অভিষেক বচ্চনের ঘুমর দেখে মুগ্ধ টেন্ডুলকার

স্ত্রী অঞ্জলিকে (মাঝে) নিয়ে ‘ঘুমর’ দেখতে গিয়েছিলেন টেন্ডুলকার। তাঁদের পাশে সিনেমার নায়িকা সায়ামি খেরছবি : টুইটার

বলিউড সিনেমা ‘ঘুমর’ মুক্তি পাওয়ার এক সপ্তাহও হয়নি। বক্স অফিসে এখনো সেই অর্থে সাফল্য না পেলেও এরই মধ্যে মন জয় করেছে সিনেমাটি। অভিষেক বচ্চন এবং সায়ামি খের অভিনীত এই চলচ্চিত্র নিয়ে চর্চার অন্ত নেই।

 শুধু সাধারণ দর্শকই নন, ভারতের ক্রিকেট মহলেও ঘুমর বেশ প্রশংসিত হচ্ছে। সাবেক-বর্তমান অনেক ক্রিকেটারই সিনেমাটি দেখার পর আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। গত রোববার ঘুমরের বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। সেই প্রদর্শনীতে সস্ত্রীক উপস্থিত হয়েছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। ঘুমরের মুগ্ধতা ছুঁয়ে গেছে ভারতের এই কিংবদন্তিকেও।

সেটা এতটাই যে, সিনেমা হলেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে বলেছেন, ‘সম্প্রতি আমি ঘুমর সিনেমা দেখেছি। এটা অনুপ্রেরণা দেওয়ার মতো একটা সিনেমা। আবেগ আর স্বপ্ন যেখানে থাকে, সেখানে কোনো বাউন্ডারি লাইন থাকে না। যেকোনো লক্ষ্য ছোঁয়া সম্ভব। সত্যিকারের জীবন আমিও উপলব্ধি করেছি, যেখানে ওঠা-নামা লেগেই থাকে। ঠিক এই জিনিসটাই সিনেমাটিতে দেখা গেছে। খেলার মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। আমি তরুণ প্রজন্মকে বলতে চাই, তোমরাও সিনেমাটি দেখো। অনেক কিছু শিখতে পারবে।’

ঘুমরে প্রতিবন্ধী ক্রিকেটারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সায়ামি খের, মদ্যপ কোচের ভূমিকায় ছিলেন অভিষেক বচ্চন। সিনেমার প্রদর্শনী শেষে সায়ামির সঙ্গে দেখা করেছেন টেন্ডুলকার। তাঁর সামনেই বোলিং করেছেন সায়ামি। ভারতীয় ব্যাটিং জিনিয়াস সায়ামির বোলিং অ্যাকশন দেখেও অবাক হয়েছেন।

আরও পড়ুন

সিনেমায় সায়ামির নাম আনিনা। ছিলেন প্রতিভাবান ক্রিকেটার। তবে এক দুর্ঘটনায় ডান হাত হারাতে হয়। এরপর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন আনিনা। অবসাদের কারণে আত্মহত্যা করতে চান। তাঁকে নতুন করে বাঁচতে শেখার সংগ্রাম করার প্রেরণা দেন অভিষেক বচ্চন (সিনেমায় তাঁর নাম পদম সিং সোধি)। কোচ পদমের অনুপ্রেরণায় এক হাতেই খেলা চালিয়ে যান আনিনা।

ঘুমর সিনেমায় অভিনয় করে সাড়া ফেলেছেন অভিষেক বচ্চন ও সায়ামি খের
ছবি : এএফপি

প্রদর্শনী শেষে টেন্ডুলকারের সঙ্গে সামনাসামনি দেখা হলে তিনি সায়ামিকে সিনেমার ভঙিতেই বোলিং করার অনুরোধ জানান। সায়ামি তখন বলেন, ‘আমি ছবিতে ওভাবে বোলিং করলেও এই মুহূর্তে আপনার সামনে এটা করে দেখানো আমার জন্য একটু চাপের।’ এরপরই এই অভিনেত্রী এক হাত পিছিয়ে নিয়ে বাঁ হাতে বল করে দেখান। যা দেখে অবাক হয়ে যান টেন্ডুলকার। হাততালি দিয়ে তাঁকে বাহবা জানান।

এরপর টেন্ডুলকার বলেন, ‘আমি কখনোই এ ধরনের বোলিং অ্যাকশনের মুখোমুখি হইনি। সিনেমায় একটি চরিত্রের প্রয়োজনে সে প্রায় এক বছর ধরে পিছনে বা সামনে হাত দিয়ে ঘুরেছে। আপনিও কিছুক্ষণ চেষ্টা করুন। কাঁধে ব্যথা ধরে যাবে।’

টেন্ডুলকারের সঙ্গে দেখা করতে পেরে অভিভূত সায়ামিও, ‘ছোটবেলায় আপনার এমন একটি স্বপ্ন থাকে, যা কখনোই ভাবেননি সত্যি হবে। আমার জন্য সেটা ছিল একদিন শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গে দেখা করা। তিনি আমার কাছে নায়ক, আমার অনুপ্রেরণা, আমার শিক্ষক। আমি ক্রিকেট ভালোবেসেছি ও শিখেছি তাঁর খেলা দেখেই। শুধু তাঁর খেলা দেখার জন্য কলেজ পালিয়েছি। নর্থ স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আমিই সবচেয়ে জোরে “শচীন শচীন” বলে চিৎকার করতাম। আমার কাছে এর অর্থ (টেন্ডুলকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ) কী, তা বোঝাতে পারব না।’