‘অ্যান্ডারসনকে বাদ দিয়ে হিসাব করলে আপনি বোকা’

খেলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অ্যান্ডারসনরয়টার্স

অ্যাশেজের মধ্যে অবসর-সংক্রান্ত আলোচনাটা ছিল তাঁকে ঘিরেই। তবে জেমস অ্যান্ডারসন সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, তিনি খেলা চালিয়ে যেতে চান। এর মধ্যে আবার অবসর নিয়ে ফেলেছেন তাঁর বন্ধু স্টুয়ার্ট ব্রড। অ্যান্ডারসনকে ঘিরে আলোচনাটা তাই পেয়েছে নতুন মাত্রা। সাদামাটা অ্যাশেজ কাটানো ইতিহাসের সফলতম পেসারের ভবিষ্যৎ কী এখন?

বিশ্বকাপের বছর বলে টেস্ট ক্রিকেটে লম্বা একটা বিরতিই পড়ছে ইংল্যান্ডের। বেন স্টোকসের দলের সামনের সিরিজ আগামী জানুয়ারিতে, ভারতের মাটিতে। গত মাসে ৪১ পূর্ণ করা অ্যান্ডারসন ৫ ম্যাচের সে সিরিজে থাকবেন কি না, সে জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। তবে সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেইন বলছেন, অ্যান্ডারসনকে বাদ দিয়ে চিন্তা করাটা বোকামিই হবে।

সর্বশেষ অ্যাশেজে অ্যান্ডারসন ৫ উইকেট নিয়েছেন ৮৫.৪০ গড়ে, হেডিংলি ছাড়া বাকি চার ম্যাচেই খেলানো হয়েছে তাঁকে। ক্যারিয়ারে কমপক্ষে ৪ ম্যাচ খেলেছেন, এমন কোনো সিরিজই এমন কাটেনি তাঁর। ইংলিশ কন্ডিশনে অ্যান্ডারসনের এমন নিস্প্রভ থাকাটা দুর্লভই।

অ্যাশেজ সিরিজটা মোটেই ভালো যায়নি ইতিহাসের সফলতম পেসারের
রয়টার্স

তবে ব্রডের চলে যাওয়ার পর ভারতে অ্যান্ডারসনকে আরও বেশি করে দরকার, এমন মনে করেন হুসেইন। আইসিসি রিভিউ নামের শো-তে এ ধারাভাষ্যকার বলেছেন, ‘ক্রিস ওকস বলেছে সে আর বাইরে খেলতে আগ্রহী নয়, দেশের বাইরে তার রেকর্ডটাও সুবিধার নয়। দেখা যাক, সে তো এ সিদ্ধান্ত বদলাতেও পারে, সম্প্রতি অনেক সিদ্ধান্ত বদলেছে। তবে আপনি যদি ওকসকেও না পান, ব্রডকেও তো পাবেন না, তাহলে জিমি অ্যান্ডারসনের মতো কারও অভিজ্ঞতা দরকার পড়বে।’

আরও পড়ুন

ভারতের কন্ডিশনে অ্যান্ডারসনের রেকর্ডটাও ভালোই। এমনিতে ভারতের বিপক্ষে ছয়বার পাঁচ উইকেট নিয়েছেন তিনি। অন্য এশিয়ান দেশগুলোর তুলনায় এখানে গড়টাও (২৯.৩২) ভালো তাঁর। সে সব মনে করিয়ে দিয়ে হুসেইন বলেছেন, ‘জিমির ভারতের বিপক্ষে রেকর্ড বেশ ভালো, আর আপনার একটি ভারসাম্যপূর্ণ বোলিং আক্রমণ দরকার। নতুন যারা আসছে, তাদের জন্য অভিজ্ঞতাটা দরকার।’

ওভালে অ্যাশেজের শেষ টেস্টের আগেও অ্যান্ডারসনকে দলে নেওয়ার পক্ষে কথা বলেছিলেন হুসেইন। আবারও বললেন তিনি, ‘দেখুন, গত মাসদুয়েক জিমির বাজে বা গড়পড়তা গেছে। তবে এখনো জিমি অ্যান্ডারসনকে বাদ দিয়ে হিসাব করলে আপনি বোকা।’

অ্যান্ডারসন এখনো খেলা চালিয়ে যেতে চান, হুসেইন বলেছেন সেটিও, ‘আমি গতকাল একটি সাক্ষাৎকারে তার সঙ্গে কথা বলেছি, ক্ষুধাটা এখনো আছে। কীভাবে নিজের সেরা জায়গায় ফিরবে, সে এরই মধ্যে সেটি নিয়ে ভাবা শুরু করেছে। এখনো নেটে ফিরে কঠোর পরিশ্রমের চিন্তা করছে। এটি আমার কাছে ভালো একটা ইঙ্গিত, মানে তার ক্ষুধাটা আছে। সে ৭০০ উইকেট থেকে কতটা দূরে, ১০ উইকেট? এটিই তাকে আরও কিছুদিন চালিয়ে নেবে।’

ব্রড (ডানে) অবসর নেওয়াতে ইংল্যান্ডের এখন অ্যান্ডারসনের অভিজ্ঞতা আরও বেশি করে প্রয়োজন বলে মনে করেন হুসেইন (বাঁয়ে)
রয়টার্স

এমনিতে অ্যান্ডারসনের আলোচনা বাদ দিলেও ভারতের মাটিতে ইংল্যান্ড দল কেমন করে, সেটি নিয়ে আলোচনা আছে। ব্রড, মঈন আলী চলে যাওয়াতে স্বাভাবিকভাবেই বোলিং আক্রমণে পরিবর্তন আসবে। হুসেইন মনে করেন, ভারতে ভালো করার মতো বোলিং আক্রমণ আছে ইংল্যান্ডের, ‘আশা করি, জ্যাক লিচ ফিরবে। পাকিস্তানে যেমন দেখেছি, রেহান আহমেদ দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে বেশ ভালো। জশ টাং আসলেই ভালো বোলিং করেছে। ওলি রবিনসন বেশ স্কিলসম্পন্ন বোলার। দুর্ভাগ্যবশত ওলি স্টোনের মতো বোলার চোটে, জফরা আর্চার তো আগে থেকেই চোটে।’

আরও পড়ুন

ভারতের মাটিতে পেসারদের গতি প্রয়োজন, এমনটিও মনে করিয়ে দিয়েছেন হুসেইন। তাঁর কাছে সারের গাস অ্যাটকিনসনের মতো পেসার ভালো বিকল্প। সব মিলিয়ে এ সিরিজের জন্য মুখিয়ে আছেন তিনি, ‘পরের চ্যালেঞ্জ ভারতে, আর সবাই জানে টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের মাটিতে ভারত সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জগুলোর একটি। এটি স্পিনের বিপক্ষে বাজবল। রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা ও অক্ষর প্যাটেলদের বিপক্ষে বাজবল। দুর্দান্ত হতে যাচ্ছে সিরিজটি।’