বুমরা-কামিন্স মনে করিয়ে দিচ্ছেন আকরাম-ওয়ালশকে

সিরিজের ট্রফি নিয়ে ছবি তুললেন দুই অধিনায়ক অস্ট্রেলিয়ার কামিন্স ও ভারতের বুমরাছবি: এএফপি

সন্তানের জন্মের পর স্ত্রীকে সময় দেওয়ার কারণে এখনো অস্ট্রেলিয়ায় যাননি রোহিত শর্মা। এ কারণে ভারতীয় দল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বহুল আলোচিত বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি শুরু করছে নিয়মিত অধিনায়ককে ছাড়াই। রোহিত শুধু অধিনায়কই নন, ভারতের ব্যাটিংয়ের অন্যতম স্তম্ভ। পার্থে তাঁর না থাকাটা তাই ভারতের জন্য বড় ঘাটতিই।

তবে কখনো কখনো দাগ থেকে যেমন ভালো কিছু হয়, কারও কারও অনুপস্থিতিও ভালো কিছু বয়ে আনে। এই যেমন পার্থ টেস্টে রোহিতের না থাকা। নিয়মিত অধিনায়ক নেই বলে সিরিজের প্রথম টেস্টে ভারতকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফাস্ট বোলার যশপ্রীত বুমরা।

বিপরীতে অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বে যথারীতি প্যাট কামিন্স। দুজনই ফাস্ট বোলার। মুখোমুখি দুটি দলকেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধান পেসার, আবার দুজনেই আছেন টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে ওপরের দিকে—টেস্ট ক্রিকেট এমন কিছু দেখছে দুই যুগের বেশি সময় পর।

সাধারণত অধিনায়কত্বের জন্য বোলারদের তুলনায় ব্যাটসম্যানকেই বেশি প্রাধান্য দেয় দলগুলো। এর যথেষ্ট কারণও আছে। একজন অধিনায়ককে ফিল্ডিংয়ে দলের কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হয়, যা পেস বোলারের তুলনায় ব্যাটসম্যানের জন্য সহজ।

ব্যাটসম্যান-অধিনায়ককে শুধু নিজের ব্যাটিংয়ের সময় রানে মনোযোগ দিলেই হয়। কিন্তু বোলার-অধিনায়ককে নিজের বোলিংয়ের সমান্তরালে দল পরিচালনা করতে হয় বলে চাপটা বেশিই পড়ে। এ কারণে বিশেষত টেস্ট ক্রিকেটে ফাস্ট বোলার-অধিনায়কের দেখা কমই মেলে। আর যাও–বা মেলে, একই টেস্টে দুই ফাস্ট বোলার-অধিনায়কের দেখা পাওয়া ভার।

অস্ট্রেলিয়া-ভারত যখন পার্থে মুখোমুখি, তখন আইসিসি টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে বোলারদের মধ্যে কামিন্সের অবস্থান চারে, বুমরা তিনে। টেস্ট ক্রিকেটে দুজন শীর্ষ সারির ফাস্ট বোলার একই ম্যাচে অধিনায়কত্ব করার এর আগের ঘটনাটি সেই ১৯৯৭ সালে। সে বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে পাকিস্তানের মাটিতে তিন টেস্টের সিরিজ খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সিরিজে পাকিস্তানের নেতৃত্বে ছিলেন ওয়াসিম আকরাম, যিনি তখন র‍্যাঙ্কিংয়ের ২ নম্বর বোলার। আর সফরকারী ক্যারিবীয় দলের নেতৃত্বে ছিলেন কোর্টনি ওয়ালশ, র‍্যাঙ্কিংয়ে যাঁর অবস্থান তখন সাতে।

কোর্টনি ওয়ালশ যখন বাংলাদেশের দায়িত্বে ছিলেন
প্রথম আলো

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ খেলেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই সিরিজে কামিন্সের বিপরীতে অধিনায়ক ছিলেন টিম সাউদি। সামনেই টেস্ট থেকে অবসর নিতে চলা সাউদি তখন টেস্ট বোলারদের র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ১৫ এর মধ্যেও ছিলেন না। আবার ২০২২ সালের জুলাইয়ে রোহিত শর্মা করোনায় আক্রান্ত থাকায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এক টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যশপ্রীত বুমরা। তবে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকসকে পুরোদস্তুর পেসারই বলা যায় না, তিনি মূলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার।

আরও পড়ুন

গতকাল সিরিজপূর্ব সংবাদ সম্মেলনেও বিষয়টি উঠে এসেছে। দুই ফাস্ট বোলারের অধিনায়কত্ব করার ঘটনা কীভাবে দেখছেন, জানতে চাইলে কামিন্স বলেন, ‘দারুণ লাগছে। আরও বেশি বেশি হওয়া উচিত। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার সময় সাউদি অধিনায়ক ছিল। আমার মনে হয় না, এর মাধ্যমে বড় কোনো পরিবর্তন আসে। তবে এই ব্যাপারটা বিরলই। ফাস্ট বোলিংয়ের ভক্ত হিসেবে এটা আমার কাছে ভালোই লাগছে।’

কামিন্সের মতো ফাস্ট বোলারদের অধিনায়কত্ব নিয়ে ইতিবাচক ভারতের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক বুমরাও, ‘আমি সব সময়ই ফাস্ট বোলারদের অধিনায়কত্বের পক্ষে বলে এসেছি। তারা কৌশলগতভাবে ভালো করে। কামিন্স তো খুবই ভালো করছে। অতীতেও অনেকে করেছেন, কপিল দেবই যেমন ছিলেন। আশা করি, নতুন একটি ধারা শুরু হবে।’

আরও পড়ুন