ফিলিস্তিনের সঙ্গে ম্যাচে প্রেরণা কুয়েতের বাংলাদেশিরা

কুয়েত সিটির আল শায়ের ফুটবল ক্লাবে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনবাফুফে

ফুটবল মাঠে ফিলিস্তিনের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম দেখা ১৮ বছর আগে। ২০০৬ সালে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রুপ পর্বের সেই ম্যাচ হয়েছিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। ১-১ গোলে ড্র হওয়া সেই ম্যাচের পর ফিলিস্তিনের বিপক্ষে আরও পাঁচবার খেলেছে বাংলাদেশ। হেরেছে প্রতিবারই।

এবার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ফিলিস্তিনের যে দলের সঙ্গে খেলবেন জামাল ভূঁইয়া, তপু বর্মণরা, সেটি হয়তো শক্তিতে ছাড়িয়ে যাবে অতীতে ফিলিস্তিনের বাকি সব দলকেই। গত জানুয়ারিতে এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে নকআউট পর্বে গিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিল দলটি। ২১ মার্চ কুয়েতে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ। হোম ম্যাচটি ২৬ মার্চ, ঢাকায়। এ দুটি ম্যাচে বাংলাদেশ ‘কঠিন পরীক্ষা’র জন্যই নিজেদের তৈরি করছে।

সৌদি আরবে দুই সপ্তাহের অনুশীলন ক্যাম্প শেষে পরশু কুয়েতে গেছে বাংলাদেশ দল। যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিন বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নিজেদের ‘হোম’ হিসেবে বেছে নিয়েছে কুয়েতকে। এ মাঠেই গত নভেম্বরে গ্রুপের সবচেয়ে শক্তিশালী দল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাত্র ১-০ গোলে হেরেছিল তারা। বাংলাদেশ মেলবোর্নে সেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই হেরেছিল ৭-০ গোলে।

ফিলিস্তিন দলটা কত শক্তিশালী, সেটি বোঝা যাবে এশিয়ান কাপের ম্যাচগুলোর দিকে তাকালেই। গ্রুপ পর্বে হংকংকে উড়িয়ে দিয়েছিল তারা। ড্র করেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে। ইরানের বিপক্ষে ৪-১ গোলে হারটা বাদ দিলে তারা নিজেদের শক্তিমত্তার প্রমাণ রেখেছিল। দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে স্বাগতিক (শেষ পর্যন্ত এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন) কাতারের বিপক্ষে ১-০ গোলে এগিয়ে গিয়েও সেটি ধরে রাখতে পারেনি, হেরেছিল ২-১ গোলে।

এমন একটা দলের বিপক্ষে প্রস্তুতি যেভাবে নেওয়া দরকার, স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা সেটি নিচ্ছেন সেভাবেই। কুয়েতে পৌঁছে প্রথম দিন বিরতি থাকলেও কাল কঠোর অনুশীলনই করেছে তারা। বাংলাদেশ সময় গভীর রাতে অনুষ্ঠিত এই অনুশীলন সেশনে মূলত রক্ষণভাগের ওপরই জোর দিয়েছেন কোচ।

কাল কঠোর অনুশীলনই করেছে বাংলাদেশ
বাফুফে

ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ম্যাচে আক্রমণের যে স্রোত বয়ে যাবে বাংলাদেশের রক্ষণের ওপর, সেটি সামলানোর অনুশীলনটাই চলছে। ডিফেন্ডার তপু বর্মণ জানিয়েছেন সে কথা, ‘ফিলিস্তিন দলটা অনেক শক্তিশালী। তারা এশিয়ান কাপের নকআউট পর্বে খেলেছে। এ ম্যাচের আগে আমরা রক্ষণের ওপর জোর দিচ্ছি। রক্ষণে আমাদের ভালো করতে হবে। কোচ এসব নিয়ে কাজ করছেন। আমরাও মুখিয়ে আছি ম্যাচটির জন্য।’

আরও পড়ুন

কুয়েতে নেমেই প্রবাসী বাংলাদেশিদের অভ্যর্থনা পেয়েছে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। আর কুয়েত সিটিতে যেখানে অনুশীলন করছে বাংলাদেশ দল (আল শায়ের নামের ফুটবল ক্লাবের মাঠ), সেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিরা সংখ্যায় বেশি হওয়ায় সুযোগ-সুবিধার দিক দিয়েও বাড়তি খাতিরই পাচ্ছে দল। ম্যানেজার আমের খান জানালেন সেটি, ‘আল শায়ের ফুটবল ক্লাবে অনেক বাংলাদেশি কাজ করেন। ইফতারের পরপরই আমরা অনুশীলনে নামি, এই সময় বাংলাদেশিরাই মাঠের ফ্লাডলাইট থেকে শুরু করে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে দিয়েছেন। চাহিদামতো দল সবকিছুই পেয়েছে।’

চূড়ান্ত স্কোয়াড এখনো ঘোষণা করা হয়নি
বাফুফে

কুয়েতপ্রবাসীদের জন্য ভালো কিছুরই তাড়না অনুভব করছেন তপু, ‘এখানে আসার পর থেকে কুয়েতপ্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাদের নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিমানবন্দরে নেমেই আমরা যে অভ্যর্থনা পেয়েছি, সেটি অসাধারণ। আশা করি বাংলাদেশি ভাইয়েরা মাঠে এসে দলকে সমর্থন দেবেন।’

চূড়ান্ত স্কোয়াড এখনো ঘোষণা করেননি কোচ কাবরেরা। ম্যাচের আগে যে করবেন, সেটি না বললেও চলছে। হয়তো কালই ২৩ জনের স্কোয়াড জানিয়ে দেবেন তিনি। কিন্তু এই স্কোয়াডে কারা থাকছেন। কাবরেরা বা বাংলাদেশ দল সংশ্লিষ্টদের অবশ্য এ ব্যাপারে মুখে তালা। ২৮ জন থেকে স্প্যানিশ কোচ বেছে নেবেন ২৩ জনকে। কোচের মতে, ‘আমাদের হাতে আরও ২টি ট্রেনিং সেশন আছে। আমার ২৮ জন ফুটবলারই প্রস্তুত। এর মধ্য থেকে কোন ২৩ জনকে বেছে নেবে, সেই সিদ্ধান্তটাই নিতে হবে।’
ফিলিস্তিনের কোচ মাকরাম দাবুব ২৫ জনের স্কোয়াড নিয়ে কুয়েতে গেছেন। দলটিতে এশিয়ান কাপ খেলা ফুটবলারদের বেশির ভাগই আছেন।

আরও পড়ুন