এমন স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচ আর খেলতে চান না দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক

অসময়ে আউট হয়ে যান এইডেন মার্করাম, অ্যান্টিগায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচেএএফপি

টানা সাত ম্যাচ জিতে অপরাজিত থেকেই সেমিফাইনালে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০১৪ সালের পর প্রথমবারের মতো শেষ চারে যাওয়া দলটি এখন পর্যন্ত প্রায় সব কটি ম্যাচই জিতেছে বেশ স্নায়ুক্ষয়ী লড়াইয়ে। সামনে এগোনোর পথে এমন ম্যাচ আর খেলতে চান না অধিনায়ক এইডেন মার্করাম।

গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কাকে নিউইয়র্কে ৭৭ রানে অলআউট করে দিয়ে ৬ উইকেটে জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। মূলত এর পর থেকে প্রতিটি ম্যাচেই তারা জিতেছে বেশ কম ব্যবধানে। গ্রুপ পর্বে ৪ উইকেট, ৪ রান ও ১ রানে জেতার পর সুপার এইটে এসে তারা প্রথম দুটি ম্যাচ জেতে ১৮ রান ও ৭ রানে। এমন ব্যবধানে জেতার কারণে নেট রান রেটেও বেশ পিছিয়ে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। মূলত সে কারণেই প্রথম দুটি ম্যাচ জেতার পরও আজ অ্যান্টিগায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচটি তাদের জন্য হয়ে উঠেছিল ‘নকআউট’।

রান তাড়ায় বৃষ্টি-বিরতির পর ১৭ ওভারে লক্ষ্য দাঁড়িয়েছিল ১২৩ রান, ৩ উইকেটে ৭৪ রান তুলে ফেলে তারা। তবে এরপর ১৭ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে প্রোটিয়ারা। এ ম্যাচ জেতার পর অধিনায়ক মার্করাম বলেছেন, ‘সেমিফাইনালে যাওয়াটা অনেক স্বস্তির, তবে আমরা এটিকে মাথায় চড়তে দেব না। ব্যাট হাতে আমরা আরও দাপুটে হতে চাই। বৃষ্টি–বিরতির পর উইকেট ভালো আচরণ করছিল, সেখানেই ম্যাচ শেষ করে দেওয়ার মতো জুটি পাইনি। ম্যাচ বেশি আগেভাগে শেষ করতে চেয়েছি।’

বোলারদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে কৌশলী ছিলেন মার্করাম
এএফপি

অফ স্পিনার রোস্টন চেজকে মারতে গিয়ে আউট হন ডেভিড মিলার, ট্রিস্টান স্টাবস ও কেশব মহারাজ। সে প্রসঙ্গে মার্করাম বলেন, ‘আমাদের জন্য (এ জয়) বিশাল, ড্রেসিংরুমের জন্যও দারুণ। তবে আশা করি (সামনে এগোতে) আমরা এমন জটিল অবস্থায় পড়ব না। আমরা দারুণ বোলিং করেছি বলে মনে হয়, কন্ডিশন বুঝেছি, তাদের গড়পড়তার চেয়ে কম সংগ্রহে রাখতে পেরেছি। জুটি গড়ার ব্যাপারটি বুঝতে হবে। ম্যাচ আগেভাগে শেষ করার ভক্ত আমি, তবে আজ সেটি একটু বেশিই আগে করে ফেলতে চেয়েছি। এখানে শেখার ব্যাপার আছে। আশা করি (ভুলের) পুনরাবৃত্তি করব না।’

আরও পড়ুন

টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিংয়ে বেশ চমকই দেখা যায়। এক প্রান্তে নিজে বোলিং ওপেন করেন। শুধু তা–ই নয়, টানা ৪ ওভার করেন মার্করাম। ১৮তম ওভারের আগে পেসার কাগিসো রাবাদাকে বোলিংয়েই আনেননি তিনি। বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার তাব্রেইজ শামসি আসেন দশম ওভারে। অবশ্য ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা শামসিই। নিজেদের বোলিং কৌশলের ব্যাখ্যা দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক দিয়েছেন এভাবে, ‘আমরা (তাব্রেইজ) শামসিকে নিয়েছি, একজন রহস্য স্পিনারকে রাখতে চেয়েছি। আমরা সম্ভাব্য একটা সুযোগ দেখেছি। পাওয়ারপ্লেতে স্পিন আনার পর দেখেছি টার্ন পাওয়া যাচ্ছে। ফলে এর পর থেকে যতটা সম্ভব স্পিনারদের আনতে চেয়েছি আমরা।’

আরও পড়ুন

টানা ছয় ম্যাচ জেতার পরও ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলেও শেষ পর্যন্ত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সেমিফাইনালে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে তাদের প্রতিপক্ষ ঠিক হয়নি এখনো। অন্য গ্রুপে কোন দুটি দল শেষ চারে উঠবে, সেটি নিশ্চিত নয় এখনো। কাগজে-কলমে সম্ভাবনা আছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ—চার দলেরই। প্রতিপক্ষ কে হবে, সেটি নিয়ে কিছু ভাবতে চান না মার্করাম। তবে সম্ভাব্য সে প্রতিপক্ষকে একটা হুমকি দিয়ে রাখলেন তিনি, ‘আমরা নিজেদের সেরা ক্রিকেট ম্যাচটি এখনো খেলিনি। সেমিফাইনালে সেটি করার চেষ্টা করব।’