ইসিবির চুক্তি ছেড়ে মেজর লিগ ক্রিকেট খেলতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার খবর আসার পর মুখ খুলেছেন জেসন রয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইংল্যান্ড ওপেনার বলেছেন, তিনি কখনোই ‘ইংল্যান্ড ছেড়ে যাবেন না’।
আগামী ১৩ জুলাই শুরু যুক্তরাষ্ট্রের ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেট লিগের প্রথম আসরে লস অ্যাঞ্জেলেস রাইডার্সের সঙ্গে রয় চুক্তি করতে যাচ্ছেন বলে খবর আসে। ভারতভিত্তিক ফ্র্যাঞ্চাইজি কলকাতা নাইট রাইডার্সের সে দলের সঙ্গে রয়ের দুই বছরের জন্য প্রায় ৩ লাখ পাউন্ডে (প্রায় ৪ কোটি টাকা) চুক্তি হচ্ছে বলেও জানায় ডেইলি মেইল। এরপর ইএসপিএনক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে বলা হয়, রয়ের সঙ্গে এমন ভাবছেন পেসার রিস টপলিও।
এরপর দেওয়া বিবৃতিতে কদিন পর ৩৩ পূর্ণ করতে চলা রয় বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় কিছুটা অনাকাঙ্ক্ষিত ধারণা তৈরি হওয়ার পর আমি এটা পরিষ্কার করতে চাই, আমি ইংল্যান্ড ছেড়ে যাচ্ছি না, কখনোই যাব না। পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে নিজের দেশের প্রতিনিধিত্ব করা আমার সবচেয়ে গর্বের ব্যাপারই হয়ে থাকবে। আরও অনেক বছর ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার আশা করি, এটিই আমার প্রাধান্য পাবে।’
অবশ্য মেজর লিগ ক্রিকেট খেলতে যাওয়ার বিষয়টিও রয় নিশ্চিত করেছেন তাঁর বিবৃতিতে, ‘মেজর লিগ ক্রিকেট খেলার ব্যাপারে ইসিবির সঙ্গে আমার স্বচ্ছ ও সহায়তাপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। এ প্রতিযোগিতায় আমাকে খেলতে দিতে পেরে ইসিবি খুশি, যতক্ষণ না চুক্তির বছরের বাকিটা সময় আমাকে তাদের অর্থ দিতে না হচ্ছে।’
গত অক্টোবরে ৩০ জনকে নিয়ে ঘোষিত ইসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ‘ইনক্রিমেন্ট চুক্তি’ নামের একটি শ্রেণিতে রাখা হয় তাঁকে। যেটি মূলত বিশেষ একটি শ্রেণি, বার্ষিক কেন্দ্রীয় চুক্তির আওতার বাইরে। ক্রিকইনফোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ চুক্তির আওতায় রয়রা বছরে প্রায় ৬৬ হাজার পাউন্ড পান, যেটি তাঁদের কাউন্টির সঙ্গে চুক্তির চেয়ে একটু বেশি।
সে সময়ে ইংল্যান্ডের কোনো সীমিত ওভারের খেলা নেই। আবার রয় আপাতত দলটির হয়ে শুধু ওয়ানডেই খেলছেন। এ কারণেই মেজর লিগে খেলার সুযোগটি নিতে চেয়েছেন বলেও জানান রয়, ‘এক সংস্করণে খেলি, কেন্দ্রীয় চুক্তিও নেই। আবার ইংল্যান্ডের সূচির সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয় বলে এ প্রতিযোগিতায় খেলার সুযোগটি নিতে চেয়েছি আমি। যত বেশি সম্ভব প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেট খেললে ইংল্যান্ড ক্রিকেটার হিসেবে আমারই লাভ।’
চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেলে ইংল্যান্ড দলে রয়ের ভবিষ্যৎ কী হবে, সে নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে যখন এটি বিশ্বকাপের বছর। তবে রয়ের দাবি, তাঁর ভাবনায় সে টুর্নামেন্ট আছে ভালোভাবেই, ‘পরিষ্কার করার জন্যই বলছি, আমার প্রাধান্য ইংল্যান্ড ক্রিকেটেই, বিশেষ করে যখন বিশ্বকাপ আমাদের সামনে। আমার এবং যেকোনো খেলোয়াড়ের জন্যই তার দেশের ক্যাপ পাওয়াটা সবচেয়ে বড় সম্মানের।’
এদিকে রয়ের চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ইংল্যান্ডের পেশাদার ক্রিকেটারদের সংগঠন পিসিএর এক মুখপাত্র ক্রিকইনফোকে বলেছেন, ‘ইসিবি, কাউন্টি ও পিসিএর সমঝোতার ভিত্তিতে হওয়া নিয়ম মেনেই হচ্ছে এটি। কোনো খেলোয়াড়কে মৌসুমের মাঝে অনাপত্তিপত্র দেওয়া হবে কি না, সেটি সম্পূর্ণই নির্ভর করছে নিয়োগকারীর বিবেচনার ওপর।’