উইলিয়ামসনের রেকর্ডের দিনে চাপে পাকিস্তানই
৮ টেস্ট, ২৩৩ রান, ১৫.৩৩ গড়, ৪৮ সর্বোচ্চ। ২০১৯ সালের পর থেকে দেশের বাইরে টেস্টে কেইন উইলিয়ামসনের পারফরম্যান্সটা ছিল এমন। বোঝাই যাচ্ছে, সদ্য সাবেক কিউই টেস্ট অধিনায়কের পারফরম্যান্স নিয়ে যে কানাঘুষা চলছিল তা একেবারেই অমূলক নয়।
তবে সব আলোচনাটা আপাতত বন্ধ রাখতে হচ্ছে। কারণ, করাচি টেস্টের আগের ৮ ম্যাচ মিলিয়ে যত রান করেছিলেন, তাঁর প্রায় সমান রান করে ফেললেন এই ইনিংসেই। পাকিস্তানের বিপক্ষে রেকর্ড-গড়া ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন উইলিয়ামসন।
তাঁর অপরাজিত ২০০ রানের ইনিংস, টম ল্যাথামের ১১৩,ডেভন কনওয়ের ৯২আর ইশ সোধির ৬৫ রানে ভর করে ৯ উইকেটে ৬১২ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে নিউজিল্যান্ড। ১৭৪ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তান শেষ বিকেলে হারিয়ে ফেলেছে ২ উইকেট, দ্বিতীয় ইনিংসে তারা এখনো পিছিয়ে ৯৭ রানে।
এমন উইকেটে কাজটা অবশ্য সহজ হওয়ার কথা নয়, তবে এক দিন বাকি থাকতে এ টেস্টে ফেবারিট বলতে হচ্ছে নিউজিল্যান্ডকেই। একটা বড় জুটিই পাকিস্তানের জন্য যথেষ্ট হতে পারে ম্যাচ বাঁচাতে। সে ক্ষেত্রে হয়তো শেষ দিকে এসে উইলিয়ামসনের মন্থর গতির ব্যাটিংয়েরও দায় থাকবে।
উইলিয়ামসনের ডাবল সেঞ্চুরির জন্য দিনের দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত ইনিংস ঘোষণা করতে অপেক্ষা করেন অধিনায়ক টিম সাউদি। আগের দিন ২০৬ বলে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন, তবে পরের ১০০ রান করতেও তাঁর লেগেছে ১৮৯ বল। পুরো ইনিংসে ২১টি চারের সঙ্গে ছয় মাত্র একটি।
৬ উইকেটে ৪৪০ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করা নিউজিল্যান্ডকে এগিয়ে নেন উইলিয়ামসন ও সোধি। দুজনের জুটি মধ্যাহ্নবিরতির আগেও ভাঙতে পারেনি পাকিস্তান। আবরার এসে সোধিকে যতক্ষণে ফিরিয়েছেন, এ জুটি খেলে ফেলেছে প্রায় ৫৫ ওভার।
সে জুটিতে ওঠে ১৫৪ রান। টিম সাউদি ও নেইল ওয়াগনার অবশ্য উইলিয়ামসনকে খুব একটা সঙ্গ দিতে পারেননি। সাউদিকে ফেরান নোমান, ওয়াগনারের উইকেট নেন আবরার। ওয়াগনারের উইকেটটিই আবরারের পঞ্চম, তিন টেস্টের ক্যারিয়ারে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ৫ উইকেটের দেখা পেলেন তিনি। এরই মধ্যে পাকিস্তানের কোনো বোলারের প্রথম ৩ টেস্টে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার কীর্তিও গড়েছেন আবরার (২২টি)।
উইলিয়ামসন ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন আবরারের বলে সিঙ্গেল নিয়ে। ক্যারিয়ারে এ নিয়ে পঞ্চমবার ২০০ রানের দেখা পেলেন তিনি, ছাড়িয়ে গেলেন ব্রেন্ডন ম্যাককালামের চারটি ডাবল সেঞ্চুরির নিউজিল্যান্ডের রেকর্ড। উইলিয়ামসনের ডাবল সেঞ্চুরির পরপরই ইনিংস ঘোষণা করেন সাউদি।
পাকিস্তানের হয়ে উইকেট নেওয়ার কাজটা সেই স্পিনারদেরই করতে হয়েছে। যেখানে সামনে থেকে আবারও নেতৃত্ব দিয়েছেন ২৪ বছর বয়সী স্পিনার আবরার। অবশ্য ৫ উইকেট নিতে তাঁকে খরচ করতে হয়েছে ২০৫ রান।
নোমান নেন ৩ উইকেট। এমন ফ্ল্যাট উইকেটে পাকিস্তান পেসারদের দুর্দশা অবশ্য চলছেই। এ নিয়ে সর্বশেষ ৩ টেস্টে পাকিস্তানের পেসাররা ২০৭.৫০ গড়ে নিয়েছেন মাত্র ২টি উইকেট। ৪ বছর পর টেস্টে সুযোগ পাওয়া মির হামজা এই টেস্টের প্রথম ইনিংসে উইকেট পাননি।
শেষ বেলায় ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তান হারিয়ে ফেলেছে আব্দুল্লাহ শফিক ও শান মাসুদের উইকেট। ৪৭ রানের ওপেনিং জুটিতে শুরুটা ভালোই করেছিল পাকিস্তান, তবে মাইকেল ব্রেসওয়েলকে সামনে এসে খেলতে গিয়ে মিড-অনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শফিক।
দিনের ২ ওভার বাকি থাকতে সোধির বলে এলবিডব্লিউ হন মাসুদ। দিন শেষে আরেক ওপেনার ইমাম-উল-হক অপরাজিত ৪৫ রানে, তাঁর সঙ্গী নাইটওয়াচম্যান নোমান।