২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ভারতের সাবেক অধিনায়ক বিষেণ সিং বেদি মারা গেছেন

২০০৩ সালে একটি অনুষ্ঠানে ভারতের সাবেক পেসার আশীষ নেহরার সঙ্গে বিষেণ সিং বেদি (বাঁয়ে)এএফপি

ভারতের সাবেক অধিনায়ক ও ইতিহাসের অন্যতম সেরা বাঁহাতি স্পিনার বিষেণ সিং বেদি মারা গেছেন। দিল্লিতে ৭৭ বছর বয়সে তিনি মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড, বিসিসিআই।

গত দুই বছরে বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচারের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে বিষেণকে। গত মাসেও একটি অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছিল। মৃত্যুর সময় স্ত্রী অঞ্জু, দুই সন্তান নেহা ও অঙ্গদকে রেখে গেছেন বেদি।

ভারতের হয়ে ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৯ সালের মধ্যে ৬৭টি টেস্ট ও ১০টি ওয়ানডে খেলেছিলেন বেদি। অবসর নেওয়ার সময় ২৬৬টি উইকেট নিয়ে টেস্টে ভারতের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন। এরাপল্লি প্রসন্ন, শ্রীনিবাস ভেঙ্কটরাঘবন, ভগবত চন্দ্রশেখরের সঙ্গে বেদির ‘স্পিন চতুষ্টয়’ ছিল বিখ্যাত। সত্তরের দশকে ভারতের অন্যতম বড় অস্ত্র ছিল ওই স্পিন চতুষ্টয়।

১৯৬৭ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল বেদির। ‘টাইগার’ নামে বিখ্যাত মনসুর আলী খান পতৌদির অধিনায়কত্বে অভিষেক হওয়া বেদি নিজে নেতৃত্ব পেয়েছিলেন ১৯৭৬ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে। তাঁর নেতৃত্বে ২২টি টেস্ট খেলে ভারত জিতেছিল ৬টি ম্যাচ।

২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়ার কলিন মিলারের সঙ্গে বেদি (বাঁয়ে)
এএফপি

১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের এক সিরিজ খেলেছিল ভারত, যেটি তারা হেরেছিল ৩-২ ব্যবধানে। ৫ ম্যাচে ৩১টি উইকেট নিয়ে সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন বেদি।

১৯৭৮ সালে প্রায় ২৩ বছর পর প্রথমবারের মতো পাকিস্তান সফর করেছিল ভারত, তাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বেদি। সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে সরফরাজ নেওয়াজের টানা চারটি শর্ট বলের একটিতেও আম্পায়ার ওয়াইড না দেওয়ার প্রতিবাদে খেলোয়াড়দের তুলে নেন বেদি। পরে পাকিস্তানকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। সে সিরিজে পাকিস্তানের নেতৃত্বে ছিলেন মুশতাক মোহাম্মদ। কাউন্টি খেলতে গিয়ে মুশতাকের সঙ্গে বন্ধুত্বকেই ব্যক্তিগতভাবে নিজের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি মনে করতেন বেদি। মুশতাকের মা বেদিকে তাঁর ষষ্ঠ পুত্র বলেও মনে করতেন, পরে মুশতাকের আত্মজীবনীর ভূমিকাও লিখেছিলেন বেদি।

টেস্টের বাইরে ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটেও সফল ছিলেন বেদি। নর্দাম্পটনশায়ারের হয়ে প্রথম শ্রেণিতে ২০.৮৯ গড়ে ৪৩৪টি উইকেট নিয়েছিলেন। অবসর নেওয়ার পর সংক্ষিপ্ত সময়ে ভারতকে কোচিং-ও করিয়েছিলেন।

ফিঙ্গার স্পিনার হিসেবে বেদি বলতেন, ‘আমার সবচেয়ে বড় সম্পদ আমার আঙুল। আমি নিজের কাপড় নিজে ধুতাম, যেটি আমার আঙুল ও কবজিকে শক্তিশালী রাখত, একই সঙ্গে নমনীয়ও রাখত। ডাম্বেল হয়তো শক্তি বাড়ায়, তবে সেটি নমনীয়তা বাড়ায় না।’

আর বোলিং কতটা ভালোবাসতেন, সে ব্যাপারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আসলে বোলিংয়ে মোহাচ্ছন্ন ছিলাম। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনুশীলন করতাম।’

বেদির মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বিসিসিআই। ভারতের অফ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন এক্সে লিখেছেন, ‘কিংবদন্তি বিষেণ সিং বেদির মৃত্যুতে শোকাহত। বড় একজন ক্রিকেটারের বাইরে তিনি দারুণ এক ব্যক্তি ছিলেন, তরুণ ক্রিকেটারদের সহায়তা করতে বরাবরই এগিয়ে আসতেন।’