অনূর্ধ্ব–১৯ এশিয়া কাপ: নায়কের ভিড়ে নায়কের খোঁজে

দারুণ নৈপুণ্যে ভারতকে হারিয়ে এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশের যুবারাএসিসি

ক ফরিদ হাসান ব ইকবাল হোসেন ইমন।

ক ফরিদ হাসান ব ইকবাল হোসেন ইমন।

আফগানিস্তানের চার নম্বর ব্যাটসম্যান নাসির খান মারুফখিলকে উইকেটকিপার ফরিদ হাসানের ক্যাচ বানিয়ে শুরু করে করেছিলেন ইকবাল হোসেন ইমন। বাংলাদেশের পেসার ইকবাল ২০২৪ অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে নিজের শেষ শিকারটিও করলেন একই কায়দায়। ফাইনালে ভারতের ৭ নম্বর ব্যাটসম্যান হরবংশ পাঙ্গালিয়াকে ফরিদের গ্লাভসবন্দী করে পেয়ে গেলেন টুর্নামেন্টে নিজের ১৩তম উইকেট।

আর এই উইকেটটিই টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বানিয়ে দিয়েছে এই ডানহাতি পেসারকে। সতীর্থকে আল ফাহাদকে টপকে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হয়ে যাওয়া ইকবাল পেয়েছেন ফাইনাল ও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতিও।

সেমিফাইনালেও পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন ইকবাল। সেদিন নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। সেমিফাইনাল ও ফাইনাল—দুই ম্যাচেই ম্যাচসেরা হওয়া ইকবাল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের টানা দ্বিতীয় এশিয়া কাপ জয়ে কত বড় অবদান রেখেছেন, সেটির প্রমাণ তো টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হওয়াটাই। তবে ৩ উইকেট নিয়ে শুরু ও শেষ করা ইকবালই শুধু নন, বাংলাদেশের দ্বিতীয় যুব এশিয়া কাপ জয়ে নায়কের অভাব নেই।

আরও পড়ুন

তামিম ডাকনামের অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তো নেতৃত্বে দিয়েছেন সামনে থেকেই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এক প্রান্ত ধরে রেখে দারুণ এক সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। আজিজুলের ব্যাট হেসেছে নেপাল ও পাকিস্তানের বিপক্ষেও। ওই দুই ম্যাচে করেছেন ৫২ ও ৬১ রান।

দুবারই ছিলেন অপরাজিত। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ অধিনায়কের মোট রান ২৪০। তাঁর চেয়ে বেশি রান করেছেন শুধু পাকিস্তানের শাহজাইব খান (৩৩৬)। ব্যাটিংয়ে আলো ছড়ানো আজিজুল নিজের অলরাউন্ডার সত্তার পরিচয় রেখেছেন ফাইনালে। ভারতের শেষ ৩টি উইকেটই নিয়েছেন স্পিন বোলিংয়ে।

ফাইনালে ম্যাচসেরার পাশাপাশি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন ইকবাল হোসেন
এসিসি

ইকবাল ও আজিজুলের কথা আগে বলায় রাগ করতে পারেন আল ফাহাদ। এই ডানহাতি পেসার বলতেই পারেন—কী আশ্চর্য, ফাইনালে ওঠাতে আমার কী ভূমিকা, সেটি ভুলেই গেলেন! ফাইনালের আগে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন ফাহাদই।

প্রথম ৪ ম্যাচে ১০ উইকেট নেওয়া ফাহাদকে ফাইনালে টপকেছেন ইকবাল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩ উইকেট নিয়ে শুরু করা ফাহাদ নেপালের বিপক্ষে ২ উইকেট নেওয়ার পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নেন ৪ উইকেট। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেমিফাইনালে ১ উইকেট পেলেও ৮ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ২৩।

আরও পড়ুন

ওই ম্যাচেই বাংলাদেশের আরেক পেসার রিজান হোসেন ৮ ওভারে দিয়েছিলেন মাত্র ১৩ রান। এই ম্যাচে উইকেট না পেলেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পেয়েছিলেন ৩ উইকেট। সব মিলিয়ে নিয়েছেন ৬ উইকেট। ফাইনালে দলের সর্বোচ্চ ইনিংসটাও (৪৭) এসেছে রিজানের ব্যাট থেকেই।

টানা দ্বিতীয়বারের মতো যুব এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ
এসিসি

তাঁর চেয়ে ১ উইকেট কম নিয়েছেন তিন ম্যাচ খেলা মারুফ মৃধা। এই বাঁহাতি পেসার ফাইনালে ভারতের বিস্ময়-বালক বৈভব সূর্যবংশীকে ডানা মেলার আগেই ফেরত পাঠিয়েছেন।

বোলারদের টুর্নামেন্টে বলতে হবে বাংলাদেশের দুই ওপেনারের নামও। কালাম সিদ্দিকি দুই ফিফটিতে করেছেন বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬২ রান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ রানের জন্যই সেঞ্চুরি পাননি। আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরার শেষে চার ম্যাচেই ভালো শুরু এনে দিয়েছেন দলকে, সব মিলিয়ে করেছেন ১২০ রান।

আরও পড়ুন

মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শিহাব জেমস ফাইনালেই খেলেছেন টুর্নামেন্টে নিজের সর্বোচ্চ ৪০ রানের ইনিংস। তবে সেটিই তাঁকে দ্বিতীয়বার এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়নের পদক এনে দিয়েছে। পরপর দুই বছরে দুবার এশিয়া কাপ জিতেছেন ইকবাল, মারুফ, রাফিউজ্জামানও। স্কোয়াডে আছেন আরেকজনও—আশরাফুজ্জামান। টানা দুটি এশিয়া কাপজয়ী দলে থাকলেও গতবারের মতো এবারও একটি ম্যাচও খেলার সুযোগ হয়নি তাঁর।