ওয়ার্নার–খাজার সঙ্গে ঝামেলার জেরে এমসিসির ৩ সদস্য নিষিদ্ধ
লর্ডসে অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্ট শেষ হয়ে গেলেও তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাময় এ ম্যাচের রেশ এখনো কাটেনি। লর্ডস টেস্টের পরতে পরতে যেন লুকিয়ে ছিল উত্তেজনা, রোমাঞ্চ আর বিতর্কের রসদ।
চোট নিয়ে নাথান লায়নের ১০ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে যাওয়াটাকে ভালোভাবে নেননি ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক কেভিন পিটারসেন। ম্যাচের চতুর্থ দিনে মিচেল স্টার্কের নেওয়া বেন ডাকেটের ক্যাচটিকে বৈধতা না দেওয়া নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং ও সাবেক ফাস্ট বোলার গ্লেন ম্যাকগ্রা। এরপর কাল পঞ্চম ও শেষ দিনে জনি বেয়ারস্টোকে করা অস্ট্রেলিয়ার উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্যারির স্টাম্পিং নিয়ে তো রীতিমতো তোলপাড়ই হয়েছে।
এমনকি ম্যাচ শেষে বেয়ারস্টোর আউটের বিতর্কের জের ধরে এমসিসি তাদের তিন সদস্যকে সাময়িক নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে।
বেয়ারস্টোর আউট নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল লর্ডসের লং রুমে। অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়েরা মধ্যাহ্নবিরতিতে মাঠ ছেড়ে লং রুম দিয়ে ড্রেসিংরুমে যাওয়ার সময় তাঁদের দুয়ো দিয়েছেন অনেকে। কেউ কেউ ‘প্রতারক’ বলে চিৎকার করেন। লং রুমে বসে সাধারণ এমসিসির সদস্যরাই খেলা দেখতে পারেন।
অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়েরা লং রুম দিয়ে তাঁদের ড্রেসিংরুমে যাওয়ার সময় ডেভিড ওয়ার্নার আর উসমান খাজার সঙ্গে বচসায় জড়ান এমসিসির কয়েকজন সদস্য। দুজনকে উদ্দেশ্য করে তাঁরা কটূ মন্তব্য করেন। ওয়ার্নার সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় তাঁর সামনে চলে আসেন এক সদস্য।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, এমসিসির দুই সদস্যকে দেখিয়ে খাজা নিরাপত্তাকর্মীদের বলছেন, ‘একে এবং একে বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।’ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টাইমসকে একটি সূত্র জানিয়েছে, এমসিসির একজন সদস্য ওয়ার্নারের সঙ্গে শারীরিক সংঘর্ষেও গিয়েছেন।
পুরো ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে খাজা পরে বলেছেন, ‘(এমসিসির) সদস্যদের মুখ থেকে বেরোনো কিছু কথা ছিল খুবই হতাশাজনক। আমি তাদের সঙ্গে এ নিয়ে লড়াইয়ে যাইনি...আমি (এমসিসির) সদস্যদের কাছ থেকে এর চেয়ে ভালো কিছু আশা করেছিলাম।’
এমসিসি এক বিবৃতিতে তিন সদস্যকে সাময়িক নিষিদ্ধ করার কথা জানিয়েছে। এমসিসির প্রধান নির্বাহী গাই ল্যাভেনডার সংগঠনটির সদস্যদের আচরণ নিয়ে সতর্কও করেছেন। এ ছাড়া তিনি অস্ট্রেলিয়া দলের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমাও চেয়েছেন।
এসবই ঘটেছে বেয়ারস্টোর আউটকে কেন্দ্র করে। আউটটি নিয়ে আসলে সমস্যা কী ছিল? ঘটনা ইংল্যান্ডের ইনিংসের ৫২তম ওভারের শেষ বলে। ক্যামেরন গ্রিনের বলটি ছিল বাউন্সার, যা মাথা নিচু করে ছেড়ে দেন বেয়ারস্টো। বল ছেড়ে দেওয়ার পরপরই পপিং ক্রিজ ছেড়ে তিনি বেরিয়ে যান। এ দিকে বল হাতে নিয়ে স্টাম্প ভেঙে দেন অস্ট্রেলিয়ার উইকেটকিপার ক্যারি।
বেয়ারস্টো রান নেওয়ার জন্য ক্রিজ ছাড়েননি, ওভার শেষ ভেবে অপর প্রান্তে থাকা স্টোকসের সঙ্গে কথা বলতে বাইরে বেরিয়েছেন। এ দিকে ক্যারি বল হাতে জমিয়েও রাখেননি, ধরেই দূর থেকে বল ছুড়ে স্টাম্প ভাঙেন। এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য তৃতীয় আম্পায়ারের দ্বারস্থ হন মাঠের আম্পায়াররা। তৃতীয় আম্পায়ার জানান বেয়ারস্টা আউট হয়েছেন। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস ২১৪ বলে ৯টি করে চার ও ছয়ে ১৫৫ রান করেও দলকে জেতাতে পারেননি। ৪৩ রানে হেরে অ্যাশেজে ২ ম্যাচ শেষে ২–০তে পিছিয়ে পড়েছে ইংল্যান্ড।