বিশ্বকাপের আগে কি সুযোগ পাবেন মাহমুদউল্লাহ-আফিফ
সামনেই আয়ারল্যান্ড সিরিজ, এরপর আছে আফগানিস্তান সিরিজ ও এশিয়া কাপ। মাস চার–পাঁচের মধ্যে হতে যাওয়া এই সিরিজ ও টুর্নামেন্ট দিয়েই চূড়ান্ত হবে বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দল। কিছুদিন আগে পর্যন্ত ওয়ানডে দলের নিয়মিত মুখ হয়ে থাকা মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন কি থাকবেন সেই দলে?
বাংলাদেশ দলের এখনকার যা ব্যস্ততা, তার পুরোটাই বিশ্বকাপকেন্দ্রিক। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটি আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের অংশ। এরই মধ্যে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় যা বাংলাদেশের জন্য নিজেদের খেলাকে শাণিত করার বেশি কিছু নয়। ভেন্যু চূড়ান্ত না হওয়া এশিয়া কাপের এবারের আসর হবে ওয়ানডে সংস্করণে, যার মূল লক্ষ্যও বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া।
আয়ারল্যান্ড সিরিজ আর এশিয়া কাপের মধ্যে দেশের মাটিতে আছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ। সব কটির মধ্যে বাংলাদেশ যোগসূত্র দেখছে এক জায়গায়—বিশ্বকাপের সেরা দলটি খুঁজে নেওয়া। অক্টোবর–নভেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠিত হবে এবারের বিশ্বকাপ। এই আসরে যাঁদের খেলার সম্ভাবনা বেশি, তাঁদেরই বাজিয়ে দেখার সময় এখন। আর ক্রিকেটারদের পরখ করে দেখার পর্বেই অনুপস্থিত মাহমুদউল্লাহ ও আফিফ।
৩৭ বছর বয়সী মাহমুদউল্লাহ মার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দলে ছিলেন। ফিটনেস, বিশেষ করে ফিল্ডিং দুর্বলতায় প্রশ্নবিদ্ধ মাহমুদকে আয়ারল্যান্ড সিরিজে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। এবার আরেকটি আয়ারল্যান্ড সিরিজ যখন সামনে, তখন তিনি দলেই নেই।
২৩ বছর বয়সী আফিফও সর্বশেষ খেলেছেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে থাকলেও একাদশে সুযোগ পাননি, পরে বাদ পড়েন টি–টোয়েন্টি থেকে। নেই সামনের ‘অ্যাওয়ে’ সিরিজেও। প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে অবশ্য খোলামেলাভাবেই বলেছেন, ফর্মের কারণে নেই আফিফ।
বিশ্বকাপ দলে জায়গা নিশ্চিতের সময় যখন খুব বেশি বাকি নেই, তখন জাতীয় দলে সুযোগ না পাওয়ার মাধ্যমে মাহমুদউল্লাহ–আফিফদের বিশ্ব আসরে খেলা কি অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে? কোচ–নির্বাচকেরা যখন কয়েকটি পজিশনে পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালাচ্ছেন, তখন অভিজ্ঞ ও প্রতিশ্রুতিশীল দুই ক্রিকেটারকে নিয়ে দলই–বা আসলে কী ভাবছে?
ক্রিকেটাঙ্গনে ঘুরে বেড়ানো এই প্রশ্নই করা হয়েছে আজ বাংলাদেশ কোচ হাথুরুসিংহের সংবাদ সম্মেলনে। সিলেটে প্রস্তুতি ক্যাম্পের শেষ দিনে কোচ যা বললেন, তাতে আশাবাদীই হতে পারেন আফিফ, মাহমুদউল্লাহ, ‘ওদের ব্যাপারে আমি আগে যা বলেছি, এখনো সেটিই বলব। তারা সবাই বিবেচনায় আছে। বিশ্বকাপের আগে সবাই খেলার সুযোগ পাবে। আমরা ওই ভাবনা থেকে সরে আসিনি।’
মাহমুদউল্লাহ–আফিফকে বিশ্বকাপের বিবেচনায় রাখার কথা হাথুরুসিংহে আগেও বলেছেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে আফিফকে পারফরম্যান্সের কারণে বাদ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে হাথুরু বলেছিলেন, ‘(দলে ফিরতে) অন্য যে কাউকে যা করতে হয়, সেটিই করতে হবে—রান করা। কোন কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে, সে ব্যাপারে তার সঙ্গে কথা বলেছি আমি। যদি সেটি করতে পারে, নির্বাচনের জন্য বিবেচ্য হয়, তাহলে দলের অন্য সবার মতোই বিচার করা হবে তাকে।’
মাহমুদউল্লাহকে নিয়েও হাথুরুসিংহে বলেছিলেন একই ধরনের কথা, ‘আমার মনে হয় না সে তার সেরা সময়কে পেছনে ফেলে এসেছে। আমরা চেষ্টা করছি বিশ্বকাপের আগে আমাদের খেলোয়াড়ের পুল বাড়াতে। বিশ্বকাপের কাছাকাছি গিয়ে যদি কারও কিছু হয়ে যায়, তাহলে আমাদের হাতে যেন এমন পর্যাপ্ত খেলোয়াড় থাকে, যাদের আমরা দেখেছি এবং যাদের ওপর ভরসা করতে পারি, যারা নিজের ভূমিকা পালন করতে পারে। সে (মাহমুদউল্লাহ) এখনো আমাদের পরিকল্পনায় আছে। আমরা এভাবেই দেখছি।’