কোহলি-রোহিতদের ‘সব জানি’ মনোভাবের সমালোচনা কপিলের
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ড। ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বিত্তশালী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজন করে ভারত। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাসহ কয়েকজন ভারতের সবচেয়ে বেশি আয় করা ক্রিকেটারদের অন্যতম।
তবে অর্থের ছড়াছড়ি, তারকামূল্য আর দর্শক আগ্রহে শীর্ষে থাকলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারতের সাম্প্রতিক ফল প্রত্যাশিত মাত্রার নয়। ২০১৩ সালের পর আইসিসির কোনো টুর্নামেন্ট জিততে পারেনি ভারত। সর্বশেষ দুই ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা করতে পারেনি ফাইনালেও। আর দুবার ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেললেও মাঠ ছাড়তে হয়েছে হার নিয়ে। ভারত ক্রিকেট দলের এই সাফল্যহীনতার সূত্র ধরে এখনকার তারকা ক্রিকেটাররা পূর্বসূরিদের পরামর্শ নেন কি না, এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল সুনীল গাভাস্কারকে।
এবার একই প্রসঙ্গ উঠল কপিল দেবের সাক্ষাৎকারেও। যে প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ভারতীয় দলের বর্তমান ক্রিকেটারদের সমালোচনাই করেছেন ১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক। বলেছেন, এ সময়ের খেলোয়াড়েরা ‘সব জানি’ ধরনের মনোভাব ধারণ করে।
সপ্তাহ তিনেক আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক সাক্ষাৎকারে গাভাস্কারকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, গত ৫–১০ বছরের মধ্যে কোনো ব্যাটসম্যান তাঁর কাছে ব্যাটিং নিয়ে পরামর্শ চেয়েছিলেন কি না? প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ১০ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করা গাভাস্কার জবাবে বলেন, ‘না, একজনও আসেনি। আগে রাহুল দ্রাবিড়, শচীন টেন্ডুলকার, ভিভিএস লক্ষ্মণরা নিয়মিত আসত। ওরা নিজেদের নির্দিষ্ট সমস্যা নিয়ে আলোচনা করত। আমি আমার পর্যবেক্ষণ থেকে বলতাম।’
দ্য উইক ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একই বিষয়ে কথা বলেন কপিল দেব। তাঁর মতে, এ সময়ের ক্রিকেটারদের মধ্যে একধরনের অতি আত্মবিশ্বাস কাজ করে, ‘এই খেলোয়াড়দের ভালো দিক হচ্ছে, তারা খুবই আত্মবিশ্বাসী। নেতিবাচক দিচ্ছে হচ্ছে, তারা ভাবে, “আমরা সব জানি।” আমি জানি না, এর চেয়ে ভালোভাবে কীভাবে বলা যায়। তাদের আত্মবিশ্বাস আছে, একইভাবে আছে “আমার কাউকে জিজ্ঞেস করার কিছু নেই” ভাবনাও। অথচ আমরা বিশ্বাস করি, একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি সহায়তা করতে পারে।’
ভারতের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের মতে, সমস্যাটি তৈরি হয়েছে প্রচুর অর্থ আয় আর অহংয়ের কারণে, ‘কখনো কখনো খুব বেশি অর্থ পাচ্ছে, অহং চলে আসছে। তখন সব জানে, ভাবা শুরু করে। এটাই পার্থক্য। আমি তো বলব, অনেক ক্রিকেটারেরই অন্যদের পরামর্শ দরকার। যখন সুনীল গাভাস্কারের মতো ব্যক্তি আছেন, তখন আপনি কথা বলবেন না কেন? এখানে অহং কোথায়? অহংয়ের কিছু নেই। ওরা ভাবে, “আমরা যথেষ্ট ভালো।” হতে পারে তারা যথেষ্ট ভালো। কিন্তু ৫০ বছর ধরে ক্রিকেট দেখার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন আপনাকে বাড়তি সহায়তা করতে পারে, তিনি জানেন বিষয়গুলো। কখনো কখনো পরামর্শ শোনার মাধ্যমে আপনার ভাবনা বদলাতে পারে।’