ঘরের মাঠে নেমেই টেন্ডুলকারের যে রেকর্ড ভেঙেছেন গিল
কয়েক মাস আগেও তাঁকে ভারতীয় দলের ভবিষ্যৎ ভাবা হতো। কিন্তু ব্যাট হাতে শুবমান গিল যেভাবে দাপট দেখিয়ে চলেছেন, তাতে তিনি এরই মধ্যে বড় তারকা।
৬৩ ম্যাচের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তিন সংস্করণেই আছে সেঞ্চুরি। ৮ সেঞ্চুরির ৬টিই করেছেন এ বছর। মাঠের চারপাশে নান্দনিক সব শট খেলবেন, পরিণত মস্তিষ্কে ইনিংস বড় করবেন—ব্যাপারগুলো যেন অভ্যাসে পরিণত করেছেন গিল।
তবে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে পথচলার প্রায় ৫ বছর হতে চললেও এত দিন একটা আক্ষেপ রয়েই গিয়েছিল। সেটা ভারতের জার্সিতে ঘরের মাঠ মোহালিতে খেলার সুযোগ না আসা। পাঞ্জাবের এই ব্যাটসম্যানের অপেক্ষা অবশেষে ফুরিয়েছে। গত রাতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গিলের মোহালিতে খেলেছে ভারত। ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৩ বলে ৭৭ রান করে ঘরের মাঠে খেলা প্রথম ম্যাচ রাঙিয়েছেন গিল।
গিলের সঙ্গে রুতুরাজ গায়কোয়াড়, ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লোকেশ রাহুল আর একাদশে ফেরা সূর্যকুমার যাদবের ফিফটি এবং মোহাম্মদ শামির ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে স্বাগতিকেরা। এ জয়ে টেস্ট, টি-টোয়েন্টির পর ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়েও শীর্ষে উঠে এসেছে ভারত।
চেনা মঞ্চে দারুণ ইনিংসটি খেলে একটা রেকর্ডও ভেঙেছেন গিল। রেকর্ডটা যার-তার নয়, শচীন টেন্ডুলকারের! আর এখন গিল-টেন্ডুলকার প্রসঙ্গ সামনে আসা মানেই তো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটাই ‘মিম’—হবু জামাতা-শ্বশুর সম্পর্ক।
টেন্ডুলকারের মেয়ে সারার সঙ্গে গিলের মন দেওয়া-নেওয়া চলছে বলে অনেক দিন ধরেই গুঞ্জন চলছে। তবে কোনো পক্ষ থেকেই এ বিষয়ে কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেননি। বিষয়টি এখনো গুঞ্জনেই সীমাবদ্ধ।
তা কাল টেন্ডুলকারের কোন রেকর্ড ভেঙেছেন গিল? এত দিন ভারতীয় ওপেনারদের মধ্যে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম ৩০ ইনিংস শেষে সর্বোচ্চ ১২টি ফিফটি বা এর চেয়ে বেশি রানের ইনিংস ছিল কিংবদন্তি টেন্ডুলকারের। কালকের ম্যাচ দিয়ে ওপেনার হিসেবে ৩০তম ওয়ানডে খেলা গিলের হাফ সেঞ্চুরি বা তার চেয়ে বেশি রানের ইনিংস হয়েছে ১৩টি।
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ওয়ানডে অভিষেক হয় গিলের। অভিষেকের পর থেকে এ পর্যন্ত ৩৪ ওয়ানডে খেললেও ৪ ম্যাচে তিনি ওপেন করেননি। বাকি ৩০ ম্যাচে ভারতীয় ইনিংসের শুরুতে ব্যাট করা গিল এবার ছড়িয়ে গেলেন টেন্ডুলকারকে।
প্রথম ৩০ ওয়ানডে ইনিংসে ভারতীয় ওপেনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফিফটির তালিকায় গিল, টেন্ডুলকারের পর যৌথভাবে তিনে আছেন রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ান। দুজনেরই ১০টি করে ফিফটি ছিল।
সর্বশেষ এশিয়া কাপে গিল বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার পর টেন্ডুলকারকে জড়িয়ে আলোচনা হয়েছে। ঢাকায় ২০১২ এশিয়া কাপে টেন্ডুলকারও বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন; যেটা ছিল তাঁর ১০০তম সেঞ্চুরি।
১১ বছর আগে টেন্ডুলকারের অনন্য কীর্তি গড়া সেই সেঞ্চুরি ম্লান করে বাংলাদেশ যেমন জিতেছিল, কদিন আগে কলম্বোয় গিলের সেঞ্চুরিটাও বৃথা গেছে ভারত বাংলাদেশের কাছে হেরে যাওয়ার কারণে।