ব্রিসবেনে শরফুদ্দৌলার ‘প্রথম’ টেস্টে দা সিলভা–হজে ক্যারিবীয় প্রতিরোধ
আম্পায়ার হিসেবে টেস্ট ম্যাচ পরিচালনা কম করেননি শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ। বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটার আম্পায়ার হিসেবে দশম টেস্ট পরিচালনা করছেন ব্রিসবেনে। তবে অস্ট্রেলিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজের দিবারাত্রির টেস্টটি একটু অন্যরকমই শরফুদ্দৌলার জন্য। এটিই যে দেশের বাইরে আম্পায়ার হিসেবে তাঁর প্রথম টেস্ট।
শরফুদ্দৌলার সেই টেস্টের প্রথম দিনে ব্যাটিং করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রেইগ ব্রাফেটের দল একেবারে খারাপ করেনি প্রথম দিনে। ৮ উইকেটে ২৬৬ রান তুলে দিন শেষ করেছে বাজেভাবে সিরিজের প্রথম টেস্টটা হারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
কামিন্সদের কসাইখানায় ক্যারিবীয়রা যে ‘ভেড়া’ হয়নি তাতে বড় অবদান জশুয়া দা সিলভা ও কাভেম হজের ষষ্ঠ উইকেট জুটির। দিবা-রাত্রির এই টেস্টে ব্যাটিংয়ে নেমে যে ৬৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর ১৪৯ রান করেছেন দা সিলভা-হজ জুটি। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে দুজনে কেমন লড়াইয়ের সৌধ গড়েছেন সেটি বুঝিয়ে দেবে এই জুটির খেলা বলসংখ্যা—৩১২। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দিবা-রাত্রির টেস্টে এটি সর্বোচ্চ রানের জুটি। ধৈর্য ও দক্ষতার মিশেলে দা সিলভা ১৫৭ বলে ৭৯ রানে আউট হন। হজ তাঁর চেয়ে বেশি বল খেলেছেন। ১৯৪ বলে ৭১ রান করে তৃতীয় সেশনের শেষ দিকে আউট হন হজ।
দিবা-রাত্রি অস্ট্রেলিয়া কখনো হারে না—ব্রিসবেন টেস্ট শেষ পর্যন্ত কোথায় নিয়ে দাঁড় করাবে, সেটি না জেনেও কথাটা বলা যায়। কারণ, এর আগে ১১টি দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলে সবগুলোই জিতেছে তারা এবং ম্যাচগুলো হয়েছে অস্ট্রেলিয়ারই মাটিতে। ব্রিসবেনও তো অস্ট্রেলিয়ার বাইরে নয়! দিনের খেলার শুরুতেও কিন্তু তেমন ইঙ্গিতই ছিল। অস্ট্রেলিয়ার পেস ‘ত্রয়ী’ মিলে কল্পিত চতুর্থ ও পঞ্চম স্টাম্পে বল করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ অর্ডার গুঁড়িয়ে দেন। দুই ওপেনার ক্রেগ ব্রাফেট ও তেজনারায়ণ চন্দরপল স্টাম্পের একটু বাইরের বল খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। ২১ রানে আউট হন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি শিবনারায়ণ চন্দরপলের ছেলে তেজনারায়ণ।
তিনে ও চারে নামা কার্ক ম্যাকেঞ্জি ও অ্যালিক অ্যাথানেজও ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। ২১ রান করা ম্যাকেঞ্জি প্যাট কামিন্সের অনবরত স্টাম্পের বাইরে বল ফেলার শিকার হয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন। অ্যাথানেজ ও জাস্টিন গ্রিভসকে তুলে নেন স্টার্ক—এবারও সেই উইকেটের পেছনেই ক্যাচ! দিবা-রাত্রির টেস্টে গোলাপি বলে স্টার্ক এমনিতেই ভয়ংকর। ব্রিসবেন টেস্টে প্রথম দিনের হিসাবসহ ১২টি দিবা-রাত্রির টেস্টে ৬৫ উইকেট হলো স্টার্কের। দ্বিতীয় নাথান লায়ন অনেক পিছিয়ে—১২ টেস্টে ৩৯।
৬৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় সেশনের পুরোটাই উইকেটে কাটিয়ে দেন দা সিলভা-হজ জুটি। তৃতীয় সেশনে দলীয় ২১৩ রানে তাঁদের জুটি ভেঙেছেন লায়ন। এলবিডব্লু হন দা সিলভা। আরও ১২ রান যোগ হওয়ার পর বিদায় হজেরও।
এরপর অষ্টম উইকেটে ৪১ রানের জুটি গড়েন কেভিন সিনক্লেয়ার ও আলজারি জোসেফ। হ্যাজলউডের বলে জোসেফ স্মিথের হাতে আউট হতেই শেষ দিনের খেলা। ৮৯.৪ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তখন ৮ উইকেটে ২৬৬।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৮৯.৪ ওভারে ২৬৬/৮ (দা সিলভা ৭৯, হজ ৭১, আলজারি ৩২, চন্দরপল ২১, ম্যাকেঞ্জি ২১; স্টার্ক ৪/৬৮, হ্যাজলউড ২/৩২, লায়ন ১/৬২, কামিন্স ১/৭০)।