পাকিস্তানের টেস্ট দলে নতুন দুই মুখ, খেলতে আপত্তি হারিস রউফের
প্রথমবারের মতো পাকিস্তান টেস্ট দলে ডাক পেয়েছেন ব্যাটসম্যান সাইম আইয়ুব ও পেসার খুররম শেহজাদ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আগামী ১৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচ সিরিজের জন্য আজ ঘোষিত ১৮ সদস্যের দলে ফিরেছেন ফাহিম আশরাফ, মীর হামজা ও মোহাম্মদ ওয়াসিম। তবে দুই দিন আগে টেস্ট খেলতে সম্মত হলেও গতকাল মত বদলেছেন বলে রাখা হয়নি আরেক পেসার হারিস রউফকে।
আজ নিজের প্রথম দল ঘোষণা করেছেন পাকিস্তানের নতুন প্রধান নির্বাচক ওয়াহাব রিয়াজ। এ সফর দিয়ে অধিনায়কত্বে অভিষেক হতে যাচ্ছে শান মাসুদেরও। বিশ্বকাপের পর তিন সংস্করণ থেকেই বাবর আজম সরে দাঁড়ানোর পর টেস্ট দলের দায়িত্ব দেওয়া হয় মাসুদকে। এ সফরে পার্থের পর (১৪-১৮ ডিসেম্বর) মেলবোর্নে বক্সিং ডে (২৬-৩০ ডিসেম্বর) ও সিডনিতে (৩-৭ জানুয়ারি) নিউ ইয়ার টেস্ট খেলবে পাকিস্তান। এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১৩টি সিরিজ খেলেও কোনো জয় পায়নি পাকিস্তান, ৩৭টি ম্যাচ খেলে জিতেছে ৪টি।
কঠিন এ সফরে সাইমকে ডাকা হয়েছে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্ট কায়েদ-ই-আজম ট্রফিতে ভালো করার পর। ২২ বছর বয়সী বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ৪ ম্যাচে করাচি হোয়াইটসের হয়ে ৩টি শতকসহ করেন ৫৫৩ রান, ফাইনালে ফয়সালাবাদের বিপক্ষে জেতা ম্যাচে করেন দ্বিশতক। এর আগে ওয়ানডে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। প্রধান নির্বাচক ওয়াহাবের আশা, তাঁদের ‘দৃঢ় ব্যাটিং লাইনআপের শক্তি বাড়াবেন’ তিনি। ডানহাতি পেসার শেহজাদও এসেছেন সফল মৌসুম কাটানোর পর। কায়েদ-ই-আজম ট্রফিতে ২৩ বছর বয়সী ৮ ম্যাচে নেন ৩৬ উইকেট, ওয়ানডে টুর্নামেন্টে ১৬.৬২ গড়ে নেন ১৩ উইকেট।
সাইম-শেহজাদের প্রথমবারের মতো ডাক পাওয়ার দিনে ফিরেছেন গত বছরের শেষ দিকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট খেলা অলরাউন্ডার ফাহিম। গত ডিসেম্বর থেকে এ বছরের জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে সিরিজে খেলা ওয়াসিম ও হামজাকেও ফেরানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে হামজা ২০.৮৮ গড়ে সর্বশেষ প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্টে নেন ৩২টি উইকেট।
এদিকে গত ডিসেম্বরে ক্যারিয়ারের একমাত্র টেস্ট খেলা হারিসকে টেস্ট দলের জন্য প্রাথমিকভাবে বিবেচনা করা হয়েছিল। ওয়াহাব বলেছেন, ‘দুই দিন আগে আমরা হারিস রউফের সঙ্গে কথা বলেছিলাম, সে পাকিস্তানের হয়ে টেস্ট খেলার ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল। তবে গত রাতে সে মত বদলেছে, অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজের অংশ হতে চায়নি। সে তার ফিটনেস ও ওয়ার্কলোড নিয়ে চিন্তিত।’
পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচক আরও বলেন, ‘আমরা তাকে আশ্বস্ত করেছিলাম, তার জন্য ব্যাপারটি সহজ করে দেব, সম্ভাব্য ব্যর্থতাও মেনে নেব। আমাদের ফিজিও বলেছেন তার চোট নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। সে ক্লান্ত, কিন্তু আমরা সেটিরও ব্যবস্থা করতে পারতাম। কিন্তু সে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে। আমার মনে হয় এটি পাকিস্তান ক্রিকেটকে আঘাত করবে।’
সব মিলিয়ে দল নিয়ে ওয়াহাবের মত, ‘অস্ট্রেলিয়ার চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশনের কথা ভেবেই এমন দল সাজানো হয়েছে। আমরা পিচের কথা ভেবেছি, বাড়তি পেসার নিয়েছি। যাতে তিন ম্যাচেই টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে দল নির্বাচনের ব্যাপারে বিকল্প থাকে।’
২০২৩-২৫ সালের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চক্রে পাকিস্তানের জন্য এটি দ্বিতীয় সিরিজ। এর আগে শ্রীলঙ্কাকে তাদের মাটিতে ২-০ ব্যবধানে হারায় তারা। ওয়াহাবের আশা, সে ফলের ধারা অস্ট্রেলিয়াতেও ধরে রাখতে পারবে পাকিস্তান দল।
অস্ট্রেলিয়া সফরে পাকিস্তানের টেস্ট দল: শান মাসুদ (অধিনায়ক), আমির জামাল, আবদুল্লাহ শফিক, আবরার আহমেদ, বাবর আজম, ফাহিম আশরাফ, হাসান আলী, ইমাম-উল-হক, খুররম শেহজাদ, মীর হামজা, মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটকিপার), মোহাম্মদ ওয়াসিম, নোমান আলী, সাইম আইয়ুব, সালমান আগা, সরফরাজ আহমেদ (উইকেটকিপার), সৌদ শাকিল, শাহিন শাহ আফ্রিদি।