রিজওয়ানের বিতর্কিত আউটের পর নাটকীয় ধস, সিরিজ অস্ট্রেলিয়ার
আগা সালমানকে নিয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ান যতক্ষণ টিকে ছিলেন, পাকিস্তানের জয় খুব সম্ভবই মনে হচ্ছিল। তবে প্যাট কামিন্সের দারুণ এক ডেলিভারিতে রিজওয়ানের বিতর্কিত আউটের পর মুহূর্তেই পাল্টে গেল সব হিসাব–নিকাশ। ১৮ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে মেলবোর্ন টেস্টেও হার নিয়েই মাঠ ছাড়ল পাকিস্তান।
পাকিস্তানকে ৭৯ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই তিন টেস্টের সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া।
ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ৩১৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তান সালমান–রিজওয়ানের ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে পেরিয়ে যায় ২০০ রান। দুজনই খেলছিলেন স্বচ্ছন্দে। জয়ের জন্য পাকিস্তানের দরকার যখন ৯৮ রান, কামিন্সের শর্ট বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ হয়ে ফেরেন রিজওয়ান। অস্ট্রেলিয়ানদের আবেদনে ফিল্ড আম্পায়ার এটিকে আউট দেননি, ব্যাট বা গ্লাভসে লাগেনি বলে আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল রিজওয়ানকেও। তবে অস্ট্রেলিয়া রিভিউ নিলে তৃতীয় আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ তাঁকে আউট দেন।
বল রিজওয়ানের রিস্টব্যান্ডের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় স্নিকোতে স্পাইক ধরা পড়ে। তবে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে যারপরনাই অসন্তুষ্ট দেখা গেছে পাকিস্তানি উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যানকে। ফিল্ড আম্পায়ার জোয়েল উইলসনের সঙ্গেও কথা বলতে দেখা যায় তাঁকে।
ইলিংওয়ার্থের সিদ্ধান্তটি নিয়ে তাৎক্ষণিক সংশয় প্রকাশ করতে দেখা যায় সাবেক আইসিসি এলিট আম্পায়ার সাইমন টফেলকে। চ্যানেল সেভেনকে তিনি বলেন, ‘আমার মতে, এখানে বল গ্লাভের সঙ্গে যুক্ত রিস্টব্যান্ডের ওপরে ছিল। তবে মাঠের সিদ্ধান্ত বদলানোর মতো প্রমাণ পেতে ইলিংওয়ার্থই ভালো অবস্থানে আছেন।’
৩৫ রান করা রিজওয়ান ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন আউট হন, পাকিস্তানের রান ২১৯। পরের ৭ ওভারের মধ্যে ১৮ রান যোগ করতে বাকি ৪ উইকেট হারিয়ে ২৩৭ রানে থেমে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে সালমান আউট হন ৭০ বলে ৫০ রান করে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস অধিনায়ক শান মাসুদের ৬০।
মাসুদ ও রিজওয়ানের দুটিসহ ৫ উইকেট নেন কামিন্স, টানা দুই বলে শেষ দুই উইকেট তোলা মিচেল স্টার্কের শিকার ৪ উইকেট। আগের ইনিংসেও কামিন্সের উইকেট ৫টি। প্রথম অধিনায়ক হিসেবে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এক টেস্টে ১০ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েছেন তিনি।
এর আগে চতুর্থ দিনের শুরুতে আগের দিনের ৬ উইকেটে ১৮৭ রানের সঙ্গে আরও ৭৫ রান যোগ করে অস্ট্রেলিয়া। ১৬ রান নিয়ে দিন শুরু করা ক্যারি খেলেন ৫৩ রানের ইনিংস। পাকিস্তানের পক্ষে ৪টি করে উইকেট নেন মীর হামজা ও শাহিন আফ্রিদি; যদিও দিন শেষে তাঁদের হারের বেদনায়ই পুড়তে হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ৩১৮ ও ২৬২ (মার্শ ৯৬, ক্যারি ৫৩, কামিন্স ১৬; হামজা ৪/৩২, শাহিন ৪/৭৬)।
পাকিস্তান: ২৬৪ ও ২৩৭ (মাসুদ ৬০, সালমান ৫০, বাবর ৪১, রিজওয়ান ৩৫; কামিন্স ৫/৪৯, স্টার্ক ৪/৫৫)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৭৯ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: প্যাট কামিন্স
সিরিজ: অস্ট্রেলিয়া ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে।