দেখার মতো ফাইনালের আশা স্টার্কের
১ লাখ ৩০ হাজার আসনের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম। রোববার এই স্টেডিয়ামেই বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে ভারত। ক্রিকেটপাগল স্বাগতিক দেশটির সমর্থকদের কথা মাথায় রেখেই ফাইনালে টইটম্বুর গ্যালারি আশা করা হচ্ছে। আর ফাইনালটা ‘গর্জনপূর্ণ এবং দেখার মতো ক্রিকেট হবে’ বলে মিচেল স্টার্ক যে আশা প্রকাশ করেছেন, সেটিরও অন্যতম কারণ সম্ভবত লক্ষাধিক আসনের গ্যালারি।
অস্ট্রেলিয়ান পেসারের কাছে রোববারের ম্যাচটি অনেক বড় উপলক্ষ। সংবাদকর্মীদের সেটি বুঝিয়েছেন খুব সহজেই, ‘এটা খুব বড় উপলক্ষ। কারণ, এটা বিশ্বকাপ ফাইনাল।’ সত্যিই, ক্রিকেটে বিশ্বকাপ ফাইনালের চেয়ে বড় উপলক্ষ আর কী হতে পারে! ইডেন গার্ডেনে বৃহষ্পতিবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩ উইকেটে হারিয়ে সেই বড় উপলক্ষেরই টিকিট কেটেছে অস্ট্রেলিয়া। স্টার্কও সেমিফাইনালে ৩৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ফাইনালে আরও বিধ্বংসী কিছু করে দেখানোর ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন।
তবে স্টার্কের মতে, ফাইনালটা দুই দলের জন্যই অপরিচিত কোনো মঞ্চ নয়। স্টার্ক নিজেই অস্ট্রেলিয়ার ২০১৫ বিশ্বকাপ ফাইনাল জয়ে বড় অবদান রেখেছেন। এবারের ফাইনাল সামনে রেখে কলকাতায় গত পরশু সংবাদ সম্মেলনে স্টার্ক বলেছেন, ‘আলাদা সংস্করণে দুই দলের খেলোয়াড়েরাই এটার (ফাইনাল) দেখা পেয়েছেন। দুই দলই বছরের শুরুর দিকে (জুনে) টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছে। আমি মনে করি না, এই বড় উপলক্ষ দুই দলের ড্রেসিংরুমের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা।’
ফাইনালটা যে জমজমাট হবে তা নিয়েও আশাবাদী স্টার্ক, ‘(দর্শকের) গর্জনে পরিপূর্ণ থাকবে। সন্দেহ নেই দুই দলের ওপর (ম্যাচের) বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম চাপ থাকবে। আমি মনে করি, দেখার মতো ক্রিকেটই হবে।’
বিশ্বকাপে রোহিত শর্মার ভারত ‘পারফেক্ট টেন’ পেয়ে ফাইনালে উঠেছে। লিগপর্বে ৯ ম্যাচই জয়ের পর সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকেও ৭০ রানে হারিয়েছে ভারত। অনেকের চোখে ভারতই ফাইনালে ফেবারিট। বিশ্বকাপে সব মিলিয়ে তৃতীয়বার এবং ২০১১ সালের পর ঘরের মাঠে দ্বিতীয়বার শিরোপা জয়ের সুযোগ রোহিতদের সামনে।
স্টার্কের চোখে ভারতই সেরা দল এবং স্বাগতিকদের মুখোমুখি হওয়া নিয়ে মজার এক পর্যবেক্ষণও আছে বাঁহাতি এই পেসারের, ‘টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত তারাই সেরা দল এবং ফাইনালে আমরা মুখোমুখি হচ্ছি। বিশ্বকাপ আসলে এমনই। টুর্নামেন্টে আমরা নিজেদের প্রথম ম্যাচ তাদের বিপক্ষে খেলেছি। এখন শেষ ম্যাচটাও তাদের বিপক্ষেই খেলব। বিশ্বকাপের শেষে এসে এটি দারুণ এক ব্যাপার।’
ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর লিগপর্বে টানা ৭ ম্যাচ জিতে উঠেছে সেমিফাইনালে। ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়া সর্বশেষ বিশ্বকাপ জিতেছে ২০১৫ সালে। এরপর অবশ্য তাদের ট্রফি কেবিনেটে সাফল্য যোগ হয়েছে। ২০২১ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পাশাপাশি গত জুনে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালও জিতেছে।
সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ে কঠিন পরীক্ষাই দিতে হয় অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের। প্রোটিয়াদের ২১২ তাড়া করতে নেমে একপর্যায়ে ১৩৭ রানে ৫ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। প্রোটিয়া স্পিনার কেশব মহারাজ ও তাব্রেইজ শামসি ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ প্রায় নিজেদের হাতে তুলেই নিয়েছিলেন। কিন্তু স্টিভ স্মিথের ৩০, জস ইংলিসের ২৮, স্টার্কের ১৬* ও প্যাট কামিন্সের ১৪* ব্যাটে শেষ পর্যন্ত জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়াই।
রোববার আহমেদাবাদের ফাইনালে ভারতের দুই স্পিনার কুলদীপ যাদব ও রবীন্দ্র জাদেজা অস্ট্রেলিয়ার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেইল অনলাইন এর আগে অভিযোগ করেছিল, স্পিনারদের সহায়তা করতে সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে পিচ পরিবর্তন করেছে ভারত। রোহিতরা ফাইনালে উঠলে সেখানেও পিচ পরিবর্তন করা হতে পারে বলে দাবি করেছিল মেইল অনলাইন। স্টার্ক এ নিয়েও কথা বলেছেন গতকাল, ‘আহমেদাবাদে আগামীকাল (আজ) পৌঁছানোর পর বুঝতে পারব উইকেট নতুন না পুরোনো।’