ঝড় শেষে ফাহিম বললেন, ‘মাহমুদ ভাই ম্যাজিক’

সপ্তম উইকেটে ৩৫ বলে ৮৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন ফাহিম আশরাফ (বাঁয়ে) ও মাহমুদউল্লাহছবি: ফরচুন বরিশাল

৭.৪ ওভারে তখনো ফরচুন বরিশালের জয়ের জন্য দরকার ছিল ৮৬ রান। ওদিকে পড়ে গেছে ৬ উইকেট। শাহিন শাহ আফ্রিদি ফিরে যাওয়ার পর মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটি বাঁধলেন আরেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার ফাহিম আশরাফ। ম্যাচে বরিশালের ভাগ্য তখনো পেণ্ডুলামের মতে দুলছে।

কিন্তু এরপর যা হলো, তাকে ঝড় বললেও কম বলা হয়। ৫.৫ ওভারেই খেলা শেষ করে দিল মাহমুদউল্লাহ–ফাহিমের তাণ্ডবে জুটি। ৭ ছক্কা আর ১ বাউন্ডারিতে ফাহিম ওই সময়ের মধ্যেই খেললেন ২১ বলে অপরাজিত ৫৪ রানের ইনিংস। চার ছক্কা আর পাঁচ বাউন্ডারিতে ২৬ বলে ৫৬ করে অপরাজিত মাহমুদউল্লাহও।

দুর্বার রাজশাহীর মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে মিরপুর শেরেবাংলার গ্যালারি পার করা ছক্কায় জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন ফাহিম।

জয় দিয়ে বিপিএল শুরু করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল
ছবি: শামসুল হক

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে তাঁর জমে ওঠা রসায়নের কথা, ‘শুরুতে আমরা ভেবেছি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। কাজেই খুব সাধারণ পরিকল্পনা ছিল আমাদের। আমরা বড় কিছু চিন্তা না করে ২ ওভার করে ভালো করার চেষ্টা করেছি। সেভাবে এগিয়েই চেয়েছি ম্যাচটা জিততে।’

উইকেটে আসার পর বাংলাদেশ দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ কীভাবে তাঁকে সাহস জুগিয়েছেন, ফাহিম বলেছেন সেটাও, ‘মাহমুদ ভাই ম্যাজিক! প্রথম ৬-৭ বলে আমি মাত্র ১ রান করলাম। আমি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম, “কী হয়েছে?” তিনি আমাকে বললেন, “তুমি শুধু টিকে থাকো।” এ রকম অভিজ্ঞ খেলোয়াড় থাকলে ব্যাপারটা ভালো। অনুপ্রাণিত হওয়া যায়। চাপ সামাল দেওয়া যায়। সব কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়।’

আরও পড়ুন

দুপুরে ২–৩ ওভার বোলিং করেই বরিশাল বুঝতে পারে উইকেট ভালো। তবে তাদের ধারণা ছিল উইকেট ১৫০–১৬০ রানের হবে। পরে ভুল ভাঙে তাদের। ফাহিম বলেছেন, ‘শুরুতে আমি ভেবেছিলাম হয়তো ১৫০-১৬০ রানের উইকেটই হবে। তবে পরে স্লো বল ধরছিল না। ১৭০ রানের উইকেট মনে হচ্ছিল। ইয়াসির এবং এনামুল দারুণ খেলেছে। দ্বিতীয় ইনিংসে উইকেট আরও ভালো হয়েছে। প্রথম ইনিংসে উইকেট নরম ছিল, পরে শক্ত এবং শুকনা হয়ে গেছে।’

ম্যাচসেরা মাহমুদউল্লাহকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন সতীর্থ ফাহিম আশরাফ
ছবি: শামসুল হক

বিপিএলে এর আগে এক মৌসুম ঢাকা প্লাটুন, আরেক মৌসুম খুলনা টাইগার্সের হয়ে খেলে খুব একটা ভালো করতে পারেননি ফাহিম। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে একটা সুখস্মৃতি আছে তাঁর। ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৩০ বলে ৬৪ রানের ইনিংস।

আজ সেই স্মৃতি মনে করিয়ে দিলে ফাহিম হয়ে পড়লেন স্মৃতিকাতর, ‘এমন ভালো ইনিংস খেলতে পারলে আপনি সারা জীবন সেটা মনে রাখবেন। অনুশীলন ম্যাচে খেললেও এমন ইনিংসের কারণে অনেক সময় ক্যারিয়ার ঘুরে যায়। ওই ইনিংস না খেললে ফাহিম হয়তো পাকিস্তানের হয়ে খেলত না। সেই ইনিংসের জন্য চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পাকিস্তানের হয়ে অভিষেকও হয়েছিল আমার। এমন ইনিংস সারা জীবন মনে রাখার মতো।’