এটিই কি ইতিহাসের সবচেয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের অ্যাশেজ

২-২ ব্যবধানে ড্র হয়েছে অ্যাশেজ সিরিজরয়টার্স

এবারের সিরিজের তুলনা হচ্ছে ২০০৫ সালের সঙ্গে, যেটিকে ইতিহাসের অন্যতম সেরা অ্যাশেজ হিসেবে ধরা হয়। এবার ২-০-তে পিছিয়ে থাকা ইংল্যান্ড ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজ ড্র করেছে। ওল্ড ট্রাফোর্ডে বৃষ্টিতে শেষ দিন ভেসে যাওয়াতে ড্র হয়েছিল চতুর্থ টেস্ট, যাতে পরিষ্কার ফেবারিট ছিল ইংল্যান্ডই। ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় দল হিসেবে ২-০-তে পিছিয়ে পড়েও অ্যাশেজ জয়ের স্বপ্নটা তাই ধরা দেয়নি বেন স্টোকসদের কাছে।

তবে পরিসংখ্যানও বলছে, এ সিরিজে লড়াই হয়েছে জমজমাট, ইতিহাসেই এমন অ্যাশেজ নেই সেভাবে। ২০২৩ সালের অ্যাশেজের সংখ্যার দিকে ফিরে তাকালে যা দেখা যাবে—

ইতিহাসে মাত্র চতুর্থবার ২-০-তে পিছিয়ে পড়া কোনো দল ড্র করল সিরিজ। প্রথম ১৯২৭-২৮ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এমন করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৯৫৩-৫৪ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করেছিল ইংল্যান্ড। ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আবার ঘুরে দাঁড়িয়ে ৫ ম্যাচের সিরিজ ড্র করে দক্ষিণ আফ্রিকা। মানে চারটি ঘটনাতেই আছে ইংল্যান্ড—দুবার তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছে, দুবার তাদের প্রতিপক্ষ।

সব মিলিয়ে ৫ বা এর বেশি ম্যাচের সিরিজ ২-২ ব্যবধানে ড্র হয়েছে ১২ বার। সর্বশেষ সাতটি সিরিজেই ছিল ইংল্যান্ড।

ইতিহাসে মাত্র চতুর্থবার ২-০-তে পিছিয়ে পড়া কোনো দল ড্র করল সিরিজ
রয়টার্স
২ থেকে ৪৯ রান

২ উইকেট।
৪৩ রান।
৩ উইকেট।
৪৯ রান।

এ সিরিজে চার ম্যাচে জয়-পরাজয়ের ব্যবধান। অ্যাশেজে ৩ বা এর কম উইকেটের ব্যবধানে এর আগে ম্যাচের ফল নির্ধারিত হয়েছে আটবার, কোনো সিরিজেই একাধিক এমন ঘটনা ছিল না। ৪৯ বা এর কম রানের ব্যবধান এর আগে ছিল ১৮টি। এবারের আগে একবারই এক সিরিজে এমন একাধিক ঘটনা ছিল। ১৯৮১ সালে হেডিংলিতে ১৮ রানের পর এজবাস্টনে ইংল্যান্ড জিতেছিল ২৯ রানে। ইয়ান বোথামের অ্যাশেজ নামে পরিচিত সে সিরিজে প্রথম ২ ম্যাচ পর ১-০-তে পিছিয়ে থাকা ইংল্যান্ড জিতেছিল ৩-১ ব্যবধানে, যেটি ছিল ৬ ম্যাচের সিরিজ।

অ্যাশেজের বাইরে মোট যে ১৭২০টি ম্যাচে ফল এসেছে, ৪৯ রানের কম বা ৩ উইকেটের কম ব্যবধানে ফল নির্ধারিত হয়েছে ৮.২ শতাংশ ম্যাচে। এ সিরিজে যেটি শতভাগ।

৩.৯৩

অ্যাশেজের ইতিহাসে এক সিরিজে ওভারপ্রতি সর্বোচ্চ রান উঠেছে এবার। অস্ট্রেলিয়া তুলেছে ৩.৩৫ হারে রান। অ্যাশেজে এর চেয়ে বেশি হারে তারা রান করেছে আরও ১২ বার। তবুও এ সিরিজ সবার ওপরে মূলত ইংল্যান্ডের কারণেই। এবার ইংলিশরা তুলেছে ওভারপ্রতি ৪.৭৪ করে রান, যা তাদের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান রেটের চেয়ে প্রায় ০.৮৭ বেশি।

এবার ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৮০ রান করেছেন জ্যাক ক্রলি, সিরিজ শুরুর আগে যিনি ছিলেন বেশ চাপে। ক্রলি এ রান করেছেন ৫৩.৩৩ গড় ও ৮৮.৭২ স্ট্রাইক রেটে। অ্যাশেজে এর আগে কখনোই কোনো ব্যাটসম্যান ৫০ বা এর বেশি গড় ও ৮০ বা এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ৪০০ বা এর বেশি রান করেননি।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এবার সর্বোচ্চ রান উসমান খাজার—৪৯৬। এ বাঁহাতি ওপেনারের গড় ৪৯.৬০। এ সফরের আগে ইংল্যান্ডের মাটিতে ৬ ম্যাচ খেলে খাজার গড় ছিল ১৯.৬৬। ইংল্যান্ডে তিনি পারেন না—সে কথাকে এবার ভুল প্রমাণিতই করেছেন টেস্টে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করা খাজা। খাজার এ অ্যাশেজে স্ট্রাইক রেট ৩৯.২৭, যা ক্রলির অর্ধেকেরও কম। দুই দল ব্যাটিংয়ে কীভাবে এগিয়েছে, সেটিরই যেন একটি চিত্র ফুটিয়ে তোলে দুজনের রান তোলার গতি।

ক্রলি বনাম খাজা
প্রথম আলো গ্রাফিকস
১৭৮

দুই দল মিলে নেওয়া উইকেটসংখ্যা। এ শতাব্দীতে অ্যাশেজে এর চেয়ে বেশি উইকেট পড়েছে দুবার—২০০৫ সালে ১৮২টি ও ২০১৯ সালে ১৮১টি।

১৯

সিরিজে ৩ ম্যাচ খেলেই ১৯ উইকেট নিয়েছেন ক্রিস ওকস, হয়েছেন সিরিজের সেরা খেলোয়াড়ও। সর্বশেষ ৩ বা এর কম ম্যাচ খেলে এত উইকেট নিয়েছিলেন গ্লেন ম্যাকগ্রা। ২০০৫ সালে ম্যাকগ্রারও উইকেট ছিল ১৯টি।