‘পরাবাস্তব’ সময়ে স্মরণীয় বাংলাদেশে রবীন্দ্র, অপেক্ষা টেস্টে ফেরার
বাংলাদেশ রাচিন রবীন্দ্রর জন্য স্মরণীয়ই। ২০২১ সালে এখানেই আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছিল তাঁর, বিশ্বকাপের আগে মিরপুরে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে। ২০২২ সালে ৩ টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি খেলেছিলেন মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে, সেবারও প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ। স্মরণীয় এক বিশ্বকাপ কাটিয়ে এবার বাংলাদেশে টেস্টে ফেরার অপেক্ষায় নিউজিল্যান্ডের বাঁহাতি ব্যাটিং অলরাউন্ডার। গত কয়েক মাসকে ‘পরাবাস্তব’ উল্লেখ করা রবীন্দ্র বলছেন, ক্যারিয়ারের এ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে নিজেকে সৌভাগ্যবানই ভাবছেন তিনি।
সিলেটে ২৮ নভেম্বর শুরু হচ্ছে প্রথম টেস্ট। এ ম্যাচ দিয়ে ৫ বছর পর টেস্ট ফিরছে সিলেটে। যে ম্যাচ হতে পারে রবীন্দ্রর লাল বলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরাও। নিউজিল্যান্ডের হয়ে টপ অর্ডারে ব্যাটিং করে স্মরণীয় এক বিশ্বকাপ কাটিয়ে আসা রবীন্দ্র গত কয়েক মাসের দিকে ফিরে তাকিয়ে বলেছেন, ‘হ্যাঁ, আমার মনে হয়, বেশ পরাবাস্তব একটা ব্যাপার। আমার মনে হয়, সবকিছু দ্রুত ঘটে গেছে এবং এ মুহূর্তে এখানে থাকতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মন করছি। দেখুন, এটা আসলে আমাদের দলীয় আবহের সপক্ষেই কথা বলে, (যে কারণে) আমি এসে মুক্তভাবে খেলতে পেরেছি, সময় উপভোগ করেছি।’
এরপর রবীন্দ্র যোগ করেন, ‘সময়টা উপভোগ করছি, যারা অনেক দিন ধরে আছে তাদের কাছ থেকে শিখছি। ফলে সবার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলা (শুরু) আবার। আশা করি, আমি তাদের কাছ থেকে শিখতে পারব।’
বাংলাদেশে নিউজিল্যান্ড এসেছে বেশ কয়েকজন স্পিনার নিয়েই। রবীন্দ্র ছাড়াও মিচেল স্যান্টনার, ইশ সোধির সঙ্গে আছেন এজাজ প্যাটেল ও গ্লেন ফিলিপস। শেষ পর্যন্ত রবীন্দ্র একাদশে থাকবেন কি না, সেটির জন্য অপেক্ষা করতেই হচ্ছে। তবে দলে থাকতে পেরেই খুশি এই ২৪ বছর বয়সী। টেস্টে ফেরার সম্ভাবনার রোমাঞ্চ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নিশ্চিতভাবেই (রোমাঞ্চিত)। আমার মনে হয়, টেস্ট হচ্ছে ক্রিকেটের চূড়া। আর নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলার সুযোগ পাওয়া, বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে—খুবই বিশেষ কিছু। এমনকি দলের সঙ্গে শুধু সম্পৃক্ত থাকার ব্যাপারটিও। দুই বছর আগে টেস্ট ক্রিকেটে নিজের অভিজ্ঞতা দারুণ লেগেছে। এখন আমার খেলা কতটা বদলেছে এবং দলের সঙ্গে আবার কীভাবে যুক্ত হতে পারি, সেটি দেখার সুযোগ পেয়ে রোমাঞ্চিত।’
আপাতত তাই শেখাটাই বড় রবীন্দ্রর কাছে, ‘আমাদের স্পিন বিভাগ বেশ শক্তিশালী, জ্যাজি (এজাজ), স্যান্টনার, ইশ ও গ্লেন ফিলিপস। আমার চেষ্টা থাকবে তাদের কাছ থেকে ভালোভাবে শেখা, সোধি ও জ্যাজির কাছে। যাদের এখানে অনেক অভিজ্ঞতা আছে। বোঝার চেষ্টা করা তারা কোনটি ভালোভাবে করে, তবে সেটি নিজের মতো করেই করা। আমার মনে হয়, আমরা সবাই নিজেদের দিক দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বোলার, ফলে স্পিন আক্রমণে একটু ভারসাম্য থাকাটা দারুণ।’
স্বাভাবিকভাবেই রবীন্দ্রর নিজেরও অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশে খেলার। সে সিরিজের দিকে ফিরে তাকিয়ে তিনি বলেছেন, ‘হ্যাঁ, ২০২১ সালের ওই উইকেটগুলো ছিল ইন্টারেস্টিং। ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ কঠিন ছিল বলেই মনে হয়, কিন্তু বোলিংয়ে মজা ছিল। আমার মনে হয়, এখানকার স্পিনাররা আমাদের দেশের চেয়ে তুলনামূলক একটু দ্রুতগতির। স্পিনারদের জন্য একটু বেশি সহায়তা আছে, ফলে আপনি যদি একটা নির্দিষ্ট অঞ্চলে বল ফেলতে পারেন একটু গতি বাড়িয়ে, আশা করা যায়, আপনি সাফল্য পাবেন।’
একসময় বাংলাদেশের হয়ে কাজ করা সাবেক পাকিস্তানি অফ স্পিনার সাকলায়েন মুশতাক এবার কাজ করছেন নিউজিল্যান্ডের হয়ে। তাঁর কাছ থেকেও শেখার কথা জানালেন রবীন্দ্র, ‘হ্যাঁ, সাকির (প্রভাব) অনেক। তার সঙ্গে অল্প কিছু কাজ করেছি, অনেক কিছু করার আছে। এপ্রিল-মে মাসে পাকিস্তান সিরিজে শুধু আমাকে না, অনেক স্পিনারকেই সহায়তা করেছিল। আবার তার সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে রোমাঞ্চিত—ক্রিকেট, বোলিং, জীবন নিয়ে কথা বলতে। সে অনেক জ্ঞান বিলাতে পারে, শুধু মাঠে না মাঠের বাইরেও। ফলে এটা দারুণভাবে অনূদিত হয়। তার আশপাশে থাকতে মুখিয়ে আছি।’