স্বপ্নের সেমিফাইনালেই সর্বনিম্ন রান আফগানিস্তানের

রশিদ খানকে তুলে নেন নর্কিয়াআইসিসি

টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে মোটেও ভালো করতে পারেনি আফগানিস্তান। ত্রিনিদাদে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ১১.৫ ওভারে মাত্র ৫৬ রানেই অলআউট হয় রশিদ খানের দল। টি–টোয়েন্টিতে এটাই আফগানিস্তানের সর্বনিম্ন সংগ্রহ।

আরও পড়ুন

২০০৪ সালে এসিসি ট্রফিতে প্রথম অফিশিয়াল ম্যাচ খেলার মাত্র ২০ বছরের মধ্যে এবার টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে সবাইকে চমকে দিয়েছিল আফগানিস্তান। ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে এই সেমিফাইনাল ম্যাচের আগে আফগানদের নিয়ে প্রশংসার তুবড়ি ছুটিয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু সেমিফাইনাল ম্যাচের অর্ধেক পথ পর্যন্ত চরমভাবে হতাশ করল আফগানিস্তান।

মাত্র ১১ বলেই ৩ উইকেট নেন প্রোটিয়া স্পিনার শামসি
আইসিসি

প্রোটিয়াদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি আফগান ব্যাটিং। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ম্যাচে এসে ব্যাটিংয়ে সমর্থকদের সবচেয়ে বেশি হতাশা উপহার দেওয়ার যন্ত্রণা নিশ্চয়ই পোড়াবে রশিদ খানদেরও।

আরও পড়ুন

পাওয়ারপ্লের মধ্যেই আফগানিস্তানের বড় সংগ্রহের লক্ষ্য ধূলিসাৎ হয়ে যায়। বলা ভালো, সংগ্রহটা যে ভালো হচ্ছে না, সেটি বোঝা গিয়েছিল পাওয়ারপ্লে শেষ হওয়ার আগেই। এবার টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানরা ওপেনিং জুটির ওপর নির্ভর করে এসেছে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এসেই ওপেনিংয়ে ভালো শুরু পায়নি আফগানিস্তান। মার্কো ইয়ানসেনের করা ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ (০)। ব্যাটিংয়ের জন্য একটু কঠিন উইকেটে গুরবাজ আউট হওয়ার এক ওভার পরই তিনে নামা গুলবদিন নাইবকে তুলে নেন ইয়ানসেন। আফগানিস্তান তখনো টের পায়নি সামনে কী বিপদ অপেক্ষা করছে!

আফগানিস্তানের বাজে ব্যাটিং হতাশ করবে অনেককেই
আইসিসি

চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে কাগিসো রাবাদাকে উইকেট দেন আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান। রাবাদার খাটো লেংথের বলে বোল্ড হন ইব্রাহিম (২)। দুই বল পর অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবীও বোল্ড! এরপরই বোঝা গিয়েছিল দিনটা আফগানিস্তানের নয়। পাওয়ারপ্লের আগে আরও একটি উইকেট হারিয়ে রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় আফগান ব্যাটিং। পঞ্চম ওভারের শেষ বলে নানগেলিয়া খারোতেকে তুলে নেন ইয়ানসেন। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভার শেষে আফগানিস্তানের স্কোর ৫ উইকেটে ২৮।

আরও পড়ুন

এখান থেকে আর কতটুকু–ই এগোনো সম্ভব! সপ্তম উইকেটে করিম জানাতকে নিয়ে তবু লড়াইয়ের চেষ্টা করেছিলেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। ১৮ বলে ২২ রানের জুটি গড়েন দুজন। এই ইনিংসে এটাই সর্বোচ্চ রানের জুটি। ১৩ বলে ৮ করা করিমকে ১০ম ওভারে তাব্রেইজ শামসি তুলে নেন। এক বল পর নুর আহমেদ এবং তার দুই বল পর অধিনায়ক রশিদ খানকেও হারিয়ে অলআউট হওয়া স্রেফ সময়ের ব্যাপারে পরিণত হয় আফগানিস্তানের জন্য। আর এটুকুতে পুরো অবদান শামসি ও আনরিখ নর্কিয়ার। রশিদের উইকেটটি নিয়েছেন পেসার নর্কিয়া। ১২তম ওভারের পঞ্চম বলে নাভিন–উল হককে তুলে নেন শামসি।

অভিজ্ঞ নবীও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি
এএফপি

ছেলেদের আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে নকআউট ম্যাচে এটাই সর্বনিম্ন রানের দলীয় সংগ্রহ। ২০২৩ সালে আফ্রিকা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনস কাপের সেমিফাইনালে উগান্ডার বিপক্ষে ৬২ রানে অলআউট হয়েছে বতসোয়ানা। টি–টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানেরও এটি সর্বনিম্ন সংগ্রহ। এর আগে ২০১৪ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭২ রানে অলআউট হয়েছিল আফগানিস্তান।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে মাত্র ১.৫ ওভারে ৬ রানে ৩ উইকেট নেন স্পিনার শামসি। ১৬ রানে ৩ উইকেট ইয়ানসেনের। ২টি করে উইকেট রাবাদা ও নর্কিয়ার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান: ১১.৫ ওভারে ৫৬ (আজমতউল্লাহ ১০, গুলবদিন ৯, রশিদ ৮, করিম ৮, ইব্রাহিম ২, খারোতে ২, নবী ০, গুরবাজ ০; ইয়ানসেন ৩/১৬, শামসি ৩/৬, নর্কিয়া ২/৭, রাবাদা ২/১৪, মহারাজ ০/৬)।