সেই ‘কুকীর্তি’র প্ররোচনায় শোয়েব, বাস্তবায়নে আফ্রিদি
মাঠে নেমেই বড় বড় শটে ম্যাচের লাগাম দলের নাগালে নিয়ে আসার সুনাম ছিল তাঁর। ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বারবার অবসর নেওয়ার দুর্নামও। এর সঙ্গে নানা কাণ্ড–কীর্তির কারণেও আলোচনায় থাকতেন নিয়মিত। পাকিস্তান ক্রিকেটে এমনই বর্ণিল চরিত্র শহিদ আফ্রিদি।
শহিদ আফ্রিদি সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। তবে শহিদ আফ্রিদির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ক্যারিয়ার থমকে যেতে পারত আরও বহু আগে, যদি নিজেকে সংশোধন না করে নিতেন।
২০০৫ সালে পাকিস্তান–ইংল্যান্ডের ফয়সালাবাদ টেস্টের দ্বিতীয় দিনে পিচ টেম্পারিং কাণ্ডে জড়িয়েছিলেন আফ্রিদি। তাঁর সঙ্গে জড়িত ছিলেন শোয়েব মালিক।
ঘটনার ১৭ বছর পর পিচ টেম্পারিংয়ের সেই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন আফ্রিদি।
জানিয়েছেন সেদিনের ঘটনায় পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে ছিলেন তিনি নিজে, মালিক ছিলেন উৎসাহ ও প্ররোচনায়।
সামা টিভির অনুষ্ঠানে এসে সেদিনের স্মৃতিচারণা করে আফ্রিদি বলেন, ‘ফয়সালাবাদের ওই ম্যাচটায় বল টার্ন করছিল না, সুইংও করছিল না। খুবই বিরক্তিকর লাগছিল। আমরা পুরো শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েও উইকেট ফেলতে পারছিলাম না। তারপর হঠাৎ মাঠের বাইরে একটা সিলিন্ডার গ্যাস বিস্ফোরণ ঘটল। সবাই যখন ওদিকে মনোযোগী, আমি তখন মালিককে বললাম, আমার মন চাচ্ছে পিচে পাড়া দিই, তাহলে বল টার্ন করবে।’
সবার মনোযোগ মাঠের বাইরের দিকে হওয়ায় সুযোগ কাজে লাগাতে প্ররোচনা দেন মালিকও, ‘মালিক বলল, করে ফেলো। এখন কেউ দেখবে না। তারপর আমি সেটাই (টেম্পারিং) করলাম। এরপর তো ইতিহাস।’
ইতিহাস বলতে টেম্পারিংয়ের দায়ে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা। পিসিবি তাঁকে এক টেস্ট আর দুই ওয়ানডের জন্য নিষিদ্ধ করে। পাশাপাশি কঠোর সতর্কবার্তায় এ–ও বলে দেওয়া হয়েছিল যে একই কাণ্ড ভবিষ্যতে করলে তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়বে।
ভুল বুঝতে পেরে একই ভুল পরবর্তী সময় করার দুঃসাহস করেননি তিনি। এখনো সেই ঘটনায় অনুতপ্তও তিনি, ‘এখন যখন পেছন ফিরে তাকাই, বুঝতে পারি, ভুল করেছি সেদিন।’
ফয়সালাবাদের সেই ম্যাচটি ড্র হয়েছিল। পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে ৪৬২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৬৮ রান তুলেছিল। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৪৪৬ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ১৬৪ রান তুললে পঞ্চম দিনের খেলা শেষ হয়ে যায়।
আফ্রিদি প্রথম ইনিংসে ৮৫ বলে ৯২ রান তোলার পর দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথম বলেই অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের বলে বোল্ড হয়েছিলেন।