শোয়েব বশির সম্ভবত যশস্বী জয়সোয়ালকে ‘অনিচ্ছাকৃত’ উপহারই দিয়েছিলেন!
১৯৭ রানে ব্যাট করা জয়সোয়ালকে দিলেন ফুলটস বল, সেটাও প্যাডের ওপর। ইনিংসজুড়ে কঠিন কাজটা করেছেন, এমন সহজ ডেলিভারি জয়সোয়াল ছাড়বেন না, সেটাই স্বাভাবিক। প্যাডের ওপর করা বশিরের ফুলটসকে স্কয়ার লেগে দিয়ে চার মেরে দ্বিশতকে পৌঁছান এই বাঁহাতি ওপেনার।
এরপর সেই ট্রেডমার্ক উদ্যাপন—ব্যাট, হেলমেট ফেলে আকাশের দিকে দুই হাত প্রসারিত করে তাকিয়ে থাকা। কে জানে, হয়তো পুরোনো দিনের সেই কঠিন জীবনের কথাই মনে করেন জয়সোয়াল। এটি জয়সোয়ালের ক্যারিয়ারে প্রথম দ্বিশতক।
ভারতের তৃতীয় সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে দ্বিশতক করলেন ২২ বছর ৩৬ দিন বয়সী জয়সোয়াল। তাঁর চেয়ে কম বয়সে দ্বিশতক করেছেন সুনীল গাভাস্কার ও বিনোদ কাম্বলি। গাভাস্কার ২১ বছর ২৭৭ দিনে দ্বিশতক করেছিলেন। কাম্বলি করেছিলেন ২১ বছর ৩২ দিনে এবং ২১ বছর ৫৪ দিনেও এ বাঁহাতির দ্বিশতক আছে।
জয়সোয়ালের দ্বিশতকটি ২০১৯ সালের পর কোনো ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের প্রথম দ্বিশতক। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের হয়ে সর্বশেষ দ্বিশতকটি করেছিলেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। ২০০৭ সালের পর ভারতীয় কোনো বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের এটাই প্রথম দ্বিশতক।
বিশাখাপট্টনম টেস্টে ১৭৯ রান নিয়ে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছিলেন জয়সোয়াল। আজ দ্বিতীয় দিনের শুরু থেকেই জয়সোয়াল কিছুটা আগ্রাসী ছিলেন; বিশেষ করে বশিরের বলে। চার মেরে দ্বিশতক করার আগের বলেও ছক্কা মেরেছিলেন জয়সোয়াল। গতকাল শতকের দেখাও পেয়েছেন ছক্কা মেরেই। তবে আজ দ্বিশতকের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। জেমস অ্যান্ডারসনের বলে ক্যাচ দিয়ে আউট হন জয়সোয়াল। ১৯০ বলে তাঁর ২৯০ রানের ইনিংসটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
জয়সোয়ালের দ্বিশতক বসে দেখেছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ভারতের অধিনায়ক এবার কী বলবেন?
২০২০ সালে বিজয় হাজারে ট্রফিতে মুম্বাইয়ের হয়ে ২০৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন জয়সোয়াল। এই বাহাঁতি ক্রিকেটার সেই ইনিংসের হাইলাইটস শেয়ার করেছিলেন ইনস্টাগ্রামে। সেই ভিডিওর মন্তব্য বক্সে জয়সোয়ালকে ‘পরবর্তী মহাতারকা’ বলেছিলেন রোহিত।
৪ বছর পর সেই জয়সোয়ালই রোহিতের সতীর্থ এবং তাঁর দ্বিশতক ভারতীয় কিংবদন্তি দেখলেন ডাগআউটে বসে। আরও দেখলেন ২২ বছর বয়সী এক তরুণ কীভাবে একাই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে টেনে তুললেন ভারতকে।
একাই তো! জয়সোয়াল করলেন দ্বিশতক, কিন্তু একই উইকেটে, একই দলীয় ইনিংসে ভারতের অন্য কোনো ব্যাটসম্যান ৩৪ রানের বেশি করতে পারেননি। টেস্ট ক্রিকেটে এর আগে এমন ঘটনা ঘটেছে একবার। ২০০৫ সালে অ্যাডিলেডে ব্রায়ান লারা ২২৬ রানের ইনিংস খেলেন, সেই ইনিংসে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ছিল ডোয়াইন ব্রাভোর ৩৪।
বিশাখাপট্টনম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে প্রথম ইনিংসে ৩৯৬ রানে অলআউট হয়েছে ভারত।