা, আসিতা ফার্নান্ডোও ছিল ওই বিশ্বকাপে। আমাদের সামনে আরও সময় পড়ে আছে। নিশ্চয়ই সবাই যে যার দেশের জন্য ভালো করে এগিয়ে যেতে চাইবে।
নিজেদের মধ্যে নিশ্চয়ই স্লেজিং চলতে থাকে।
মেন্ডিস: ক্রিকেট খেলায় এমন হবেই। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়। তবে এমন কিছু হচ্ছে না যেটা মাঠের বাইরেও আমাদের সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে।