মিলারের ক্যাচ নিয়ে সূর্যকুমার, ‘আমি জানি, দড়িতে পা লাগেনি’
৩০ বলে ৩০—হাইনরিখ ক্লাসেনের ঝড়ের পর শেষ ৫ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার শিরোপা জয়ের হিসাব দাঁড়িয়েছিল এ রকম। আরও একবার চাপের কাছে ভেঙে পড়ে সহজ এই হিসাবও মেলাতে পারেনি প্রোটিয়ারা। এ ছাড়া আছে ফাইনালের মঞ্চেই বিরাট কোহলির ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। আছে আরও একবার যশপ্রীত বুমরার রোবোটিক বোলিং!
সবকিছুর পরও এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল শেষে কথা হচ্ছে একটি ক্যাচ নিয়ে। হার্দিক পান্ডিয়ার করা ম্যাচের শেষ ওভারের প্রথম বলে সীমানাদড়ির ওপর থেকে ছোঁ মেরে ডেভিড মিলারের সেই ক্যাচ নিয়েছেন সূর্যকুমার যাদব।
অনেকের মতেই সূর্যকুমারের নেওয়া ওই ক্যাচই গড়ে দিয়েছে ম্যাচের ভাগ্য। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। মিলারের ওই শট ক্যাচ না হয়ে ৬ হলে ম্যাচের ফল অন্য রকম হতেও পারত। তখন যে শেষ ৫ বলে ১০ রান লাগত প্রোটিয়াদের।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য সে রকম কিছু হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি শিরোপা জিতেছে ভারত। কিন্তু ভারতের শিরোপা জয়ের পর সূর্যকুমারের ক্যাচ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উঠেছে বিতর্ক। টিভি রিপ্লে দেখে তৃতীয় আম্পায়ার ক্যাচটিকে বৈধ ঘোষণা করলেও অনেকেই মনে করছেন, সূর্যকুমারের পা লেগে গিয়েছিল বাউন্ডারির দড়িতে।
ক্যাচটি নিয়ে অবশ্য ম্যাচ শেষে নিজের উচ্ছ্বাসের কথা বলেছিলেন সূর্যকুমার। এবার তিনি কথা বললেন এটা নিয়ে ওঠা বিতর্কের বিষয়ে। ভারতের পত্রিকা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে সূর্যকুমার বলেছেন, তিনি জানেন যে তাঁর পা দড়ি স্পর্শ করেনি।
ক্যাচটি নিয়ে বলতে গিয়ে সেই মুহূর্ত সূর্যকুমার তুলে ধরেছেন এভাবে, ‘রোহিত ভাই সাধারণত লং-অনে ফিল্ডিং করেন না। কিন্তু সেই সময় তিনি সেখানে ছিলেন। তাই বলটি যখন আসছিল আমি এক সেকেন্ডের জন্য তাঁর দিকে তাকাই, তিনিও আমার দিকে তাকিয়েছিলেন। আমি দৌড়াতে শুরু করি, লক্ষ্য ছিল ক্যাচটি নেওয়া। তিনি (রোহিত) কাছে থাকলে, বল তাঁর দিকে ছুড়ে দিতাম। কিন্তু তিনি কাছাকাছি ছিলেন না। এরপর ৪ বা ৫ সেকেন্ডে যা ঘটেছে, আমি সেটা ব্যাখ্যা করতে পারব না।’
কিন্তু ক্যাচটি কি ঠিক ছিল বা ক্যাচটি সূর্যকুমারের পা কি বিজ্ঞাপনের কুশনে লেগেছিল? টিভি রিপ্লেতে এটা অতটা স্পষ্ট হয়নি। এ নিয়ে সূর্যকুমার বলেছেন, ‘আমি যখন বলটি মাঠের ভেতরে ঠেলে দিই এবং ক্যাচটি নেই, আমি জানি—আমার পা দড়ি স্পর্শ করেনি। আমি শুধু একটা জিনিস নিয়েই সতর্ক ছিলাম, পা যেন দড়িতে না লাগে। আমি জানতাম, এটা সঠিক ক্যাচ।’
সূর্যকুমার এরপর যোগ করেন, ‘যেকোনো কিছুই ঘটতে পারত। বলটি যদি ৬ হয়ে যেত, সমীকরণটি ৫ বলে ১০ রানের দাঁড়াত। এরপরও হয়তো আমরা জিততাম। কিন্তু জয়ের ব্যবধানটা কম হতে পারত।’ এমন একটি ক্যাচ যে হঠাৎ করেই ধরে ফেলেছেন, তা নয়। এর জন্য যে অনেক অনুশীলন করেছেন, সেটিও বললেন সূর্যকুমার, ‘যে ক্যাচটি আমি নিয়েছি, এটা বিভিন্ন মাঠে বাতাসের ওপর নির্ভর করে অনুশীলন করেছি।’
ফাইনালের আগের দিনও ভারতের খেলোয়াড়েরা এমন ক্যাচের অনুশীলন করেছেন বলে জানিয়েছেন সূর্যকুমার।